#শিলিগুড়ি: ফের শিলিগুড়ির লোকালয়ে লেপার্ড! কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় যখন গতকাল থেকে কড়া লকডাউন শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে, সেই সময়ে জনবসতিতে লেপার্ডের হানা। দিনভর আতঙ্কে কাটালেন স্থানীয়রা। শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৬ নং ওয়ার্ডের সমরনগরের ঘটনা। সকাল তখন সাড়ে ১০টা, স্থানীয় এক বাসিন্দা বাড়ির ময়লা পাশের ফাঁকা জায়গায় ফেলতে গেলেই আঁতকে ওঠেন। আচমকা তার মুখে থাবা বসায় লেপার্ড। লেপার্ডের হানায় জখম হয় আরো ২ জন। আহতদের চিৎকারে মূহূর্তে ভিড় জমে যায়। সকলেরই চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। এক্কেবারে পাড়ায় লেপার্ড! স্থানীয়দের কিছুতেই যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না নিজেদের চোখকে। শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। লেপার্ডটি তখন এক বাড়ি ছেড়ে অন্য বাড়িতে আস্তানা নেয়। বহুতল বাড়িতে ঢুকে পড়ে লেপার্ডটি। তখন বাড়ির লোকেরা কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েন। কেউ অন্য ঘরে নিজেদের বন্দি রাখেন। কেউ আবার ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান।
খবর পেয়েই লেপার্ডকে দেখতে কৌতুহলী জনতার উপচে পড়া ভিড় নামে সমরনগরে। কোথায় কোভিড বিধি? কোথায় মুখে মাস্ক? সব ভুলে লেপার্ড দেখতে থিক থিক ভিড় নামে। বাড়ির মধ্যে তখন হাড়হিম অবস্থা বাসিন্দাদের। খবর যায় বন দফতরের কাছে। সুকনা বন্যপ্রাণ শাখার বন কর্মীরা ছুটে আসেন। চলে অপারেশন। বহুতলে বন্দি লেপার্ডকে বাগে আনতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় বন কর্মীদের। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে লেপার্ডকে বাগে আনার পালা। প্রথমে লেপার্ডটিকে ট্রেস করা হয়। দেখা যায় সিঁড়ির মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে লেপার্ড।
ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে কাবু করা হয় লেপার্ডটিকে। তারপর বন কর্মীরা ঘরে ঢুকে লেপার্ডটিকে জালবন্দি করে এবং শেষে বাইরে বের করে আনেন। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে লেপার্ডটির চিকিৎসা করানো হবে। তারপর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। কোথা থেকে এল লেপার্ড? একদিকে মহানন্দা অভয়ারণ্য, অন্যদিকে বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল। লকডাউনের জেরে চারপাশ শুনশান।
রসদের সন্ধানে সম্ভবত গতকাল রাতেই লেপার্ডটি চলে আসে সমরনগরে। ভোরের আলো ফোটার আগে জঙ্গলে আর ফিরতে পারেনি। লোকালয়েই আটকে পড়ে সে। এবারই প্রথম নয়, এর আগেও শহর শিলিগুড়ির লোকালয়ে লেপার্ড ঢুকে পড়েছিল। এমনকী, গত বছরে লকডাউনে হাতির পালও ঢুকে পড়েছিল। শেষমেশ আজ লেপার্ডটিকে জালবন্দি করে বনকর্মীরা। তবুও আতঙ্ক কাটেনি সমরনগরে। অন্যদিকে জখম তিন ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে বেসরকারি হাসপাতালে।
Partha Pratim Sarkar
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।