রায়না : ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলকে (Businessman Sabyasachi Mandal) ঠিক কোথায় খুন করা হয়েছিল? দোতলায় নাকি নীচের তলায়? সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, রায়নার দারিয়াপুরের বাড়ির নীচের তলার পাশাপাশি রক্তের দাগ মিলেছে দোতলাতে এবং সিঁড়ির রেলিংয়েও।
নিহত সব্যসাচীর বন্ধু রাজবীর পুলিশকে জানিয়েছেন, রাতে বাড়ির ছাদে রান্না হচ্ছিল। নীচের তলা থেকে সব্যসাচীর চিৎকারে তিনি নেমে আসেন। তখন তিনি দেখেন দুষ্কৃতীরা ধারাল অস্ত্র দিয়ে সব্যসাচীকে কোপাচ্ছে। বাঁচাতে গিয়ে আহত হন তিনিও। দোতলায় যে রক্তের নমুনা পাওয়া গিয়েছে, সেটি তাঁরই। রাজবীরের দেহে ডানদিকে আঘাত ছিল। সব্যসাচীর বেশিরভাগ আঘাত ছিল বাঁদিকে।
এখন প্রশ্ন, সব্যসাচীকে নীচের তলায় খুন করা হলে সিঁড়ির বাঁদিকের রেলিংয়ে রক্তের দাগ এল কীভাবে? তদন্তে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন : সর্বস্ব খোয়ানোর আগে এখনই সাবধান হোন, যেভাবে ATM জালিয়াতি করছিল এই জামতারা গ্যাং!
রবিবার ঘটনাস্থলে যায় সিআইডির (CID) চার সদস্যের তদন্তকারী দল। তার পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা (Forensic Experts)। তাঁরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেন। ওপর তলার বা সিঁড়ির রক্ত সব্যসাচী না রাজবীরের, তা খতিয়ে দেখছে ফরেনসিক দল।
গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে এসে নৃশংসভাবে খুন হন ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার দেরিয়াপুর গ্রামে। ঘটনায় জখম হয়েছেন সব্যসাচীবাবুর নিরাপত্তারক্ষী রাজবীর সিং। কী কারণে খুন তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। তবে সব্যসাচীবাবুর বাবা দেবকুমার মণ্ডল রায়না থানায় লিখিত অভিযোগে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরেই সুপারি কিলার লাগিয়ে তাঁর ছেলেকে খুন করানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন : রোগিণীর সারা দেহে ফোস্কা ও যন্ত্রণা! সরকারি হাসপাতালে ৯ মাসের চিকিৎসায় সারল বিরল চর্মরোগ
তিনি পুলিশে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর ভাই গৌরহরি মণ্ডল, ভ্রাতৃবধূ পূর্ণিমা মণ্ডল, দুই ভাইপো দীনবন্ধু মণ্ডল ও সোমনাথ মণ্ডল চক্রান্ত করে সব্যসচীকে খুন করিয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনার সময় সব্যসাচীবাবুর সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাঁরাও এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন দেবকুমারবাবু।
তাঁদের হাওড়ার শিবপুরে বাড়ি রয়েছে। মাসখানেক আগে সেই বাড়িতেও হামলা করা হয়েছিল। বোমাবাজিও করা হয়। সব্যসাচীবাবুকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগও দায়ের করা হয়। গ্রেফতার হয়েছিল গৌরহরির ছেলে। সেই আক্রোশ থেকেই সব্যসাচীকে খুন করা হয়েছে দাবি করেন দেবকুমারবাবু।
পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সব্যসাচীবাবুর সঙ্গে থাকা রাজবীর, পার্থ সাঁতরা ও গাড়ির চালক আনন্দকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তারা ছাদে ছিল। নীচে আচমকা গুলির শব্দ হয়। নেমে এসে দেখেন ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে সব্যসাচীকে। বাধা দিলে রাজবীরকেও কোপ মারে দুষ্কৃতীরা। জখম অবস্থায় সব্যসাচীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।