Summer Vacation Trip|| গরম তো থাকবেই, গ্রীষ্মের ছুটিতে তাও যেতেই পারেন 'বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন' গনগনি

Last Updated:

Summer Vacation trip to Gangani: গড়বেতা স্টেশনের অদূরে গনগনি। সপ্তাহান্তে ভ্রমণের আদর্শ জায়গা। প্রকৃতিই এখানে শিল্পী। তার আপন খেয়ালে সেজে উঠেছে শিলাবতী নদীর তীরে গড়বেতার অন্যতম পর্যটনস্থল গনগনি

সংগৃহীত ছবি।
সংগৃহীত ছবি।
#পশ্চিম মেদিনীপুর: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখতে সারা বিশ্ব থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক যান। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই জানেন না, খোদ বাংলাতেই রয়েছে অবিকল এমনই একটি জায়গা। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার গনগনিকে অনায়াসেই বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন বলা যায়। শীলাবতী নদীর পাশে অবস্থিত এই অঞ্চলটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কোনও অংশেই কম নয়।
গড়বেতা স্টেশনের অদূরে গনগনি। সপ্তাহান্তে ভ্রমণের আদর্শ জায়গা। প্রকৃতিই এখানে শিল্পী। তার আপন খেয়ালে সেজে উঠেছে শিলাবতী নদীর তীরে গড়বেতার অন্যতম পর্যটনস্থল গনগনি। নিসর্গের নিরিখেই এই এলাকাটিকে ‘বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ বলেন বহু পর্যটক। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তেই গনগনিকে পর্যটন কেন্দ্রের রুপ দিতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য পর্যটন দফতর। শিলাবতী নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলার একমাত্র গিরিখাদ গনগনি। ছোটনাগপুরের মালভূমিতে উৎপত্তি শিলাবতী নদীর পুরুলিয়ার পুঞ্চা শহরের কাছে। সেই শিলাবতী নদী পুরুলিয়া, বাঁকুড়া আর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে। ঘাটালের কাছে জোট বেঁধেছে দ্বারকেশ্বরের সঙ্গে। এই ছোট্ট শিলাবতী প্রায় সারা বছর গা এলিয়ে শুয়ে থাকে, অত্যন্ত রুগ্ন, শীর্ণ চেহারা তার। কিন্তু বর্ষা এলেই তার রুদ্র রূপ, ভাসিয়ে দেয় চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই আর ঘাটাল। এ হেন শিলাবতীর কেরামতিতে সৃষ্টি এই গনগনির গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।
advertisement
আরও পড়ুন: গরমের ছুটিতে ডেস্টিনেশন হতেই পারে পেলিং, কীভাবে যাবেন-কোথায় থাকবেন? জেনে নিন...
গনগনি আজ বহু বছরের মধ্যবর্তী সময়ে সঞ্চিত কাঁকুরে পলল স্তরের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমান্বয়ে ঋতুগত ভৌমজলস্তরের ওঠা নামার ফলে আর্দ্রতা ও শুষ্কতার প্রভাবে তৈরি হওয়া ল্যাটেরাইটের প্রকাশ। শিলাবতী নদীর ডানদিকের পাড় বরাবর দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ৩০ মিটার উঁচু এই ডাঙার খাড়া ঢাল বরাবর গভীর ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট অজস্র ছোট ছোট নালা এবং নালাগুলির সংযুক্তির ফলে সৃষ্টি হওয়া অসংখ্য গালির সমন্বয়ে এই ক্ষয়িষ্ণু ভূমিরূপের সৃষ্টি। গড়বেতা শহরটি বেশ উঁচু। পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। বর্ষায় ফুলে ফেঁপে ওঠা নদী গিয়ে আছড়ে পড়ে পাশের উঁচু টিলায়। পাশাপাশি বৃষ্টিতেও ভূমিক্ষয় হয়। সেই ভূমিক্ষয় থেকেই তৈরি হয়েছে ছোট ছোট টিলা, গর্ত, খাল। তাতে আবার রঙের বৈচিত্র্য। কোথাও সাদা, কোথাও লালচে বা ধূসর। কোনও অংশ দেখে আবার মনে হবে যেন মন্দির, আবার কোনও অংশ মনুষ্য আকৃতির, কোথাও বা টিলা গুহার আকার নিয়েছে।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: নদী চরে নিত্য থামে সারি সারি নৌকা-গাড়ি! রমরমিয়ে চলে ব্যবসা! কারা আসে জানেন?
ভূগোলের ছাত্রছাত্রী থেকে গবেষক, ভূমিক্ষয় নিয়ে গবেষণার জন্য অনেকেই এখানে আসেন। আর ভ্রমণ পিপাসু মানুষ আসেন ভূমিক্ষয়ের ফলে তৈরি প্রকৃতির শিল্পকর্ম দেখতে। শিলাবতীর তীরে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের মুহূর্তে গনগনির রূপ খুবই মোহময়ী। গড়বেতা স্টেশন থেকে যে রাস্তা হুমগড়ের দিকে গেছে, সেই পথে খানিক গিয়ে ডান দিকে গনগনি। বোর্ডে পথনির্দেশ দেওয়া। লাল মাটির রাস্তা পৌঁছে দিয়েছে চুয়াড় বিদ্রোহ খ্যাত গনগনির মাঠে।
advertisement
সামাজিক বনসৃজনের ফসল কাজু আর শাল-পলাশের বন দু’পাশে রেখে এখানে আসতে হবে। লম্বায় দেড় দু-কিলোমিটার। ল্যাটেরাইট শিলায় তৈরি এই ভূখণ্ড। যুগ যুগ ধরে চলেছে প্রকৃতির খেলা। এই গনগনিকে ঘিরে রয়েছে এই অঞ্চলের লোককাহিনি, রয়েছে ইতিহাস। এখানকার মানুষজনের মধ্যে লোকগাথা রয়েছে মহাভারতের বকরাক্ষসের কাহিনি। অজ্ঞাতবাসে থাকার সময় পঞ্চপাণ্ডব এখানে নাকি কিছু দিন কাটিয়েছিলেন। পাণ্ডবরা বনবাসে থাকাকালীন একদিন এসে পড়েছিলেন এই গনগনিতে। এই তল্লাটে তখন দাপিয়ে বেড়াত বকাসুর নামের রাক্ষস। অবশেষে ভীমের হাতেই বধ হয় বকাসুর। তাদের যুদ্ধের প্রতাপে এখানকার মাটি কেঁপে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, শিলাবতীর এই গিরিখাত আসলে বকরাক্ষস আর ভীমের মধ্যে যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়েছিল তার ফলেই তৈরি হয়েছে এমনই এখানকার লোকগাথা।
advertisement
কীভাবে যাবেন? 
সড়কপথে যদি আপনি পশ্চিমবঙ্গের গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের দিকে বেড়াতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে মেদিনীপুর শহর থেকে ৬০ নং জাতীয় সড়ক ধরে শালবনীর ওপর দিয়ে মনোরম শাল জঙ্গল দেখতে দেখতে সোজা চন্দ্রকোনা রোডের ওপর দিয়ে গড়বেতা শহরে পৌঁছবেন। ট্রেন পথে, মেদিনীপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে এক ঘণ্টার মধ্যে গড়বেতা। সেখান থেকে ২.১ কিমি গনগনি। বাসে করে, মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে করে গড়বেতা। সেখান থেকে ২.১ কিমি গনগনি। গনগনিতে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে পর্যটকদের সুবিধার্থে। তবে গনগনিতে খাওয়া দাওয়ার ভাল ব্যবস্থা নেই। সেখান থেকে মাত্র ২ কিমি দূরে গড়বেতা শহর। প্রয়োজনীয় সব জিনিসই পাওয়া যায় এখানেই।
advertisement
পার্থ মুখার্জী
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Summer Vacation Trip|| গরম তো থাকবেই, গ্রীষ্মের ছুটিতে তাও যেতেই পারেন 'বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন' গনগনি
Next Article
advertisement
'কেন Gen Z তাঁর কথা শুনবে...?' বিহারের যুবসমাজের উপর রাহুলের প্রভাব, নস্যাৎ করলেন প্রশান্ত কিশোর
'কেন Gen Z তাঁর কথা শুনবে...?' বিহারের যুবসমাজের উপর রাহুলের প্রভাব নস্যাৎ করলেন পিকে
  • 'যখন বিহারের মানুষই রাহুল গান্ধির কথা শুনছেন না, তখন Gen Z -রা কেন তার কথা শুনবেন?' বিহার নির্বাচনী আবহে রবিবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধিকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রশান্ত কিশোর

VIEW MORE
advertisement
advertisement