Explained: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রূপান্তরিত হবে মেটাভার্সে; কী এই Facebook-এর নয়া প্রযুক্তি?

Last Updated:

Explainer: এই মেটাভার্স প্রযুক্তি কী? কী ভাবে এই প্রযুক্তি কাজ করবে?

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
#কলকাতা: দ্রুত এগিয়ে চলছে প্রযুক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে আরও নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছেন প্রযুক্তি ব্যবহারকারীরা। এমনই এক নতুন প্রযুক্তি আনতে চলেছে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট Facebook। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে ইউরোপে তারা ১০ হাজার সুদক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে চলেছে। কারণ মেটাভার্স (Metaverse) নামে একটি প্রযুক্তির সূচনা করতে চলেছে Facebook। মনে করা হচ্ছে আগামী দিনের ইন্টারনেটে এক নতুন মাত্রা দেবে মেটাভার্স প্রযুক্তি। এবিষয়ে মার্ক জুকারবার্গ (Mark Zukerberg) জানিয়েছেন, একটি সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা থেকে একটি মেটাভার্স সংস্থায় পরিণত হবে Facebook। কিন্তু এই মেটাভার্স প্রযুক্তি কী? কী ভাবে এই প্রযুক্তি কাজ করবে? জেনে নেওয়া যাক একে একে…
মেটাভার্স প্রযুক্তি কী?
মেটা শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। যার অর্থ দূর বা অতিক্রম করা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউনিভার্স শব্দটি। দু'টি মিলিয়ে তৈরি হয়েছে মেটাভার্স শব্দটি। এই ধারণাটি খুব একটা নতুন নয়। ম্যাট্রিক্স (Matrix), রিয়েল প্লেয়ার ওয়ান (Real Player On) জাতীয় সিনেমাগুলি দেখলে এবিষয়ে একটি ধারণা করা সম্ভব। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনও একজন বিশেষ একটি ডিভাইজ ব্যবহার করে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির দুনিয়ায় প্রবেশ করবে। যদি Fifa বা Minecraft গেমের সঙ্গে তুলনা করা হয় তাহলে দেখা যাবে এই বিষয়টি অনেকটা ওই গেমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রয়েছে। কারণ ওই গেমগুলির একটি ক্যারেকটার বা একটি চরিত্রের মধ্যে খেলোয়াড় ঢুকে পড়ে এবং নিজেকেই ওই চরিত্র হিসেবে মনে করে। এবং কমেন্ড বা কন্ট্রোলার দিয়ে ওই চরিত্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করে। মেটাভার্স প্রযুক্তিও অনেকটা সেরকম। এই প্রযুক্তিতে একটি ভার্চুয়াল স্পেস তৈরি করা হবে। যেখানে প্রবেশ করে ব্যবহারকারীরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে পারবে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারবে। কথাবার্তা বা আলোচনার জন্য যে একই জায়গায় থাকতে হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে প্রবেশ করে তাঁরা এই কথাবার্তা চালিয়ে যেতে পারেন। খুব সহজ ভাবে বোঝাতে হলে বলতে হয়, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি ভার্চুয়াল দুনিয়ায় প্রবেশ করবেন ব্যবহারকারীরা।
advertisement
advertisement
ধরে নেওয়া যাক একই পরিবারের কয়েকজন সদস্য দিল্লিতে থাকেন এবং কয়েকজন সদস্য থাকেন কলকাতায়। তাঁরা একসঙ্গে ডিনার করতে ইচ্ছুক। এক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে ভিডিও কল করে তাঁরা এই একসঙ্গে ডিনার করার মজা উপভোগ করতে পারেন। কিন্তু মেটাভার্স প্রযুক্তির মাধ্যমে পুরো বিষয়টি হবে একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে একটি ভার্চুয়াল দুনিয়ায় প্রবেশ করবেন তাঁরা। এবং এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা হবে যাতে মনে হবে তাঁরা এক সঙ্গে বসেই ডিনার করছেন। মনে করা হচ্ছে এই প্রযুক্তি চালু হলে অনলাইন দুনিয়ার অন্য অভিজ্ঞতা পাবেন ব্যবহারকারীরা। অনলাইন শপিংয়ের ক্ষেত্রেও এর অবদান বিপুল। জামা বা অন্য কোনও ড্রেস কেনার আগে পরে দেখার মতো বা ট্রায়াল দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা পাবেন ব্যবহারকারীরা।
advertisement
এটা কী ভাবে কাজ করবে?
