দাঁইহাট: দেশ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৫১ সতী পিঠের অন্যতম সতীপিঠ পূর্ব বর্ধমানের ক্ষীরগ্রামের মা যোগাদ্যা সতীপীঠ। এই স্থানে দেবী সতীর ডান পায়ের বুড়ো আঙুল পড়েছিল, যে কারণে এই স্থানকে শক্তিপীঠের মর্যাদা দেওয়া হয়। ক্ষীরগ্রামে দেবী যোগাদ্যার মন্দিরে গেলে চোখে পড়বে, বিশাল ক্ষীরদীঘির পাড়ে রক্তিমবর্ন মন্দিরের গর্ভগৃহে অধিষ্ঠান করছেন ফুল, গয়নায় সুসজ্জিতা কালো কষ্ঠী পাথরের দেবী যোগাদ্যা।
অপরূপ এই বিগ্রহের টানে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা। মন্দিরে দেবীর দুটি বিগ্রহ থাকলেও, সারা বছর ভক্তরা দর্শন পান কেবল একটি দেবী মূর্তির। অপর মূর্তিটি সারাবছর ক্ষীরদীঘির জলে নিমজ্জিত থাকে। মন্দিরে দেবী যোগাদ্যার যে অপরূপ বিগ্রহ নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের, সেই মূর্তি কে নির্মাণ করেছিলেন জানেন?
আরও পড়ুনঃ হঠাৎ আবহাওয়ার ব্যাপক বদল! আজই কিছুক্ষণের মধ্যে জেলায় জেলায় কাঁপিয়ে বৃষ্টি, জানুন সর্বশেষ পূর্বাভাস
দেবী মূর্তিটি নির্মাণ করেছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার দাঁইহাটের বাসিন্দা নবীন ভাস্কর নামক এক শিল্পী। বর্ধমানের তৎকালীন মহারাজের নির্দেশে এই মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। শোনা যায়, মূর্তি নির্মাণকালে ছালের কাপড় পড়ে, হব্বিশ্যান্ন খেয়ে থাকতেন তিনি। মন্দিরকে ঘিরে থাকা অন্যান্য অলৌকিক ঘটনার মতোই দেবীর মূর্তি নির্মাণকে ঘিরেও বর্ণিত হয় এক ঘটনার কথা। নবীন ভাস্কর ও তার শিল্প প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে এমনই তথ্য দিলেন নবীন ভাস্করের নাতনী।
আরও পড়ুনঃ ২২ মে পুরুলিয়ায় অভিষেকের নব জোয়ার যাত্রা, কী কৌশলে বাজিমাত? মিলল ইঙ্গিত
এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, “পাথর পছন্দ না হলে নাকি কাজ করতে পারতেন না নবীন ভাস্কর। তাই নিজের পছন্দমত ভাল পাথরের তাগিদে, বিহারের জামালপুরের কাছে কিনেছিলেন আস্ত এক পাহাড়। তার পরিবারের সদস্যদের কথায় আজও সেই পাহাড়ের নিচে সাইনবোর্ডে জ্বলজ্বল করছে পূর্ব বর্ধমানের প্রখ্যাত ভাস্কর্য শিল্পী নবীন ভাস্করের নাম।”
তবে শুধু ক্ষীরগ্রামের দেবী যোগাদ্যা মূর্তি নয়। নবীন ভাস্করের ডাক পড়েছিল খোদ কলকাতার জানবাজারের রানি রাসমণির থেকে। রানি মার নির্দেশে নবীন ভাস্কর নির্মাণ করেছিলেন দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণীর মূর্তি। তার বানানো অপর আর এক বিগ্রহ হল অট্টহাসের সিংহবাহিনী দেবী মূর্তি। কেতুগ্রামের অট্টহাস তীর্থস্থানে গেলে এখনও চোখে পড়ে সেই দেবী মূর্তি। বর্তমানে দাইহাট শহরে নবীন ভাস্করের বাড়িটি অযত্নে তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। জানা গিয়েছে, পরিবারের সকলেই এখন কলকাতায় থাকেন তাই বর্তমানে নবীন চন্দ্র ভাস্করের বাড়ি অযত্নেই পড়ে রয়েছে।
Bonoarilal Chowdhury
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।