নতুন পলিসি ফেব্রুয়ারিতে নয়, মে মাসে লাগু হওয়ার সম্ভাবনা, গ্রাহকদের বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরাতে কোন পথে হাঁটছে WhatsApp
- Published by:Ananya Chakraborty
- news18 bangla
Last Updated:
পলিসি লাগু হওয়ার নতুন তারিখ হল ১৫ মে
WhatsApp: এক অদ্ভুত পরিস্থিতির শিকার হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)। নতুন পলিসির হাত ধরে ক্রমেই জনপ্রিয়তা কমছে এই সোশাল চ্যাটিং অ্যাপের। এই পরিস্থিতিতে নানারকম ভাবে ড্যামেজ কন্ট্রোল শুরু হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ-এর তরফে। একাধিক জিজ্ঞাসার উত্তরও দেওয়া হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, মে মাসে লাগু হবে নতুন পলিসি। কিন্তু কোথায় দাঁড়িয়ে হোয়াটসঅ্যাপের বিশ্বাসযোগ্যতা?
শোনা যাচ্ছে, নতুন পলিসি লাগু করার সময়কাল পিছিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে পরিস্থিতির সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে হোয়াটসঅ্যাপ। এক্ষেত্রে তিন মাস পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে পারে নতুন পলিসি লাগু হওয়ার সময়। ৮ ফেব্রুয়ারি হয় তো হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করতে হবে না। পলিসি লাগু হওয়ার নতুন তারিখ হল ১৫ মে। কিন্তু এই একাধিক বিভ্রান্তি নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি সংশ্লিষ্ট সংস্থা। করা হয়নি কোনও অফিসিয়াল ঘোষণাও। তা হলে কি মে মাসেও একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে এই চ্যাটিং অ্যাপ? গ্রাহকদের মধ্যে আরও বেশি করে বাড়তে পারে বিভ্রান্তি? বিশেষজ্ঞদের কথায়, মুখস্থ করা প্রাইভেসি পলিসির কথা শোনাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। কিন্তু মূল প্রশ্ন বা সমস্যাগুলির সমাধান করছে না।
advertisement
এই পুরো পরিস্থিতির একটু গভীরে যেতে হবে। এর নেপথ্যে রয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপের নতুন পলিসি। এক্ষেত্রে প্রাইভেসি পলিসিতে একাধিক পরিবর্তন আনতে চলেছে হোয়াটসঅ্যাপ। সেই মতো ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অ্যাপটির আপডেটেড ভার্সন ব্যবহার করতে গেলে প্রত্যেককে একটি 'agree and accept' অপশনে ক্লিক করতে হবে। না হলে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাবে এই অ্যাপ। আর হোয়াটসঅ্যাপের এই আপডেটেড পলিসি অনুযায়ী, সংস্থার অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলির সঙ্গে শেয়ার করা হতে পারে ব্যবহারকারীর তথ্য। এক্ষেত্রে মালিকানাধীন সংস্থা ফেসবুক (Facebook) ও তার অধীনস্থ অন্য অ্যাপেও শেয়ার হতে পারে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ ডাটা। এর পাশাপাশি সব সময়ে ব্যবহারকারীর লোকেশন ডেটাও ট্র্যাক করতে পারবে অ্যাপটি। তবে এই চ্যাটিং প্ল্যাটফর্মের দাবি ছিল, নতুন পলিসির মাধ্যমে পরিষেবা এবং ইউজার এক্সপিরিয়েন্সকে আরও মজবুত করে তোলা হবে। কিন্তু তথ্য ফাঁস যাওয়ার ভয়ে ভুগতে শুরু করেছেন মানুষজন। তাঁদের আতঙ্ক- এবার হয় তো সমস্ত গোপনীয়তা ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর এই বিষয়টির সমাধান করা হোয়াটসঅ্যাপের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
advertisement
advertisement

তবে পরিস্থিতির সামাল দিতে চেষ্টা করেছে হোয়াটসঅ্যাপের পাবলিক রিলেশন ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান এই বিশাল মাপের বিভ্রান্তির সমাধান করাও খুব একটা সহজ কাজ নয়। ইতিমধ্যে ব্যবহারকারীদের ধরে রাখতে অনেক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এই চ্যাটিং অ্যাাপ। FAQ সেগমেন্টে হোয়াটস অ্যাপের তরফে নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপের আশ্বাস, নতুন পলিসির মধ্য দিয়ে সামগ্রিক ভাবে পরিষেবাগুলিকে আরও সহজ ও মজবুত করে তোলা হবে। এমন লক্ষ্যে এই সোশাল মিডিয়া অ্যাপকে গড়ে তোলা হচ্ছে, যাতে মানুষজন প্রাইভেসি বজায় রেখে কথা বলতে পারেন। