#পূর্ব বর্ধমান: সাপের কথা শুনলেই ভয়ে শরীর কাপতে থাকে অনেকেরই। তা আবার যদি হয় বিষধর সাপ। তবে সাপের সঙ্গে সহবস্থান গ্রামের বাসিন্দাদের। শুধু বাস করাই নয় দেবী জ্ঞানে পুজিত হন বিষধর কেউটে। মঙ্গলকোটের মুশারু, পলসোনা ও ছোট পোসলা, এবং ভাতারের বড় পোসলা গ্রামে বিষধর সাপ পুজিত হয় 'ঝঙ্কেশ্বরী' নামে। কারও কাছে আবার পরিচিতি ‘ঝাঁকলাই’ নামে। বংশ পরম্পরায় প্রতি বছর তাকেই দেবীজ্ঞানে পুজো করে আসছেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ও মঙ্গলকোটের চারটি গ্রামের বাসিন্দারা। যদিও আগে সাতটি গ্রাম মিলিয়ে পুজো হত।
এ বছরও মহা ধুমধামে শ্রাবণ মাসে পুজো হল ঝাঁকলাইয়ের। জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোটের মুশারু, পলসোনা ও ছোট পোসলা, এবং ভাতারের বড় পোসলা গ্রামে মায়ের দেখা মেলে। পুজোর দিন 'ঝাঁকলাই'- এর দেখা মেলে মন্দিরে। প্রায় ৫০০ বছর ধরে চলে আসছে এই পুজো। ধীরে ধীরে এই পুজো এক বিশাল দর্শনীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফের তুমুল বৃষ্টির পূর্বাভাস রাজ্যে, সপ্তাহান্তে কেমন থাকবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া? জানুন...
লোকমুখে শোনা যায়, এই পুজো শুরু করেছিলেন এখানকার কোনও এক রাজা। তিনি নাকি স্বপ্নাদেশ পেয়ে খুনগড়ের মাঠে প্রথম এই পুজো শুরু করেন। এই দেবীকে নিয়েও নানা জনশ্রুতি রয়েছে। আবার অনেকে বলেন দ্বাপরে কৃষ্ণ যে কালীয় নাগকে দমন করেছিলেন সেই নাগই এই 'ঝঙ্কেশ্বরী'। কেউ কেউ বলেন, মনসামঙ্গল’ কাব্যে বাসররাতে লখিন্দরকে যে কালনাগিনী দংশন করেছিল বেহুলার অভিশাপে সেই কালনাগিনীই বিষহীন অবস্থায় বংশবিস্তার করে এই গ্রামগুলিতে অবতরণ করছে।
গ্রামবাসীরা বলেন, সারাবছরই দেবী 'ঝঙ্কেশ্বরী' অবাধ বিচরণ করেন তাঁদের ঘরে। কখনও কারোকে কামড়ায়নি। আর যদি কখনও কামড়েও দেয় তা দেবীর 'প্রসাদ' হিসেবে মনে করা হয়। 'ঝাঁকলাই' কামড়ালে 'ঝঙ্কেশ্বরী' মন্দিরের মাটি খতস্থানে দিয়ে দিলেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় না। পুজোর দিন 'ঝঙ্কেশ্বরী' মন্দিরে আসেন স্বয়ং 'ঝাঁকলাই' পুজো নেন পুরোহিতদের হাতে। প্রথমেই একটি সাপকে দুধ, ফুল দিয়ে পুজো করা হয়। সেই পুজো দেখতে ঢল নামে গ্রামবাসীদের।
Malobika Biswasনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: East Bardhaman