পরীক্ষা হবে কী করে? আমফানে ভেসে গিয়েছে বই, অন্ধকারে ডুবেছে রিঙ্কিদের স্বপ্ন
- Published by:Uddalak Bhattacharya
Last Updated:
খাবার নেই। বাসস্থান নেই। বই খাতা, পড়াশোনা, অনেক দূরের কথা। এখন কেউ নদীর বাঁধে কেউ রাস্তার উপর, উঁচু জায়গায় জীবনযাপন করছেন।
#হাসনাবাদ: রাত্রি তখন আটটা। আমাদের গাড়ি হাসনাবাদের সেতু পেরিয়ে সামান্য এগিয়ে, ডান দিকের একটি সরু পিচের রাস্তা ধরল। ওই পিচের রাস্তা ধরে এগোলে প্রথমে পরে খাঁ পুকুর, ঘুনী ,পশ্চিম ঘুনী, টিয়া মারী নামের গ্রামগুলি। এই গ্রামগুলির পাশ দিয়ে ডাসান নদী বয়ে গেছে। ২০ শে মে আমফানের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর, ওই দিনই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে চক পাটলি পঞ্চায়েত এলাকা জলের তলায় চলে যায়। যা এখনও বর্তমান। গ্রামের পিচের রাস্তা। ঘুটঘুটে অন্ধকার। রাস্তায় লোকজন দেখা যাচ্ছে না। এমন সময় আমাদের গাড়ির আলো গিয়ে পড়ল কতগুলি কালো ত্রিপলের ছাউনি দেয়া কুঁড়ের দিকে। থমকে দাঁড়ালো আমাদের গাড়ি। কোথাও লম্ফ জ্বলছে, আবার কোথাও হ্যারিকেন। আলোর শিখার ওপর দিয়ে মুখটা বাড়িয়ে সজল জ্বলজ্বলে চোখগুলো আমাদের চেনার চেষ্টা করছিল। গাড়ি থেকে নেমে সামনে দঁাড়ালাম। বাটিতে কিছুটা মুড়ি আর ভেলি গুড় নিয়ে আনমনে চিবোচ্ছেন বৃদ্ধা।
জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আপনারা রাস্তায় কেন আছেন?’ উত্তর খুব স্বাভাবিক। ‘এখানে থাকবু নি তো বাবা, কোথায় থাকবো? আমাদের কী আর কোথাও যাওয়ার জায়গা আছে? ভোটের সময় নেতা আসে, এখন কারো মুখ দেখি না!’ পাশে বসে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থী রিঙ্কি মন্ডল। বইখাতা গুলো কোন প্রকারে বাঁচিয়ে বান্ধবীর বাড়িতে রেখে এসেছিল। দু’দিন আগেও ঘরের মধ্যে এক কোমর জল ছিল। চাল ডাল সবই জলে ভেসে গেছে। এখন দিনে দু’বেলা ঠিকমতো খাবার জোটে না। পড়াশুনা তো শিকেয় উঠেছে। জুলাই মাসে আবার তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা হবে। কিন্তু পড়ার মতো সুযোগ নেই। শুধুই রিঙ্কি নয় লকডাউনে যেমন ভাবে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়েছে। তেমনই পড়ার পাট চুকিয়েছে বহু ছেলেমেয়েরা। তবে না পড়লেও বাড়িতে বইখাতাগুলো ছিল। আমফানের ঝড় এবং জলে তা সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
advertisement
খাবার নেই। বাসস্থান নেই। বই খাতা, পড়াশোনা, অনেক দূরের কথা। এখন কেউ নদীর বাঁধে কেউ রাস্তার উপর, উঁচু জায়গায় জীবনযাপন করছেন। সরকারি প্রচুর জনগণের সাথী প্রকল্প হয়েছে এ রাজ্যে। ১৫ দিনে দুর্গত এলাকার মানুষেরা দেখেছে, সেইসব বিজ্ঞাপনের সাথী প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে ওই গ্রামগুলোতে। নেতারা দিনের পর দিন সরকারি প্রকল্পের টাকা চুরি করছে এবং তছরুপ করছে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এই অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছিলাম উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে। তিনি বিষয়টিকে এড়িয়ে যাবার ছলে বলেছেন, ‘এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি পেলে তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা নেব।’
advertisement
advertisement
SHANKU SANTRA
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
June 04, 2020 10:58 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
পরীক্ষা হবে কী করে? আমফানে ভেসে গিয়েছে বই, অন্ধকারে ডুবেছে রিঙ্কিদের স্বপ্ন