এই প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী প্রয়োজন। তার মধ্যে রয়েছে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ডিভাইজ, হেডসেট। Facebook ইতিমধ্যে অকুলাস ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হেডসেট ডিভাইজ সংস্থাকে অধিগ্রহণ করেছে। ২০১৪ সালে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ওই সংস্থাকে কিনে নেয় তারা। ইতিমধ্যে ২০১৯ সালে Facebook-এর তরফে একটি VR ওয়ার্লের সূচনা করা হয়েছিল। ওই ভার্চুয়াল দুনিয়ায় প্রবেশ করা সম্ভব যদি কেউ শুধুমাত্র অকুলাস ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হেটসেট ব্যবহার করে। চলতি বছরের অগাস্ট মাসে Facebooker-এর তরফে চালু করা হয়েছে হরাইজন ওয়ার্করুম। যার মাধ্যমে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন সহকর্মীরা। এবং তাঁরা একটি ভার্চুয়াল রুম তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন মিটিং বা আলোচনা সারতে পারবেন। এক্ষেত্রে একে অপরকে একটি কার্টুন চরিত্রের ন্যায় দেখতে পারবে। এবং 3D ভার্সনে দেখতে পাওয়া সম্ভব।
advertisement
ইন্টারনেটের দুনিয়ায় মেটাভার্স প্রযুক্তি এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, শুধু আলোচনা বা গল্প নয়, সব দিক থেকে এক প্রভূত উন্নতি সাধন করবে মেটাভার্স প্রযুক্তি। এবিষয়ে ম্যাথিউ বল নামে এক বিনিয়োগকারী একটি ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন, “মেটাভার্স একটি সম্পূর্ণ পরিচালিত অর্থনীতিতে পরিণত হবে। যেখানে প্রতিটি মানুষ ব্যক্তিগতভাবে এবং প্রতিটি ব্যবসাদার নিজেরা স্পেস তৈরি করতে পারবে, মালিকানা পাবে, বিনিয়োগ করতে পারবে এবং বিক্রি করতে পারবে।”
advertisement
ম্যাথিউ আরও মনে করেন, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সহজে আসল ও ভার্চুয়াল দুনিয়ার মধ্যে মিল করা সম্ভব হবে।
এটা কী ভাবে তৈরি করা হবে?
গত মাসে এবিষয়ে একটি ব্লগ পোস্ট করেন Facebook রিয়্যালিটি ল্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রিউ বসওর্থ এবং সংস্থার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেজ। সেখানে তাঁরা লেখেন, মেটাভার্স এমন একটি সিঙ্গল প্রডাক্ট নয়। একটি সংস্থা নিজে একাই এই প্রডাক্ট তৈরি করতে পারে না। এমনকী রাতারাতি এই প্রযুক্তি তৈরি করা সম্ভব নয়। এই প্রযুক্তি সঠিক ভাবে তৈরি করতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
advertisement
তাঁরা আরও জানিয়েছেন, কোনও একটি সংস্থা মেটাভার্স প্রযুক্তির মালিক হতে পারে না। বিভিন্ন সংস্থা মিলে এই প্রযুক্তি তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজন একাধিক ডেভেলপার, ক্রিয়েটার্স এবং পলিসিমেকার।
ইতিমধ্যে রোবলক্সের মতো বিভিন্ন গেমিং সংস্থা ভার্চুয়াল রিয়ালিটি গেম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। পাশাপাশি Nvidia-র মতো বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত গ্রাফিক প্রস্তুতকারী সংস্থাও এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। তারা মূলত 3D ভার্চুয়াল রিয়ালিটি দুনিয়ায় ওমনিভার্স নামে একটি প্রযুক্তি তৈরির কাজ চালাচ্ছে।
advertisement
ইতিমধ্যে এই প্রযুক্তির জন্য ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে Facebook। এছাড়াও অন্য আরও সংস্থা এই প্রযুক্তির জন্য বিনিয়োগ করেছে। এই প্রযুক্তির জন্য ১০ হাজার অত্যন্ত দক্ষ কর্মীকে নিয়োগ করবে Facebook।
ডেটা প্রাইভেসি কি থাকবে?
এই প্রযুক্তির ডেটা প্রাইভেসি নিয়ে সে ভাবে কোনও কথা এখনও পর্যন্ত Facebook-এর তরফে জানানো হয়নি। তবে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন মার্কিন পত্রিকা এবং জার্নালে সমালোচিত হয়েছে। বলা হয়েছে এই প্রযুক্তির ফলে শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প, খেলা, খাওয়া-দাওয়া সহ একাধিক কাজ করা যাবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটিতে। এর জন্য বেশিক্ষণ অনলাইন থাকার কোনও প্রয়োজন নেই। বরং যে সময়টুকু অনলাইনে থাকা হবে তা আরও মনোমুগ্ধকর হবে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/প্রযুক্তি/
Explained: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রূপান্তরিত হবে মেটাভার্সে; কী এই Facebook-এর নয়া প্রযুক্তি?
Next Article
advertisement
Purba Bardhaman News: 'ছায়াশত্রু' কারা? বিতর্কিত মন্তব্যের পর তৃণমূলে ঝড়, ব্যাখ্যা দিলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ
'ছায়াশত্রু' কারা? বিতর্কিত মন্তব্যে তৃণমূলে ঝড়, ব্যাখ্যা দিলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ
  • এবার 'ছায়া' শত্রুর নাম সামনে আনলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূলে কংগ্রেসের  সভাপতি  রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। বর্ধমানে দলের বিজয়া সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, 'এখন লড়াই বাম আমলের থেকেও কঠিন। এখন ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।'

VIEW MORE
advertisement
advertisement