ইচ্ছে থাকলে সব হয়! সামান্য জীবন বিমার কর্মী আজ সবার নয়নের মণি, কীভাবে হলেন? প্রশান্তের লড়াই অনুপ্রেরণা দেবে আপনাকেও
- Published by:Madhab Das
- hyperlocal
- Reported by:Saikat Shee
Last Updated:
"অন্ধজনে দেহ আলো" ছোটবেলায় আমরা সবাই পড়েছি। কিন্তু এই শব্দটাই নিজের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে নিয়েছেন এক ব্যক্তি। বহু মানুষের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়ে সবার নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন তিনি।
তমলুক, সৈকত শী: “অন্ধজনে দেহ আলো” ছোটবেলায় আমরা সবাই পড়েছি। কিন্তু এই শব্দটাই নিজের জীবনের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে নিয়েছেন এক ব্যক্তি। বহু মানুষের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়ে সবার নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন তিনি। নাম প্রশান্ত সামন্ত। পেশায় জীবন বিমার কর্মী। কিন্তু নেশা দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া। রীতিমতো সেই কাজে ধ্যানমগ্ন তিনি। দীর্ঘ ১৬ বছর এই কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তাই সমস্ত কাজ ফেলে দিয়ে, তমলুক থেকে কোলাঘাট। কোলাঘাট থেকে হলদিয়া সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কর্নিয়া দানের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেন।
সালটা ২০০৯, গ্রামেগঞ্জে তখনও চিকিৎসার স্বার্থে, দেহদান বা অঙ্গদান শব্দগুলি রীতিমতো অপরিচিত। আর সেই সময় থেকেই দৃষ্টিহীন ব্যক্তিদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই শুরু করেন প্রশান্ত বাবু। এ পর্যন্ত ১০০-রও বেশি মৃত ব্যক্তির কর্নিয়া সংগ্রহ করে আই ব্যাঙ্কে তুলে দিয়েছেন। তাঁর সংগ্রহ করা কর্নিয়া আই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রতিস্থাপিত হয়েছে বিনামূল্যে ২০০ বেশি মানুষের শরীরে। কোনও রকম অর্থের বিনিময়ে ছাড়াই প্রশান্ত সামন্ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে। আর তার পাশে দাঁড়িয়েছে জেলার অন্যতম চক্ষু হসপিটাল।
advertisement
advertisement
পূর্ব মেদিনীপুরের প্রশান্ত সামন্তের জীবনের লক্ষ্য অন্ধ জনের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়ে তাদের জীবন আলো করে তোলা। মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন চক্ষুদানের বিষয়ে রাজি থাকলেই সঙ্গে সঙ্গে আই ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সংগ্রহ করা হয় মৃত ব্যক্তির কর্নিয়া। এ বিষয়ে প্রশান্ত সামন্ত বলেন, ‘প্রথম প্রথম যখন মানুষকে বোঝাতাম চক্ষুদানের গুরুত্ব। বেশিরভাগ মৃতের পরিবার না বুঝে তাড়িয়ে দিত। এখনও অনেকেই চক্ষুদানের গুরুত্ব বুঝতে চায় না। এ পর্যন্ত একশোর বেশি মৃত মানুষের কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়েছে। যা প্রতিস্থাপিত হয়েছে দৃষ্টিহীন ব্যক্তিদের চোখে। যতদিন দৌড়াতে পারব চক্ষুদান নিয়ে এই আন্দোলন চালিয়ে যাব। এই আন্দোলনে পরিবারকে পাশে পেয়েছি। আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কেউ মারা গেলে তাদেরও কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়।’
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
প্রথম প্রথম বাড়ির চারপাশে এলাকায় কেউ মারা গেলে তার বাড়িতে হাজির হতেন, মৃত ব্যক্তি পরিবারের লোকজনদের চক্ষুদানের গুরুত্ব বোঝাতেন। কেউ বুঝত কেউ আবার না মাত্রই একপ্রকার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিত। কিন্তু তাতেও পিছপা হননি প্রশান্ত সামন্ত। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করে বেড়াচ্ছেন তিনি। তাঁর এই কাজে পাশে পেয়েছেন বহু শুভানুধ্যায়ী মানুষকে। বর্তমানে অশোক কুমার পাইক, সৌমেন গায়েন রবীন্দ্রনাথ কর ও অসীম দাস সহ বহু মানুষ আছেন যাদের পরিচিত পরিজন মারা গেলে খবর দেন প্রশান্ত সামন্তকে। বর্তমানে দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়ে বহু মানুষের নয়ন মণি হয়ে উঠেছেন তিনি।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Purba Medinipur,West Bengal
First Published :
October 08, 2025 11:20 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
ইচ্ছে থাকলে সব হয়! সামান্য জীবন বিমার কর্মী আজ সবার নয়নের মণি, কীভাবে হলেন? প্রশান্তের লড়াই অনুপ্রেরণা দেবে আপনাকেও