পড়ে আসছে চৈত্রের বেলা। এবার তাই নতুন বছরকে সাদরে-সানন্দে বরণ করে নেওয়ার পালা। বাঙালির অন্যতম এই বড় উৎসব মানেই নতুন জামা, হালখাতা, পুজোপার্বণ এবং কবজি ডুবিয়ে ভূরিভোজ (Poila Boishakh Recipe)। আর খাওয়া-দাওয়ার কথা বলতে গেলে উঠে আসবে সেই খাঁটি বাঙালিয়ানায় মোড়া হরেক রান্নার কথা। আগে মা-ঠাকুরমাদের হাতের জাদুতে যেসব খাবার হয়ে উঠত অতুলনীয়। মুখে লেগে থাকত সেই স্বর্গীয় স্বাদ। সেই সব ঐতিহ্যে মোড়া খাঁটি বাঙালি খাবারই আজ রেস্তরাঁর মেন্যুতেও হইহই করে জায়গা করে নিয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বচ্ছরকার দিন মানেই পুরাতনকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া, নতুন একটা বছর মানেই নতুন সব কিছু। কিন্তু এবার এই পয়লা বৈশাখে (Poila Boishakh Recipe) বরং একটু পিছিয়ে গিয়েই উঁকি দেওয়া যাক মা-ঠাকুরমাদের হেঁশেলে। আর নববর্ষের খানাপিনায় পাত আলো করে থাক ঐতিহ্যে মোড়া পুরনো দিনের স্বর্গীয় স্বাদের সেই সব পদ। প্রতীকী ছবি।
পান্তা-ইলিশ:
নানা ধরনের মাছ-মাংসের পদ এবং দই-মিষ্টি ছাড়া বাঙালির উৎসব-পার্বণ বড়ই ম্লান। তাই মাছ-মাংসের এলাহি পদ তো থাকবেই, সঙ্গে রসনাতৃপ্তি করবে পয়লা বৈশাখ স্পেশাল পান্তা ভাতও! তাই নববর্ষের স্পেশাল খানা হতে পারে পান্তা ভাত। একেই প্রচণ্ড গরম। আর আমরা সকলেই মোটামুটি জানি, গরমের খর তাপে শরীর ঠান্ডা রাখতে পান্তা ভাতের জুড়ি মেলা ভার! তাই নববর্ষের দিনে চেখে দেখা যেতে পারে পান্তা ভাত। সঙ্গে থাকুক আলু চোখা অথবা কোনও সুস্বাদু ভর্তা। আর ইলিশ ভাজা থাকলে তো কথাই নেই! জাস্ট জমে যাবে বছর শুরুর দিনটা! প্রতীকী ছবি।
লুচির দোসর সাদা আলুর তরকারি:
আজকাল মানুষ বড় ব্যস্ত আর ব্রেকফাস্টে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতেই পছন্দ করেন অনেকে। কিন্তু ব্যস্ততার ভিড়ে মনের কোণে উঁকি মারে রবিবারের ছুটির সকালগুলো। সেই লুচির গন্ধ মনে এলেই একছুট্টে আবার ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই ছোটবেলায়। তাই উৎসবের দিনে বেশি না-ভেবে ব্রেকফাস্টে হয়ে যাক গরম গরম ফুলকো লুচি। ঘিয়ে ভাজা ফুলকো ফুলকো লুচির সঙ্গে দোসর হোক সাদা আলুর তরকারি। শেষ পাতে বোঁদে হলে কেমন হয়? প্রতীকী ছবি।
শুক্তোয় শুরু:
দুপুরের খাবারের শুরুতেই থাকুক বাসমতী চালের সাদা ভাতের সঙ্গে শুক্তো। বোঝাই যাচ্ছে, জমে উঠতে চলেছে নববর্ষের স্পেশাল লাঞ্চ (Poila Boishakh Recipe)। উচ্ছে বা করলা-সহ নানান সবজি, ডালের বড়ি, নারকেল কোরা এবং দুধ সহযোগে তৈরি খাঁটি বাঙালি (Bengali Recipe) এই পদের স্বাদ এক কথায় অতুলনীয়! নিমেষে চেটেপুটে পাত পরিষ্কার! প্রতীকী ছবি।
ইলিশ-মুখ:
বাঙালির নববর্ষ, আর ইলিশ না-হলে কী চলে! দুপুরের মেন্যুতে রাখা যেতে পারে ইলিশের হরেক পদ। সাদামাটা ইলিশ ভাজা হলেও ক্ষতি কী! সঙ্গে অবশ্য ইলিশ ভাজার তেলটা আলাদা করে তুলে রাখতে ভুললে চলবে না কিন্তু! শুধু কী তা-ই, ইলিশ দিয়ে পছন্দমতো রাঁধা যেতে পারে ইলিশ ভাপা, দই ইলিশ, সর্ষে ইলিশ, ইলিশ পোলাওয়ের মতো সুস্বাদু পদও। প্রতীকী ছবি।
বাহারি ভেটকি:
খানাপিনায় বাঙালিয়ানা নিয়ে কথা বলে চলেছি। অথচ ভেটকি নিয়ে কথা বলছি না, এ তো ভারি অন্যায়! নববর্ষের স্পেশাল মেন্যুতে রসনাতৃপ্তিতে করবে ভেটকির বাহারি পদ। বানানো যায় বাঙালির অত্যন্ত পছন্দের ফিশ ফ্রাই বা ফিশ কবিরাজিও (Bengali Recipe) । আর সবেধন নীলমণি ভেটকি পাতুরি তো আছেই! ভেটকি ফিলেতে ভালো করে সরষে-পোস্ত আর নারকেল কোরা মাখিয়ে কলাপাতায় মুড়ে ভাপিয়ে নিলেই কেল্লা ফতে! ধোঁয়া ওঠা জুঁইফুলের মতো ভাতের সঙ্গে ভেটকি পাতুরি- আহা স্বর্গীয় সেই স্বাদ! প্রতীকী ছবি।
নানা বেশে চিংড়ি:
বেশে চিংড়ি:বাঙালি ভোজ চিংড়ি ছাড়া বড্ড ফিকে! সে ডাব চিংড়ি অথবা চিংড়ির মালাইকারিই হোক, কিংবা চিংড়ির বড়াই হোক! অথবা আবার এঁচোড় বা পটলের মতো সবজিতেও দারুণ মাত্রা যোগ করতে চিংড়ির জুড়ি মেলা ভার। ফলে বোঝাই যাচ্ছে বাঙালিদের পাতে চিংড়ির অবাধ গতিবিধি! নতুন বছরে মুখ পাল্টাতে ট্রাই করা যেতে পারে চিংড়ির ভর্তা অথবা ঝিঙে চিংড়িও। আর এই নববর্ষের স্পেশাল পাতে কচুপাতা চিংড়ি হলে তো কথাই নেই! প্রতীকী ছবি।
বাসন্তী পোলাও-মাটন কষা:
বাঙালি ভোজন নিয়ে কথা হবে, আর সেখানে মাটন-সহযোগে বাসন্তী পোলাওয়ের প্রসঙ্গ আসবে না- তা কি হয়? খাঁটি গাওয়া ঘিয়ে তৈরি গোবিন্দভোগ চালের বাসন্তী পোলাও বাঙালি রসনাতৃপ্তির অন্যতম অঙ্গ। আর তার সঙ্গে মাটন কষা ছাড়া আর কিছুই যায় না! ঘিয়ের সুগন্ধের সঙ্গে নানা মশলার মিশেলে তৈরি মাটন কষানোর সুঘ্রাণ নাকে এলেই বোধহয় অর্ধেক খাওয়া হয়ে যায়! ওই যে কথায় আছে না, ঘ্রাণেন অর্ধ-ভোজনং! প্রতীকী ছবি।
শেষ পাতে অম্বল
বাঙালি খাবারের মেন্যু যত লম্বাই হোক না-কেন, শেষ পাতে অম্বল থাকবেই। বাজারে তো এখন প্রচুর কচি আম উঠেছে, তাই আমের টক অথবা আমের চাটনি তো চলতেই পারে! তবে ইলিশের অম্বল অথবা মৌরলা মাছের টক (Bengali Recipe) স্বাদকোরককে চাঙ্গা তো করবেই, সেই সঙ্গে মনও ভরাবে! আর নববর্ষের খাওয়াদাওয়ায় মন না-ভরলে কী চলে! প্রতীকী ছবি।