৯৬ থেকে শুরু, চলছে আজও! বর্ধমানের আজব সব গ্রাম, সবসময় আতঙ্কে থাকেন গ্রামবাসীরা! কেন জানেন
- Published by:Madhab Das
- hyperlocal
- Reported by:Bonoarilal Chowdhury
Last Updated:
আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামের মানুষের। কে কখন বাড়ি হারাবে এই আশঙ্কায় দিন কাটছে বহু মানুষের। ১৯৯৬ সালের পর থেকেই সেই আতঙ্ক।
কাটোয়া: পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া-২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রাম আজ ভাগীরথী নদীর অপ্রতিরোধ্য ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে। চর বিষ্ণুপুর, চর কবিরাজপুর, চর কালিকাপুর, চর সাহাপুর গ্রামগুলিতে পৌঁছানোর একমাত্র সহজ মাধ্যম নৌকা। বৃষ্টির কারণে যখন জলের উচ্চতা বেড়ে যায়, তখন গোটা গ্রাম যেন দ্বীপে পরিণত হয়! আর সেই গ্রামগুলোই এখন নদীর গর্ভে যেন ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি আবারও শুরু হয়েছে চর বিষ্ণুপুর ও চর কবিরাজপুরে নদীবাঁধ ভাঙন। প্রতিদিনই যেন নদী গিলে নিচ্ছে পাড়ের মাটি, উপড়ে পড়ছে গাছ। আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামের মানুষের। কে কখন বাড়ি হারাবে এই আশঙ্কায় দিন কাটছে বহু মানুষের। চর কবিরাজপুরের বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন সরকার বলেন, “বর্ষার সময় আমাদের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ঠিকমত ঘাট নেই। ভাঙনের যা অবস্থা আমার মনে হয় ২০/৫০ টা পরিবারকে কিছুদিনের মধ্যেই উঠে যেতে হবে। এমনিতেই পূর্ব বর্ধমানের প্রায় ১০০ বিঘা জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। ব্যবস্থা না নিলে গ্রামের কোনও অস্তিত্বই থাকবে না।”
চর বিষ্ণুপুরের বাসিন্দারা জানান, ১৯৯৬ সালের ভয়াবহ বন্যার পর ভাগীরথীর গতিপথ বদলাতে শুরু করে। তারপর থেকেই চর বিষ্ণুপুর ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে। ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়ায় একে একে গ্রামের দুর্গা দালান, কালী মন্দির, প্রাথমিক বিদ্যালয়, ক্লাব ঘর, খেলার মাঠ, বহু বসতভিটে ও চাষের জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যেখানে এক সময় প্রায় হাজারো মানুষের বাস ছিল, আজ সেখানে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার কোনও মতে টিকে আছে। এখনও চর বিষ্ণুপুরে চার-পাঁচটি ঘরের বাসিন্দা রয়েছেন, যাদের শেষ সম্বল ছিল চাষের জমি, সেটাও এখন নদী গর্ভে চলে যাওয়ার মুখে। চর কবিরাজপুরের বাসিন্দা মনোরঞ্জন সরকার বলেন, “আমাদের রাতে ঘুম হয় না। গ্রামে অর্ধেক লোকের বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় চলে গিয়েছেন। গ্রামের যা লোক আছে তার অর্ধেক সম্পত্তি নদীগর্ভে। এইভাবে চলতে থাকলে গ্রামই থাকবে না।”
advertisement
advertisement
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে যে কাজ করা হয়েছে, তা একেবারেই দায়সারা। যেখানে কার্যকরভাবে বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন ছিল, সেখানে শুধু কয়েকটি বালির বস্তা ফেলে প্রকল্প শেষ দেখানো হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না নিলে, খুব শীঘ্রই গ্রামের আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য নিতাইসুন্দর মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগেও ব্যাপকভাবে ভাঙন হয়েছিল কিন্তু আমাদের সরকারের প্রচেষ্টায় সেটা বন্ধ করতে পেরেছি। নতুন করে আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা সরেজমিনে সবটা দেখে সেচ দফতরে জানিয়েছি।”
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গ্রামের মানুষজন আজ যেন শুধু টিকে থাকার লড়াই লড়ছেন। তাদের চোখে ঘুম নেই, মনে শান্তি নেই! আছে শুধু একটাই প্রশ্ন, সকালে ঘরটা থাকবে তো? বর্ষায় আতঙ্ক আরও গ্রাস করেছে তাঁদের। যদিও সম্প্রতি কাটোয়ার এসডিপিওর নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী গ্রামে ঘুরে গ্রামের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে এসেছেন।
advertisement
বনোয়ারীলাল চৌধুরী
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata [Calcutta],Kolkata,West Bengal
First Published :
August 04, 2025 10:01 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
৯৬ থেকে শুরু, চলছে আজও! বর্ধমানের আজব সব গ্রাম, সবসময় আতঙ্কে থাকেন গ্রামবাসীরা! কেন জানেন