ব্লু হোয়েলের পর এবার আতঙ্কের নতুন গেম ‘মোমো’, ছড়াচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে
Last Updated:
#নয়াদিল্লি: ব্লু হোয়েল গেমের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের অনলাইন গেমের আতঙ্ক ছড়িয়েছে ৷ এবার আতঙ্কের নাম ‘মোমো’৷ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ‘মোমো’ নামের এই অনলাইন গেম ৷ ইতিমধ্যেই এই অনলাইন গেম নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকায় সতর্কতা জারি হয়েছে ৷ নতুন এই গেমকে বিশ্লেষকরা ব্লু হোয়েলের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
গত ২৫ জুলাই আর্জেন্টিনার রাজধানীতে একটি শিশুকন্যার আত্মহত্যার জন্য এই মোমো গেমকে দায়ী করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এ খেলা মানুষকে মারাত্মক পরিনতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদিও এর মধ্যেই এটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছে।
মোমো আসলে কী?
অনলাইন গেম বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, হুট করে এটা আপনার কম্পিউটারের স্ক্রিনে ভেসে উঠতে পারে এবং গেমে অংশ নিতে প্রলুব্ধ করতে পারে। কিন্তু সেটা করলেই আপনি বোকা বনে যাবেন। লাতিন আমেরিকার কর্তৃপক্ষ জনগণকে সতর্ক করে বলেছে, এ গেম মেসেজের মাধ্যমে অন্যকে না দেওয়ার জন্য। কারণ তারা বলছে, এই অনলাইন গেম কাউকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে।
advertisement
advertisement
মেক্সিকোর অনলাইন অপরাধ নিয়ে কাজ করা পুলিশ ইউনিট বলছে, এটা শুরু হয়েছে ফেসবুকে। একদল লোক একে অন্যকে প্রলুব্ধ করে একটি অপরিচিত নম্বরে কল দেওয়ার জন্য। যদিও সেখানে একটি সতর্কতা দেওয়া ছিল।
মেক্সিকোর পুলিশ জানায়, অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছে যে মোমোতে বার্তা পাঠানোর পর সে সহিংস ছবি পাঠাবে। অনেকে হুমকিমূলক বার্তা পেয়েছেন বা ব্যক্তিগত তথ্যও ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। মোমো ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী, আমেরিকা থেকে ফ্রান্স কিংবা আর্জেন্টিনা থেকে নেপাল। স্পেনে পুলিশও এ ধরনের গেম উপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে নাগরিকদের। মেক্সিকোর মতো স্পেনও ট্যুইটারে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে এবং লোকজনকে এ খেলায় অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। হ্যাশট্যাগ ইগনোর ননসেন্স দিয়ে চলছে প্রচার, যাতে বলা হচ্ছে ‘ডোন্ট অ্যাড মোমো টু ইওর কন্টাক্টস’।
advertisement
কিন্তু এতসব সতর্কতা সত্ত্বেও এখনও বিভ্রান্তি রয়েছে যে, আসলে কোথা থেকে মোমোর সূচনা হল?
মোমোর এমন বিস্তার নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রেডিট বলছে, তাদের সবচেয়ে পড়া হয়েছে এমন পোস্টগুলোর একটি হল ‘হোয়াটসঅ্যাপ কন্যা মোমো কী ও কে?’
রেডিট বলছে, ‘একটি ভিডিও পেয়েছি এটি সম্পর্কে এবং এটি ভীতিকর’। সবচেয়ে জনপ্রিয় উত্তর ছিল, স্প্যানিশভাষী কোনও দেশ থেকে একজন ইনস্টাগ্রাম থেকে একটি ছবি নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। লোকজন সেখান থেকে একটি কন্টাক্ট নম্বর পায় ও গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে কেউ একে স্পর্শ করলে সে তাকে গ্রাফিক ছবি ও বার্তা দেবে। কেউ কেউ বলেন যে, ব্যবহারকারীর সব ব্যক্তিগত তথ্যে তার প্রবেশাধিকারের সুযোগ আছে।
advertisement
১১ জুলাই ইউটিউবার রেইনবট এ বিষয়ে একিট ভিডিও পোস্ট করেন। ভিডিওটি ইতিমধ্যে পনেরো লক্ষেরও বেশি মানুষ দেখে ফেলেছে। কিন্তু তিনিও আসলে জানেন না কে এই মোমোর স্রষ্টা। অর্থাৎ মোমো কে তৈরি করেছেন সেটি তাঁরও জানা নেই। এখন যতটুকু জানা যাচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপ গেমটি জাপানের কোড সম্বলিত তিনটি ফোন নম্বরের, কলম্বিয়ার কোড সম্বলিত দুটি আর মেক্সিকোর কোড সম্বলিত আরেকটি নম্বরের সঙ্গে সংযুক্ত। আর ছবিটি নেওয়া হয়েছে টোকিও’র একটি প্রদর্শনী থেকে।
advertisement
যদিও এটা জানা খুবই কঠিন যে, গেমটি আসলে কোথা থেকে এসেছে। কিন্তু এটি এখন জানা যে ছবিটি জাপানের মোমোকেই প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যবহার করা হয়। মোমোর ভীত চাহনির মুখ একটি পাখি মানবীর মূর্তিকে তুলে ধরে। ২০১৬ সালে টোকিওতে ভ্যানিলা গ্যালারিতে একটি প্রদর্শনীর অংশ ছিল এটি। দু’বছর আগে আরেকটি প্রদর্শনীতে মোমো ছিল বিশেষ আকর্ষণ। বহু মানুষ মোমোর সঙ্গে পোজ দিয়ে ছবি তুলেছে এবং এমন বহু ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত হয়েছে। মেক্সিকোর পুলিশের দাবি, কেউ ইনস্টাগ্রাম থেকে ওই অনুষ্ঠানের ছবি নিয়ে সেটাকেই কেটে কুটে এমন বানিয়েছে।
Location :
First Published :
July 31, 2018 4:15 PM IST