উত্তর দিনাজপুর: প্রতিবছরের মত এবারও পয়লা বৈশাখ শুরু হয়েছে রাজবংশীদের ঐতিহ্যবাহী শিরুয়া মেলা। টানা দশ দিন চলে এই মেলা। অর্থাৎ ১০ বৈশাখ পর্যন্ত চলবে শিরুয়া মেলা। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায় কাছে এই মেলার আকর্ষণ প্রবল।
প্রতিবারের মত এবারেও উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘিতে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী শিরুয়া মেলা। এই মেলার টানে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে তো বটেই, এমনকি বিহার থেকেও বহু মানুষ করণদিঘিতে ছুটে আসেন। কামতাপুরি বা কোচ ভাষায় শিরুয়া শব্দের অর্থ স্নান। তাই অনেকেই এই মেলাকে স্নানের মেলাও বলে থাকেন। বিহারের পূর্ণিয়ার রাজা পৃথ্বীচাঁদ লাল এই মেলার সূচনা করেছিলেন। কথিত আছে এই করণদিঘি বা কর্ণদিঘি একসময় অঙ্গরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এখানকার এক দিঘিতে স্নান করতেন দাতা কর্ণ। সেই পুকুরকে কেন্দ্র করে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মধ্যে গড়ে উঠেছে লোক বিশ্বাস। আর সেই উপলক্ষেই উৎসবে মাতে সবাই।
আরও পড়ুন: এক বছর ধরে জল নেই! ক্ষোভে রাস্তায় বসে পড়লেন গ্রামবাসীরা
রাজবংশীরা বিশ্বাস করেন এই পুকুরে যা মানত করা হয় তাই পূরণ হয়ে থাকে। আজও বহু মানুষ বছরের প্রথম দিন এই কর্ণ রাজার পুকুরে স্নান করে পাশেই শিবমন্দিরে মনের ইচ্ছে জানান। এভাবেই মানত করেন। তারপর শিরুয়া মেলায় সামিল হন। পায়রা, ডিম সহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক জিনিস এখানে বলি দেওয়ার প্রথা ছিল। যদিও বর্তমানে বলি প্রথা একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একসময় তিন মাস ধরে এই শিরুয়া মেলা চলত। সাধারণ মানুষ তাঁদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এখান থেকেই সংগ্রহ করতেন। কাঠের জিনিসের জন্য এই মেলা বিখ্যাত। জানা যায় একসময় পয়লা বৈশাখের ১৫ দিন আগে থেকেই বাড়িতে বাড়িতে এই মেলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যেত। সব ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ শিরুয়া মেলায় আজও সামিল হন।
পিয়া গুপ্তা
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Uttar dinajpur News