৩০ বছর পরে স্বপ্নের সামনে বাংলা, এই ক্যানসার জয়ীর জেদেই সাফল্য

Last Updated:

রঞ্জি ফাইনালে বাংলা। ১৩ বছর পর ফাইনালে ওঠার রহস্য কী? টিম ম্যানেজমেন্টের দাবি, তারুণ্য-ফিটনেস ও ড্রেসিংরুমের ফিল গুড ফ্যাক্টরই সাফল্যের চাবিকাঠি৷

#কলকাতা: ৩০ বছর আগে শেষবার রঞ্জি ট্রফি জিতেছিল বাংলা। তারপর ২০০৬ ও ২০০৭-এ ফাইনাল। তবে দু’বারই রানার্স হতে হয়েছিল দীপ দাশগুপ্তর দলকে। ১৯৯০ সালে শেষ বার বাংলার রঞ্জি ট্রফি জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন অরুণ লাল। সেই লালজি বর্তমান বাংলা দলের কোচ। তাঁর ভর করেই স্বপ্ন দেখছে বাংলা৷
দায়িত্ব নিয়ে টিমকে কোচ অরুণ লালের বার্তা ছিল হারার আগে হারব না৷ তিনিই শেখাতে চেয়েছিলেন শেষ বল পর্যন্ত চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের মন্ত্র। পারফর্ম করলেই দলে জায়গা আর ফিটনেসে দেশের সেরা দল হয়ে ওঠা।  ১৩ বছর পর ফাইনালে উঠে সাফল্যের পুরো কৃতিত্বই কোচকে দিচ্ছেন ছাত্ররা। আর কোচ বলছেন, " বেশ কয়েকটা ভালো ছেলেকে একসঙ্গে পেয়েছিলাম। প্রতিভা নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না। শুধু তাগিদটা মনে গেঁথে দিতে হতো। সেই কাজটাই আমি করেছি। পরিশ্রমের বিকল্প হয় না।"
advertisement
বাংলা দলের অন্যতম অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মনোজ তিওয়ারি দাবি করলেন, "লালজির উপস্থিতিতে ড্রেসিংরুমের পরিবেশটাই পাল্টে গেছে। আমরা সবাই সবার জন্য খেলি। জুনিয়র সিনিয়র সবাই একসঙ্গে কাজ করছি।" দলের আরেক ক্রিকেটার শাহবাজ বলেছেন, "স্যার আমাদের স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।"
advertisement
শেষ কয়েক বছরে বাংলার সাফল্যের থেকে খবরের শিরোনামে থাকত ড্রেসিংরুমের কোন্দল। গত মরশুমের মাঝপথে দায়িত্ব নিয়েই দলকে লালজি বুঝিয়ে দেন, এই টিমের বস তিনিই। সিনিয়র-জুনিয়র শক্তির লড়াই নয়, যে পারফর্ম করবে, সেই টিমে থাকবে। তাই শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত অন্যতম সেরা বোলার অশোক দিন্দাকেও ছেঁটে ফেলতে টিম ম্যানেজমেন্ট পিছপা হননি।
advertisement
দলের বোলিং কোচ রণদেব বসু বলেন, "অরুণ লাল দলকে একটা ছাতার তলা থেকে থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেছেন। অশোক দিন্দা অন্যতম সেরা বোলার। তবে বাংলার এই দলের সাফল্যের পেছনে তারুণ্যই ভরসা। ঈশান,মুকেশ,আকাশদীপদের মত একসঙ্গে তিনজন জোরে বোলার বাংলায় এইভাবে পারফর্ম করেনি।"
