পশ্চিম মেদিনীপুর: রসায়ন গবেষণায় সাফল্য পেলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের পুরন্দার মিলন প্রামাণিক। গত ৩ মে হোমি ভাবা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠা দিবসে তিনি পেয়েছেন 'আউটস্ট্যান্ডিং ডক্টরাল স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২২'। ভুবনেশ্বরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট সায়েন্স অ্যাডুকেশন এণ্ড রিসার্চ প্রতিষ্ঠান থেকে অধ্যাপক প্রসেনজিত মালের তত্ত্বাবধানে গবেষণা করেছেন তিনি। তাঁর গবেষণার বিষয় আলোক শক্তি এবং অনুঘটকের বিক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে ওষুধ তৈরির নতুন পথের সন্ধান দেওয়া। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে তাঁর গবেষণা এগিয়েছে। তাঁর এই কাজের সফলতার জন্য গত ৩মে হোমি ভাবা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট তাঁকে 'আউটস্ট্যান্ডিং ডক্টরাল স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ড' দিয়েছে। উপস্থিত ছিলেন ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ। যদিও ওই দিন মুম্বইতে উপস্থিত থাকতে পারেননি মিলন। তিনি সোমবার ৬ই মে রওনা দেন দক্ষিণ কোরিয়ার পুষন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্যে। তিনি গবেষণার জন্য রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট হিসেবে নিযুক্ত হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তাঁর বাবা মন্টু প্রামাণিক গৃহ শিক্ষক। মিলনেরা দুই ভাই। দাদা অমিয়ও গৃহ শিক্ষকতা করেন। মিলনের ছোট বয়স থেকেই গভীর অধ্যবসায় ছিল। বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার আগ্রহ তাঁকে এই গবেষণার কাজে ব্রতী করেছে। মিলন একজন সিন্থেটিক রসায়নবিদ। তাঁর কাজ মাল্টিস্টেপ জৈব সংশ্লেষের মাধ্যমে ম্যাক্রো বা মাইক্রো অণু তৈরি করা। ২০১৬ সাল থেকে তিনি ভুবনেশ্বরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট সায়েন্স অ্যাডুকেশন এণ্ড রিসার্চ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে গবেষণার কাজ করছেন। দাঁতনের কোটপাদা হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিষয়ে পড়াশোনা করেন।
আইআইটি মাদ্রাজ থেকে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হওয়ার পর জৈব রসায়ন নিয়ে গবেষণা করেছেন হোমি ভাবা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটের অন্তর্গত ভুবনেশ্বরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট সায়েন্স অ্যাডুকেশন এণ্ড রিসার্চ কেন্দ্র থেকে। তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে পেয়েছেন অধ্যাপক প্রসেনজিত মালকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তারপর চলেছে হাতেকলমে গবেষণা। তিনি বলেন,\" মানুষের জন্য গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে চাই। আমাদের জীবনে প্রত্যেকটি প্রয়োজনে রসায়ন যুক্ত। ওষুধ তৈরিতে নতুন পদ্ধতি যুক্ত করতে চেয়েছি। আলোক শক্তি ও অনুঘটকের বিক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে জৈব যৌগ তৈরির মাধ্যমে অনেক জীবনদায়ী ওষুধ তৈরি করা যাবে। যার দ্বারা নতুন পদ্ধতিতে ওষুধ তৈরি সম্ভব হবে।\"
আরও পড়ুনঃ চিকিৎসক হয়ে গ্রামে ফিরেই মানুষদের জন্য বিনা পয়সার ক্লিনিক খুললেন যুবক!গবেষণা ও সাফল্যে খুশি মিলনের পরিবার। তিরিশ বছর বয়সী মিলনের অসম্ভব জেদ ও অধ্যবসায় তাকে আরও অনেক দূর এগিয়ে দেবে বলে বিশ্বাস পরিবার ও আত্মীয়দের। ছোটবেলা থেকে কষ্ট করেই পড়াশোনা করতে হয়েছে তাকে।। দাদা অমিয় প্রামাণিক বলেন,\" ছোট থেকেই ভাইকে দেখেছি বিজ্ঞান নিয়ে বুঁদ হয়ে থাকতে। কঠিন অধ্যবসায় ছিল। তার জেরেই ও সাফল্য পেয়েছে।\"
আরও পড়ুনঃ অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে মেদিনীপুরে কলেজ ছাত্রীদের বিক্ষোভতাঁর আগের হাইস্কুলের শিক্ষক শিবশংকর সেনাপতি বলেন,\" দরিদ্র পরিবার থেকে ছেলেটি উঠেছে। তার এই সাফল্য মাতৃভূমি দাঁতনকে গর্বিত করেছে। আরও সাফল্য কামনা করি।\" মিলনের বাবা মন্টুবাবু বলেন,\" ছেলের সাফল্যে ভালো তো লাগছে। গৃহ শিক্ষকতা করে ছেলেকে পড়ানোর চেষ্টা করেছি। অনেকেই সহযোগিতা করেছেন। তাদের কথা ভুলব না\" ।
Partha Mukherjeeনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Dantan, Paschim medinipur, South Korea