#মিনাখাঁ: রাজ্যের সহযোগিতাতেই কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল আমফানের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল শুক্রবার পরিদর্শন করেন। মূলত সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লক, ধামাখালি, মিনাখাঁর একাধিক গ্রাম পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের চার সদস্যের দল। পরিদর্শন চলাকালীন অবশ্য কেন্দ্রীয় দলকে সামনে পেয়েই আমফানের পর দুসপ্তাহ কেটে গেলেও ত্রাণ পাননি বলেই অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগের সময় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। মিনাখাঁ, সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামবাসীরা জানিয়ে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছে। এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ধামাখালিতে একটি প্রশাসনিক বৈঠকও করেন। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলির ভিডিও এবং থানার আইসিদের সঙ্গে বৈঠক করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলির বিবরণ পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সামনে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলাশাসক বৈঠকের তদারকি করেন। রাস্তা এবং লঞ্চে করে দীর্ঘ আধঘন্টা বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন সদস্যরা।
আমফানের দুদিন পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জাগদীপ ধনখর হেলিকপ্টারে করে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলি পরিদর্শন করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে রাজ্যকে এক হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই দিন পরিদর্শনের পরেই। যদিও প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন বিস্তারিত ভাবে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এ রাজ্যে আসবে।
সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল কলকাতায় আসে। সাত সদস্যের এই প্রতিনিধি দল দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন শুক্রবার। প্রথমে ধামাখালিতে একপ্রস্থ প্রশাসনিক বৈঠক করে নেওয়ার পর উত্তর ২৪ পরগনার চার সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল লঞ্চে করে সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। গাজিখালি, বাউনিয়া সহ একাধিক অঞ্চল পরিদর্শনের পাশাপাশি লঞ্চ থেকেই গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।
সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশজুড়ে নদী বাঁধের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লঞ্চে যেতে যেতেই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন অংশ দেখান। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বিভিন্ন অংশ জুড়ে বাঁধ ভাঙার ছবি ও মোবাইল বন্দি করেন। শুক্রবার প্রথমার্ধে লঞ্চ মারফত বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শনের পাশাপাশি দ্বিতীয়ার্ধে মিনাখাঁর কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেন।
গ্রাম পরিদর্শনের সময় কেন্দ্রীয় দলকে সামনে পেয়ে গ্রামবাসীরা একরাশ অভিযোগ করেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনেই।ত্রাণ না পাওয়া, খাবার না পাওয়া সহ একাধিক অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তৎক্ষণাৎ অভিযোগকারী গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনেন। মিনাখাঁ পুটখালি গ্রামের বাসিন্দা সীমা পাল অভিযোগ করেন, "১৫ দিন হতে চলল আমরা এখনও সরকারের তরফে কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। শুধু রেশনের মাধ্যমে চাল পাচ্ছি।"
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এদিন এই গ্রামের একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়ার ছবিও মোবাইলবন্দি করেন। একাধিক জায়গায় গাছ পড়া মোবাইলে ভিডিওগ্রাফি করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ঝড়ের সময় গ্রামবাসীদের কোথায় রাখা হয়েছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেন তাঁরা। পরে অবশ্য কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের এক সদস্য জানান, " আপাতত আমরা পরিদর্শন করছি বিভিন্ন এলাকায়। গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলছি। আমরা যা বলার আমাদের রিপোর্টের মাধ্যমে জানাবো।"
শনিবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর মথুরাপুর এক নম্বর ব্লকের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন।
SOMRAJ BANDOPADHYAY
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Amphan Cyclone, Amphan Effect