গলায় আন্তর্জাতিক পদক, তবু নেই স্পনসর, আর্থিক অনটনের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে ৭ বছরের কিক-বক্সার

Last Updated:

ক্যানিং টু কলকাতা। কিক-বক্সার বিল্টুর জীবন সংগ্রাম।

#ক্যানিং: ক্যানিংয়ের গৌড়দহ। বিল্টু সর্দারের বাড়ি। বয়স ৭। বছর কয়েক আগে একদিন পাড়াতেই বন্ধুর সঙ্গে মারপিট করছিল বিল্টু। তার অ্যাকশন মনে ধরে গ্রামের বক্সিং শিক্ষক প্রসেনজিতের। প্রতিভা খুঁজে পান ছোট এই ছেলের মধ্যে। ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেন বাবা সমীর সর্দারের সঙ্গে। বিল্টু সর্দারের কিক-বক্সার হওয়ার গল্প শুরু এখান থেকেই। বাবা সমীর সর্দার পেশায় লিফট কর্মী। মাসে ৭-৮ হাজার টাকা রোজগার।
আর্থিক স্বচ্ছ্বলতা না থাকলেও ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সমীর। কাক ডাকার আগে ট্রেন ধরা। সূ্র্য ওঠার আগেই কলকাতা। সকাল থেকে সন্ধে হাড়ভাঙা অনুশীলন। দক্ষিণ কলকাতার লেকপল্লির এক চিলতে মাঠে চলে সাত বছরের বিল্টুর জীবন সংগ্রাম।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক কিক-বক্সিংয়ে ভারতের জন্য রূপো জিতেছেন ক্লাস ওয়ানের ছাত্র। এবার টার্গেট সোনা। বিল্টু বলেন, ‘‘মারামারি করতে ভাল লাগে। জানি বাবা অনেক কষ্ট করেন আমার জন্য। বক্সিং করে ভবিষ্যতে নিজের নাম করতে চাই। দেশকে সাফল্য এনে দিতে চাই।’’
advertisement
advertisement
ক্লাস ওয়ানের বিল্টু ইতিমধ্যেই রাজ্য সেরা। দিল্লিতে সম্প্রতি বসেছিল আন্তর্জাতিক কিক-বক্সিংয়ের আসর। অনূর্ধ্ব ৩২ কেজি বিভাগে অংশ নেয় বিল্টু। মাত্র দু’পয়েন্টের জন্য সোনা হাতছাড়া হয়। তবে হাল ছাড়তে নারাজ বিল্টু। আগামী বছরও এই টুর্নামেন্টে যেতে চায় ক্যানিংয়ের কিক-বক্সার। কিন্তু সমস্যা সেই অর্থ। চলতি বছর দিল্লিতে প্রতিযোগিতা হওয়াতে ছেলেকে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন সমীর সর্দার। তাও টাকা ধার করতে হয়েছে। সবমিলিয়ে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে কিছুটা সাহায্য মিলেছে। তবে বাকি ধার মেটানো নিয়ে চিন্তায় বিল্টুর বাবা। সমীর সর্দার জানান, ‘ছেলে সাফল্য পাওয়াতে খুব ভালো লেগেছে। তবে ধার মেটাতে গিয়ে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। তবে আমি হাল ছাড়ছি না। ছেলেকে কিক-বক্সার তৈরি করাটাই আমার টার্গেট।’
advertisement
ক্রিকেট-ফুটবলের দাপটে প্রচার পায় না বিল্টুদের খেলা। তাই অন্ধকারে থেকে যায় দক্ষিণ কলকাতার এক আবাসনের লিফট কর্মী সমীর সর্দারের স্বপ্নের কথা। ছেলেকে আরও বড় করতে দিন-রাত এক করছেন সমীর সর্দার। বিল্টুর কোচ পার্থ বাবু জানান, ‘বিল্টুর মধ্যে একটা হার না মানা জেদ আছে। আমি যা শেখাই সেটাই তাড়াতাড়ি শিখে নেয়। সঠিক ট্রেনিং পেলে বিল্টু তারকা হতে পারে। বিল্টুর সঠিক খাওয়া দাওয়ার প্রয়োজন।’ এখানে এসেই আটকে যাচ্ছে বিল্টু স্বপ্ন। একজন কিক বক্সার হয়ে উঠতে গেলে প্রয়োজন সঠিক ডায়েট। প্রোটিনযুক্ত খাওয়া। কিন্তু বিল্টুর পরিবার এইসব পাবে কোথায়? কী ভাবে আর্থিক অনটনকে আপার-কাট মারবেন বিল্টু? ৭ বছরের কিক-বক্সারের বলেন, ‘’ট্রেনে আসা যাওয়ার সময় যা পাই তাই খাই। আমাদের এত টাকা নেই। বাবা আমার জন্য খুব চেষ্টা করেন।’ একটা স্পনসরশিপ। সরকারি হস্তক্ষেপ। কিছুটা আর্থিক সাহায্য। বিল্টু সর্দারের জীবন পাল্টে দিতে পারে। যতদিন না সেই সাহায্য মিলছে ততদিন অনটনের সঙ্গে লড়াই করে কিক-বক্সার হওয়ার স্বপ্নে বুঁদ বিল্টু সর্দার।
advertisement
Eeron Roy Barman
view comments
বাংলা খবর/ খবর/খেলা/
গলায় আন্তর্জাতিক পদক, তবু নেই স্পনসর, আর্থিক অনটনের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে ৭ বছরের কিক-বক্সার
Next Article
advertisement
Bidhannagar Rail Station: এক মৃত্যু দেখতে গিয়ে আর এক মৃত্যু! কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে বিধাননগর স্টেশনে জোড়া দুর্ঘটনা
এক মৃত্যু দেখতে গিয়ে আর এক মৃত্যু! কয়েক মিনিটের ব্যবধানে বিধাননগর স্টেশনে জোড়া দুর্ঘটনা
  • বিধাননগর স্টেশনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা৷

  • ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু যাত্রীর৷

  • কী হয়েছে দেখতে গিয়ে মৃত আরও ১৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement