বহু স্মৃতি বিজড়িত পুষ্করিণী, হঠাৎই বদলে গেল নাম, কী বলছে সকলে!

Last Updated:

পুকুরের নামে আর থাকবে না মৃত্যুর ছায়া, তবে ইতিহাস তো থাকবে সঙ্গী...

#বর্ধমান: রাজ আমলে যারা দস্যুবৃত্তির সাথে যুক্ত ছিল বা যারা অপরাধমূলক কাজ করত তাদের বর্ধমান রাজ কর্তৃক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দানের জন্যই রাজবাড়ির অদূরে তৈরী করা হয় শূল এবং তাকে কেন্দ্র করে তৈরী করা হয় পুষ্করিণী। যা পরবর্তীতে শূলিপুকুর নামে পরিচিতি লাভ করে।বর্ধমান রাজ আমলে এই শূল ও পুষ্করিণী তৈরী করা হলেও ঠিক কোন রাজার আমলে এটি তৈরি হয় তা জানা যায়নি।তবে ১৯৭০ এর দশকেও পুকুরের মাঝে শূলটি দেখা যেত।
রাজ আমলে প্রতিষ্ঠিত এই শূলিপুকুরের নাম  দীর্ঘ কয়েক বছর পর অবশেষে আগামী ৩০ জুলাই পরিবর্তন হতে চলেছে বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের হাত ধরে। ৩০ জুলাই নবরূপে ওই পুকুরের সৌন্দর্য্যায়নের উদ্বোধন করবেন বিডিএ-র চেয়ারম্যান রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। শূলিপুকুরের নাম পরিবর্তন হয়ে নতুন নামকরণ হচ্ছে জীবন সায়র। রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকায় ও বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের তত্ত্বাবধানে প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নবরুপে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বর্ধমানরাজ ইতিহাসের সাথে যুক্ত শূলিপুকুরকে।
advertisement
রবিরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, শূলিপুকুর নামটি স্থূল শব্দ। এই নামের মধ্যে দিয়েই মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখিত হয়। তাই রাজ আমলের কৃষ্ণসায়র, শ্যামসায়রের নামানুসারেই নতুন করে এই পুকুরের নামকরণ করা হয়েছে জীবন সায়র। মৃত্যুর ঠিক বিপরীত। বিডিএ-র উদ্যোগে এই শূলিপুকুরের সংস্কার এবং তার সৌন্দর্য্যায়ন ঘটাতে গিয়ে তাঁরা জানতে পেরেছেন প্রায় ২০০ বছর এই পুকুর সংস্কার করা হয়নি। পুকুরে কচুরীপানা গজিয়ে যাওয়ায় পানার ওপর দিয়ে হেঁটে এপার ওপার করা যেত। যদিও পুকুরের গভীরতা অনেক বেশি।  পুকুরের ৪দিকের মধ্যে বর্তমানে দুদিকে বসতি থাকায় কিছুটা সৌন্দর্য্যায়নে সমস্যা হয়েছে। এব্যাপারে তাঁরা আলোচনা চালাচ্ছেন। বাকি দুটি পাড়ে পাম গাছ লাগানো হয়েছে। এছাড়াও ঐতিহ্য মেনে পুকুরে ৪টি রাজহাঁস ছাড়া হচ্ছে যা সাধারণ মানুষকে আনন্দ দেবে। আস্তে আস্তে গোটা পুকুরে আরও কিছু নতুনত্ব আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
advertisement
advertisement
বর্ধমানের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ড. সর্বজিত যশ জানিয়েছেন, কবে বা কোন্ রাজার আমলে এই শূলিপুকুর প্রতিষ্ঠিত হয় তা জানা যায়নি। এমনকি এই পুকুরে যে শূলে কাউকে চড়ানো হয়েছে এমন ইতিহাসও মেলে না। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৭০-এর দশকেও এই পুকুরের মাঝে শূলটি দেখতে পাওয়া যেত। তিনি জানিয়েছেন, মানুষকে অপরাধের ভয়াবহতা বোঝাতে এবং অপরাধ থেকে দূরে রাখতেই এই শূল প্রতিষ্ঠা করা হয়ে থাকতে পারে। রাজ আমলে এই পুকুরের পাড়ে ছিল ঘোড়ার আস্তাবল। ঘোড়ারা এই পুকুরে জল খেত। তিনি জানিয়েছেন, শূলিপুকুর নামকরণের মধ্যে দিয়ে একটা নির্মমতা প্রকাশ পেত। তারবদলে জীবন সায়র নামটি অত্যন্ত যথাযথ।এর মাধ্যমে ইতিহাস মুছে যাবে না। কারণ মানুষের কাছে ইতিহাস থেকেই যায়। নতুন নামকরণের পরও তা মুছে না - তার প্রমাণ দমদম বিমান বন্দর থেকে মেট্রো ষ্টেশনের নামকরণ।
advertisement
বর্ধমানের প্রবীণ নাগরিকেরাও মনে করেন রাজআমলে প্রতিষ্ঠিত এই শূলিপুকুরের সাথে ইতিহাস জড়িয়ে আছে।আছে নানান গল্প কাহিনী তাই এর নাম বদল হলেও শহরবাসীর কাছে তা শূলিপুকুর নামেই পরিচিত পাবে। ইতিহাস সহজে মুছে যায় না।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে চাইছে বর্তমান সরকার- বলছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। নাম পরিবর্তন বিজেপির মজ্জাগত- বলছে তৃনমূল নেতৃত্ব।
advertisement
Saradindu Ghosh
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
বহু স্মৃতি বিজড়িত পুষ্করিণী, হঠাৎই বদলে গেল নাম, কী বলছে সকলে!
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement