#পূর্ব মেদিনীপুর: শহুরে ব্যস্ততাময় জীবন থেকে কয়েকদিনের জন্য কে না চায় মুক্তি? সব ভুলে নিজেকে আপন করে ফিরে পেতে চাইলে এবং শহুরে কোলাহল ব্যস্ততাময় জীবন থেকে মুক্তি পেতে হলে ঘুরে আসুন কোলাঘাট রাইন গ্রাম থেকে। রূপনারায়ণ নদীর কোলে সবুজ প্রকৃতিতে মোড়া রাইন গ্রাম। প্রকৃতির শান্ত ছায়ায় খোলা আকাশে নিরিবিলি সময় কাটানোর আদর্শ জায়গা রাইন। কোলাঘাট ব্লকের উত্তরে অবস্থিত রাইন গ্রাম।
সকালে পাখির কলতানে আজও ঘুম ভাঙ্গে গ্রামের মানুষের। নেই শহুরে কোলাহল। খোলা আকাশ, সবুজ গাছগাছালি, উন্মুক্ত বাতাসে প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় ভাবে একাত্ম হওয়ার আদর্শ জায়গা এই রাইন গ্রাম। এই গ্রামে রয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। চাইলেই বৃদ্ধাশ্রমের প্রবীণদের সঙ্গে গড়ে তোলা যায় অপার আত্মীয়তা। শহুরে কোলাহল ভুলে সবুজে মোড়া প্রকৃতির সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে চাইলে কোলাঘাটের রাইন গ্রামে আসতেই হবে। পুজোর সময়েও যাঁরা ভিড় এড়াতে চান ঘুরে আসতে পারেন এই গ্রাম থেকে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রবেশ পথ কোলাঘাট। বয়ে যাওয়া রূপনারায়ণ নদ আলাদা করে রেখেছে পূর্ব মেদিনীপুর হাওড়া জেলাকে। পাশাপাশি এই দুই জেলাকে জুড়ে রেখেছে নদীর উপরের শরৎ সেতু। সেতুর নাম বাংলার বিখ্যাত সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম অনুসারে। কোলাঘাট ব্লকের বুক চিরে চলে গিয়েছে ছয় নম্বর জাতীয় সড়ক।
পূর্ব দক্ষিণ রেল লাইন কোলাঘাটকে জুড়ে রেখেছে। বয়ে যাওয়া রূপনারায়ণ নদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত কোলাঘাট রাইন গ্রাম। সময়ের নিয়মে মাটির কাঁচা বাড়ি পাকা হয়েছে। মাটির রাস্তা এখন কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া। কিন্তু রাইন গ্রামের গ্রাম্য পরিবেশ আজও বদলায়নি। সবুজ ধান ক্ষেত, সবুজ গাছগাছালি, খোলা আকাশ আর বিশুদ্ধ বাতাস। রূপনারায়ণ তীরবর্তী এলাকায় বন দফতরের লাগানো ঝাউ বনের ছায়ায় হারিয়ে যাওয়ার হাতছানি কোলাঘাট রাইন গ্রামকে করেছে অনন্য। বাংলার আর পাঁচটা গ্রামের থেকে রাইন তাই আলাদা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ফুল ও সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত কোলাঘাট। কোলাঘাট স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ফুলের বড় মার্কেট। রূপনারায়ণ তীরবর্তী হওয়ায় উর্বর দোআঁশ মাটিতে প্রতিটা মরশুমে ফুটে ওঠে হরেক রকম ফুল। বাদ যায় না রাইন গ্রাম। তাই শীতকালে রাইন গ্রাম সেজে ওঠে নানা রঙের ফুল সাজে। গ্রামে রয়েছে একটি প্রাচীন শিব মন্দির। সম্প্রতি তার সংস্কার হয়েছে। রয়েছে কালী মন্দির। ঘুরে আসতে পারেন দেবদেবীর ডাকের বা শোলার গহনা তৈরির মালাকার পাড়া থেকে। বংশ পরম্পরায় আজও একই পেশায় রয়েছে মালাকারেরা। যাদের তৈরি গহনা বড় বড় পুজো প্যান্ডেলের দুর্গা প্রতিমা সাজসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। রয়েছে সরকারি গ্রন্থাগার।
আরও পড়ুন-চেনা মিষ্টির অচেনা স্বাদ! আপেল রাবড়ির রেসিপির জেনে নিন পুজোর আগেই
কোলাঘাট প্রাচীন জায়গা। কোলাঘাটের উপর দিয়ে গিয়েছে জাতীয় সড়ক ও রেল লাইন। তাই কোলাঘাট সহজেই পৌঁছানো যায় বাসে বা ট্রেনে। কোলাঘাট বাস স্ট্যান্ড বা কোলাঘাট স্টেশন থেকে রাইন গ্রামের দূরত্ব বেশি নয়। কোলাঘাট বাস স্ট্যান্ড বা স্টেশন থেকে যোশাড় যাওয়ার রাস্তায় পড়ে রাইন গ্রাম। কোলাঘাট স্টেশন থেকে বা বাস স্ট্যান্ড থেকে টোটো বা অটোতে মাত্র কুড়ি মিনিটের রাস্তা। সহজেই ছোট গাড়ি করে আসা যায় রাইন গ্রামে। থাকা খাওয়ার জন্য খুব বেশি খরচা হয় না। কোলাঘাট অমর সেবা সংঘ রাইন গ্রামের বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনা করে। এই বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই রয়েছে আলাদা গেস্ট হাউস। থাকা-খাওয়া মিলিয়ে মাথা পিছু খরচ প্রতিদিন মাত্র ২৫০ - ৩৫০ টাকা। কোলাঘাট অমর সেবা সঙ্ঘের যোগাযোগ আগে থেকেই ফোনে করে নিতে হবে। যোগাযোগের ফোন নম্বর ৯৪৩২৩৫৪৮১৬।
সৈকত শী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Durga Puja 2021, Durga Puja Travel