পূর্ব মেদিনীপুর: বিয়ের জন্য শাঁখা পরতে গিয়ে বিপত্তি। বিয়ে ভাঙল এক কনের। বিয়ের প্রস্তুতি সারা। কয়েক ঘন্টার মধ্যে নতুন পরিচয়ে আবদ্ধ হবে যুবতী। কিন্তু বিয়ের জন্য শাঁখা পরতে গিয়ে শঙ্খ ভান্ডার দোকানে যেতেই যত বিপত্তি। শ্বশুরবাড়ির বদলে হোমে যেত হল বিয়ের কনেকে। মহিষাদল গেঁওখালি এক হোটেলের পাশে শঙ্খ ভান্ডার দোকানে লক্ষ্যা গার্লস হাইস্কুলের এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শম্পা পাত্রকে তাঁর বাবা চন্দন পাত্র, মা ও মাসিম সহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন মিলে বিয়ে দেওয়ার জন্য শাঁখা পরাতে যান। সেই সময় ওই দোকানে মহিষাদল ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক সুজন দাস উপস্থিত ছিলেন। তিনি সেই সময় গল্পের ছলে কনের বয়স জানতে পারে। ঘটনার কথা তৎক্ষণাৎ মহিষাদল ব্লকের বিডিও যোগেশ চন্দ্র মন্ডল কে ফোনে জানান। বিডিও মহিষাদল থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন গোস্বামীকে ঘটনার তথ্য জানান। মহিষাদল থানার পুলিশ প্রশাসন দোকানে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে থানায় নিয়ে যান। স্কুলছাত্রী শম্পা পাত্রের বয়স এখনও ১৮ বছর হয়নি। লক্ষ্যা গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী ত্রিপাঠী বলেন, শম্পা পাত্র আমাদের স্কুলের ছাত্রী। এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পড়াশোনায় আগ্রহী। বাড়ির চাপে হয়ত বিয়ে করতে রাজী হয়।'
জানা যায় মহিষাদল ব্লকের চক দ্বারিবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রণয় পালের সঙ্গে শম্পার বিয়ের ঠিক হয়েছিল। বিয়ের সমস্ত বন্দোবস্ত সারা। বিয়ের হওয়ার ছিল পাশের নন্দকুমার ব্লকের ঝিঙ্গলেশ্বরী মন্দিরে বলে জানান শম্পার বাবা চন্দন পাত্র। মহিষাদল ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক সুজন দাস জানিয়েছেন, 'POCSO আইনে মেয়ের বাবা, মা, মাসিমা ও গাড়ির ড্রাইভারকে মহিষাদল থানার পুলিশ প্রশাসন আটক করেছে।'
আরও পড়ুনঃ শিকার উৎসবে বন্যপ্রাণ বাঁচাতে তৎপর বনদপ্তর
নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ের ঘটনায় মহিষাদল থানায় উপস্থিত ছিলেন মহিষাদল ব্লকের জয়েন্ট বিডিও বনমালী হালদার, ভারপ্রাপ্ত ব্লকের সমাজ কল্যাণ আধিকারিক দেবব্রত বিশ্বাস ও ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (C.D.P.O) সুজন দাস প্রমূখ। তবে শুধু এই ঘটনা নয়, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নাবালিকা বিয়ের পরিসংখ্যান আতঙ্কে উঠার মত। জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকে নাবালিকা বিয়ে খবর শিরোনামে। ন্যাশনাল ফ্যামিলি এন্ড হেলথ সার্ভের (N.F.H.S) রিপোর্ট অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নাবালিকা বিয়ে সব চেয়ে বেশি।
আরও পড়ুনঃ বয়স একটা সংখ্যা মাত্র! ১০২ বছর বয়সেও সবকিছুতেই সাবলীল এক বৃদ্ধ
জেলা জুড়ে নাবালিকার বিয়ে নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে শিক্ষামহল। এক শিক্ষক জানিয়েছেন, 'পূর্ব মেদিনীপুর জেলা অন্যান্য জেলার থেকে পড়াশোনায় অনেক এগিয়ে, সেই জেলা নাবালিকা বিয়েতে প্রথমসারিতে যা লজ্জার।' জেলা জুড়ে নাবালিকা বিয়ে রুখতে তৎপর প্রশাসন। ব্লকে ব্লকে প্রশাসন নাবালিকা বিয়ে রুখতে সচেষ্ট হয়েছে।সম্প্রতি তমলুক ও নন্দকুমার ব্লকের বিডিওর তৎপরতায় দুই নাবালিকার বিয়ে রুখে দেয়।
Saikat Sheeনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mahishadal, Purba medinipur