উত্তর প্রদেশের রাজধানী শহর থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে জৌনপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম মাধোপট্টি। এই ছোট্ট গ্রামটিতে রয়েছে মাত্র ৭৫টি বাড়ি। কিন্তু এই গ্রামের সঙ্গে আইপিএস কিংবা আইএএস-দের সম্পর্কটা ঠিক কী? আসলে এই গ্রামটিই দেশকে উপহার দিয়েছে সব থেকে বেশি সংখ্যক আইপিএস এবং আইএএস অফিসার। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এই গ্রামটি সংবাদমাধ্যমের প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মাধোপট্টি গ্রামের মোট ৪৭ জন বাসিন্দাই আইপিএস এবং আইএএস অফিসার হয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, এই গ্রামের প্রায় ৫১ জন বাসিন্দা উচ্চপদে আসীন রয়েছেন।
১৯৫২ সালে প্রথম বারের জন্য মাধোপট্টি গ্রাম থেকে ড. ইন্দুপ্রকাশ ইউপিএসসি-তে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। তিনি আইএএস পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এর পর ড. ইন্দুপ্রকাশের চার ভাইও আইএএস অফিসারের পদ লাভ করেছিলেন। ফ্রান্স-সহ বহু দেশেই রাষ্ট্রদূত হিসেবে গিয়েছেন ইন্দুপ্রকাশ। ২০০২ সালে ড. ইন্দুপ্রকাশের ছেলে যশস্বীও ৩১-তম স্থান অধিকার করে আইএএস পদে আসীন হয়েছিলেন। তবে গ্রামের বাসিন্দাদের বক্তব্য, উচ্চ পদে নিযুক্ত গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দারই গ্রামের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে আরও খবর, ২০১৯ সালে মাধোপট্টি গ্রাম থেকে কেউ আইএএস কিংবা আইপিএস অফিসার হননি। এই গ্রামেরই বাসিন্দা রণবিজয় সিং। তিনি শিক্ষাক্ষেত্র সংক্রান্ত সমাজসেবা করে থাকেন। তাঁর বক্তব্য, এই গ্রাম থেকে একের পর এক বাসিন্দা ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবায় যোগ দিয়েছিলেন। যার কারণে এই গ্রামটিকে আইএএস-এর কারখানা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রত্যেকেই নিজেদের কাজের দায়িত্ব পালনে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে, নিজেদের গ্রামেই আর ফেরেননি।
এখানেই শেষ নয়, রণবিজয় সিং আরও জানান যে, আইএএস ছাড়াও মাধোপট্টি গ্রাম থেকে অনেকেই পিসিএস অফিসার হয়েছেন। এমনকী গ্রামের মহিলারাও পিসিএস অফিসার হয়েছেন। ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, শুধু পুরুষ অফিসাররাই আইএএস কিংবা আইপিএস হননি, গ্রামের কন্যা এবং পুত্রবধূরাও আইএএস এবং আইপিএস হয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন। নিজ-নিজ ক্ষেত্রে স্বমহিমায় উজ্জ্বল হলেও গ্রামের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করতে পারেননি তাঁরা। আসলে উচ্চ প্রশাসনিক পদে কর্মরত বাসিন্দারা নিজেদের গ্রামের উন্নয়নের জন্যই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি।
গ্রামের আর এক শিক্ষক কার্তিকেয় সিংয়ের দাবি, গ্রাম থেকে এত সংখ্যক বাসিন্দা ইউপিএসসি এবং অন্যান্য বড় পদের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হচ্ছেন, তার কৃতিত্ব জৌনপুর জেলার তিলকধারী সিং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজেরও প্রাপ্য। আসলে শিক্ষার্থীরা কলেজে পড়াকালীনই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতির প্রাথমিক বিষয়গুলি সম্পর্কে জানতে শুরু করেন।