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, পলিসি আপডেট মানে প্রাইভেসির উপরে হস্তক্ষেপ নয়। এক্ষেত্রে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের করা SMS বা পাঠানো তথ্য সুরক্ষিত থাকবে। একাধিক সাফাই দিয়েছে সোশাল চ্যাটিং অ্যাপ। এক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক কোনও অ্যাপই প্রাইভেট মেসেজ দেখতে পায় না কিংবা কল শুনতে পায় না বলেও জানিয়েছে। শেয়ার লোকেশনও দেখতে পায় না হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক। কারও কনট্যাক্টও শেয়ার করা হয় না। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলি বরাবরই প্রাইভেট থাকে। হোয়াটসঅ্যাপ ডিজঅ্যাপিয়ারিং ফিচারের প্রসঙ্গও তুলে এনেছে এই সংস্থা। কিন্তু গোপনীয়তা ভঙ্গের আতঙ্কে ভোগা মানুষজনের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে এখনও সে ভাবে সফল হতে পারেনি সংস্থা।
advertisement
এদিকে প্রতিযোগিতাও বাড়ছে। ইতিমধ্যেই সিগন্যাল (Signal) ও টেলিগ্রামে (Telegram) ব্যবহারকারীর সংখ্যা হু-হু করে বেড়ে চলেছে। দিন কয়েক আগেই এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব জুড়ে ৫০০ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারীর মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলেছে মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম। উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, ৭২ ঘণ্টায় আরও ২৫ মিলিয়ন নতুন ব্যবহারকারী যোগ দিয়েছেন এই অ্যাপে। Telegram-এর CEO পাভেল ডুরোভের (Pavel Durov) চ্যানেলে এক অফিসিয়াল বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ৫০০ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারীর মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলেছে টেলিগ্রাম। গত ৭২ ঘণ্টায় আরও ২৫ মিলিয়ন নতুন ব্যবহারকারী যোগ দিয়েছেন এই মেসেজিং অ্যাপে। এর মধ্যে ৩৮ শতাংশ এশিয়ার, ইউরোপের ২৭ শতাংশ ও দক্ষিণ আমেরিকার ২১ শতাংশ রয়েছে। তাঁর কথায়, প্রাইভেসি ও সিকিওরিটির কথা ভেবে এত বৃহৎ সংখ্যক মানুষ Telegram-কে বেছে নিয়েছেন। এটা একটা গুরু দায়িত্ব। অত্যন্ত সচেতনতা ও গুরুত্বের সঙ্গে পুরো বিষয়টিকে দেখা হচ্ছে।
advertisement
Apple App Store-এ সিগন্যালের পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে টেলিগ্রাম (Telegram)। এখন হোয়াটসঅ্যাপ রয়েছে তৃতীয় স্থানে। অন্য দিকে, বেশ কয়েকদিন চর্চায় রয়েছে সিগন্যাল নামের মেসেজিং অ্যাপ। অটো-এক্সপার্টদের কথায়, নতুন পলিসি আর আপডেটের জেরে হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে লোকজন এবার সিগন্যালে মজেছেন। এক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প হিসেবে সিগন্যালকে বেছে নিচ্ছেন মানুষজন। সিগন্যালের তরফেও একাধিক বিবৃতিতে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রস্তুতকারকদের কথায়, সব সময়ে সুরক্ষিত থাকবে আপনার প্রাইভেসি। সিগন্যালের ট্যাগলাইনও হল "say hello to privacy।" হোয়াটসঅ্যাপের মতো এন্ড টু এন্ড এনস্ক্রিপশন রয়েছে এই অ্যাপেও। অ্যান্ড্রয়েড, iPhone, iPad, Windows, ম্যাক (Mac), লিনাক্স (Linux)-সহ সর্বত্র উপলব্ধ রয়েছে এটি। হোয়াটসঅ্যাপের মতোই অধিকাংশ ফিচার রয়েছে এখানে। তা ছাড়া উপযুক্ত সম্মতি ছাড়া অন্য কাউকে সহজে গ্রুপে অ্যাড করা যায় না। তাই এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মের প্রতি বিশ্বাস বাড়ছে এই মানুষজনের।
advertisement
এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে কি বেরিয়ে আসতে পারবে হোয়াটসঅ্যাপ? কী ভাবে হবে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট? সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবে আগামী কয়েকটি মাস!
view commentsLocation :
First Published :
January 18, 2021 2:40 PM IST