#কলকাতা: অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলাদের বিশ্বকাপের ফাইনালে সেরা হয়েছেন বাংলার চুঁচুড়ার মেয়ে তিতাস সাধু। ১৯ বছরের তিতাস ছেলেদের সঙ্গে প্র্যাকটিস করেই ক্রিকেট শুরু করেছিলেন। অনুর্ধ্ব ১৯ মেয়েদের বিশ্বকাপ ফাইনালে বাংলার মেয়ের দাপুটে পারফরম্যান্সেই পরাজিত ইংল্যান্ড। প্রথমবার বিশ্বকাপ মঞ্চে কোন বাঙালি ম্যাচের সেরা পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন। তাই ফাইনালের পর থেকে চর্চায় শুধু তিতাস।
ঝুলনের উত্তরসূরিকে নিয়ে আলোচনা বাসে, ট্রামে কিংবা চায়ের ঠেকে। কোথা থেকে এল এই মেয়ে। কী ভাবে তিতাসের উত্থান। বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে চর্চা চলছে। তাই তিতাসের জীবনের গল্প তুলে ধরার পালা। আলোচনার শীর্ষে থাকা তিতাসের জীবনের অজানা গল্প নিউজ ১৮ বাংলায়। হুগলির চুঁচুড়ার মেয়ে তিতাসের বাবা রনজিৎ সাধু নিজেও ছিলেন অ্যাথলিট। ক্রীড়াবিদের মেয়ে ক্রিকেটে আগ্রহী। তার ক্রিকেট প্রতিভা প্রথম নজরে পড়ে বাংলার রঞ্জি দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার প্রিয়ঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের। তারপর থেকেই গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন তিনি। মহিলা ক্রিকেটার হলেও তিতাসকে নিয়মিত ছেলেদের সঙ্গে খেলাতেন কোচ।
প্রিয়ঙ্কর বলেন, "অনূর্ধ্ব ১৫, অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগের টুর্নামেন্টে তিতাস ম্যান অব দ্য ম্যাচ, ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছে। বিশ্বকাপ চলাকালীন রাতের দিকে ওর সঙ্গে কথা হত। ফাইনালের আগেও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই সাফল্য দেখে ভাল লাগছে। অদ্ভুত একটা তৃপ্তি”। একই সঙ্গে যোগ করলেন, “ক্রিকেটার গড়ে তুলতে একটা পরিবেশ পরিস্থিতি দরকার। তিতাসকে দেখে মনে হয়েছিল লম্বা রেসের ঘোড়া। তখনই আমি শিবশঙ্কর পালকে দেখতে বলেছিলাম। ম্যাকো সেই সময় মহিলাদের কোচ ছিল। সেই ভরসা যে মিথ্যে ছিল না তা দেখা যাচ্ছে।"
আরও পড়ুন: ৪২ আসনে বিধানসভা ভোটে ত্রিপুরায় লড়াই করতে চলেছে তিপ্রামোথা
আরও পড়ুন: এবারের ভোটে ত্রিপুরার 'কিং'-ই হয়ে উঠতে পারেন অন্যতম 'কিং মেকার'। ব্যাপারটা কী?
তিন বঙ্গ কন্যার হাত ধরে বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলাদের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে কার্যত গুঁড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। তিন বাঙালি ক্রিকেটার রিচা ঘোষ, ঋষিতা বসু ও তিতাস সাধু। এই ৩ ক্রিকেটারকেই খুব কাছ থেকে দেখেছেন বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার শিবশঙ্কর পাল। তিন বিশ্বজয়ীকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলা মহিলা দলের প্রাক্তন কোচ। শিবশঙ্কর বলেন, "ঝুলনের পর মেয়েদের ক্রিকেটে আরও বাঙালি ক্রিকেটার উঠে আসছে। সেটা দারুণ ব্যাপার।'"
ফাইনালে দারুণ বল করেছেন বাংলার তিতাস সাধু। চার ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে দু’টি উইকেট তুলে নেন বাংলার মেয়ে। কীভাবে তিতাসকে তুলে এনেছিলেন? শিবশঙ্কর বলছেন, "তিতাসের কোচ প্রিয়ঙ্কর আমায় জানান ওঁর কথা। আমি পাঠাতে বলি। নেটে ওর বোলিং দেখি। ওর বোলিং দেখে আমার ভাল লাগে। সেই সময় সিএবি সভাপতি ছিলেন অভিষেক ডালমিয়া। দেবব্রত দাস তখন যুগ্ম সচিব। সবার সঙ্গে কথা বলে তাঁদের রাজি করাই। তারপর ওকে নেওয়া হয় দলে। তারপর থেকেই ভাল খেলছে ও।"
তিতাসকে বাংলা দলে নেওয়ার জন্য আলাদা কোনও কৃতিত্ব দাবি করতে নারাজ শিবশঙ্কর। তিবি বলেন, "আমি কাউকে দলে নিতে পারি। তবে খেলার দায়িত্ব তো ওঁর। ও সেটাই দারুনভাবে করে গিয়েছে। আমরাও অনেক সময় ভুল করে ফেলি এটা ঠিক। ওরা ভাল খেলছে দেখলেই ভাল লাগে। মনে হয় ঠিক ক্রিকেটার নির্বাচন করেছি বলে।"প্রিয়ঙ্করের সঙ্গে নিয়মিত কথা হলেও বিশ্বকাপ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে যাওয়ার আগে তিতাসের সঙ্গে কথা হয়নি শিবশঙ্করের। তবে তা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই বাংলার মহিলা দলের প্রাক্তন কোচের। তিনি বলেন, "আমার সঙ্গে রিচা ছাড়া আর কাওরর সঙ্গে কথা হয় না। দুই বছর আগে দায়িত্ব ছেড়েছি। তারপর থেকে খুব একটা কথা হয় না। তবে দেখতে ভাল লাগে ওরা ভাল খেলছে।" ঝুলন গোস্বামীর ছেড়ে যাওয়া জুতোয় পা গলানোর উত্তরসুরীরা চলে আসচে। যা দেখে তৃপ্তি সিএবি জুড়ে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Titas Sadhu