জীবনের প্রায় সবগুলো লড়াইই জিতেছেন অরুণ লাল। কয়েক বছর আগে মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। বন্ধ হয়ে যায় ধারাভাষ্য দেওয়া। তবুও হার মানেননি। ক্যানসারকে হারিয়ে এসেছেন জীবনের মূল স্রোতে। সৌরভের ডাকে দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন বাংলা ক্রিকেট দলের। মনোজদের কোচ হওয়ার পরেই বার্তা ছিল ট্রফি জিততে হলে চাই মানসিক-শারীরিক ফিটনেস।
advertisement
অরুণ লাল প্রথমবার বাংলা ক্রিকেট দলে চালু করেছেন ইয়ো- ইয়ো টেস্ট। মুখের লালা থেকে ডিএনএ টেস্ট করে দেখে নেওয়া হয়েছে কোন ক্রিকেটারের শারীরিক ভাবে কতটা তৈরি। প্রত্যেকের জন্য আলাদা ফ্লেমিং করেছেন। কারণ অরুণ লাল মনে একজন ফিট ক্রিকেটারই মাটির সাফল্য পেতে পারে। ট্রেনের সঞ্জীব দাসের কাছে অরুণলাল মরশুম শুরুতেই বলে দেন, ‘‘ওয়ার্ডের ৩০ জন ক্রিকেটারকে চূড়ান্ত ফিট করে তুলতে হবে। যত কষ্ট হোক না কেন ট্রেনিংয়ে।" নির্দেশ মতো নিঃশব্দে কাজ করে গেছেন। তাই মরশুম শেষে এসেও জুনিয়র ঈশান, অকাশ যতটা ফিট, সিনিয়র অনুষ্টুপ,মনোজ ঠিক যতটা ফিট। বয়স কোনও ফ্যাক্টর হয়নি।
advertisement
বাংলা দলের ট্রেনার সঞ্জীব দাস বলেন, দায়িত্ব নিয়ে দেখেছিলাম দলের ফিটনেস ট্রেনিং এ সমস্যা রয়েছে। ক্রিকেটাররা প্রতি মুহূর্তে সাহায্য করেছে। কঠিন ট্রেনিং করিয়েছি। যখন আসতে বলেছি তখন এসেছে। পরিশ্রমের ফল পেয়েছে সবাই। তাই কোনও চোট-আঘাত হয়নি মরশুমে।"
অরুণলাল মানেই জেদ। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই। ক্রিকেট কেরিয়ারে ফাটা হাত নিয়ে ব্যাট করে দলকে ম্যাচ জিতিয়েছেন। বর্তমান বাংলা ক্রিকেটারদের নিজের গল্প বলে বারবার উদ্বুদ্ধ করেছেন। সামনে এনেছেন করে ক্যান্সার জয় করে আবার কী করে ফিরেছেন সেই গল্পও। বাংলা ক্রিকেটাররা লালজিকে সামনে পেয়ে নিজেদের দর্শনও পাল্টে ফেলেছেন। প্রত্যেক ক্রিকেটারের অকপট স্বীকারোক্তি, ড্রেসিংরুমের পরিবেশ থেকে দলের মানসিকতা পাল্টে দিয়েছেন অরুণ লাল।
advertisement
ক্রিকেটার হিসেবে ভারতীয় জার্সিতে খেলা। রঞ্জি ট্রফি জয়। সিএবি লাইফটাইম পুরস্কার। সব কিছু পাওয়ার পরেও খিদে মেটেনি অরুণলালের। তাই এখন স্বপ্ন দেখছেন, কোচ হিসেবে রঞ্জি ট্রফি জয়ের। পারবেন কি লালজি? বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের ৩০ বছরের অধরা স্বপ্ন পূরণ করতে? প্রশ্ন শুনেই অরুণ লালের উত্তর, "চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে ভাবছিনা। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাঠে লড়ব। প্রত্যেককে বলেছি নিজের সেরাট দাও। আজ যা পারফর্ম করলে কাল তার থেকে একধাপ বেশি করো। ট্রফি এমনিতেই তোমার ক্যাবিনেটে ঢুকবে।"
advertisement
ERON ROY BURMAN
view comments
বাংলা খবর/ খবর/খেলা/
৩০ বছর পরে স্বপ্নের সামনে বাংলা, এই ক্যানসার জয়ীর জেদেই সাফল্য
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement