#মালদহ : মালদহ জেলা পরিষদের (Malda Jela Parishad) সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করল তৃণমূল (Trinamul Congress)। বিজেপিতে যোগ দেওয়া মালদহের জেলা সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মন্ডলের (Gaur Chandra Mandal) অপসারণ চেয়ে অনাস্থা পেশ করা হয়েছে মালদহের বিভাগীয় কমিশনারের অফিসে। একসঙ্গে আরও তিন জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব জমা করা হয়েছে।
৩৭ সদস্যের জেলা পরিষদে অনাস্থার পক্ষে সই করেছেন ২৩ জন সদস্য। যদিও বিজেপির সভাধিপতি ও জেলা নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, আস্থা প্রমানের সময় এলে তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবেন। বিধানসভা ভোটের আগে মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ একাধিক তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে মালদহ জেলা পরিষদ দখলের দাবি করা হয়েছিল বিজেপির তরফ থেকে।
কিন্ত, ভোট মিটতেই এখন উলটপুরান। গেরুয়া শিবিরে যাওয়া অনেকেই তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনে আগ্রহী। বেশ কয়েকজন আবার ইতিমধ্যেই তৃণমূলে ফিরেছেন। এই অবস্থায় মালদহ জেলা পরিষদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিধানসভা ভোটের পর থেকেই শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। শেষপর্যন্ত প্রত্যাশামতোই আজ সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যরা। রাজ্য নেতৃত্ত্বের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর থেকেই অনাস্থা জন্য শুরু হয়েছিল তৃণমূলের তৎপরতা।
আজ দুপুরে মালদহ জেলা পরিষদের ২৩ জন নির্বাচিত সদস্য জেলা তৃণমূল ভবনে দলের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূরের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপরেই একসঙ্গে মালদহের বিভাগীয় কমিশনারের অফিসে গিয়ে লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন তাঁরা। জেলা সভাধিপতির পাশাপাশি অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সরলা মুর্মু, বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ পিংকি মাহাতো এবং জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পায়েল খাতুন এর বিরুদ্ধে। বিজেপি যোগ থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধেও অনাস্থা এনেছে তৃণমূল। জেলা সভাধিপতি এবং ওই তিন কর্মাধ্যক্ষের অপসারণ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি জেলা তৃণমূল সভাপতি মৌসম বেনজির নূরের (Mausam Beajir Noor)।
As per State Leadership's instructions AITC members of Malda ZP submitted No confidence against Sabhadipati Gour Ch Mondal who had defected to BJP prior d elections. Requirement is 19 of 37 members, whereas 23 membrs hv signed and submitted the application to Div Com Malda.
— Mausam Noor | মৌসম নুর (@MausamNoor) June 17, 2021
মালদহ জেলা পরিষদে মোট আসন রয়েছে ৩৮। এরমধ্যে ভোট হয়েছিল ৩৭ টি আসনে। জেলা পরিষদের ম্যাজিক ফিগার ১৮। ২০১৮ নির্বাচনে ২৯ টি আসনে জিতে এককভাবে জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। বিজেপি জেতে ছয়টি আসনে, কংগ্রেস জেতে দুটি আসনে। কংগ্রেসের একজন সদস্য তৃণমূলে যোগদান করায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০। বিজেপির দাবি ছিল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ ১৫ জন সদস্য বিজেপিতে যোগদান করায় বিজেপি মালদহ জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ।
কিন্ত, বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে ভাঙন ধরে বিজেপিতে। বিজেপির জেতা ছয় নির্বাচিত সদস্যের মধ্যে দুইজন তৃণমূলে যোগদান করেন। আবার বিধানসভা ভোটের পর বিজেপিতে যোগ দেওয়া বেশ কয়েকজন ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে দাবি করে তৃণমূল শিবিরে ফিরেছেন। এই অবস্থায়, বৃহস্পতিবার ২৩ জন সদস্যকে নিজেদের পক্ষে সই করিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি আরো জোরদার করেছে তৃণমূল।
যদিও বিজেপি জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডলের দাবি জোর করে ভয় দেখিয়ে অনেককে সই করানো হয়েছে। অনাস্থা প্রস্তাবের সই করা এমন কয়েকজন বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন। সময় এলেই তার প্রমাণ হয়ে যাবে।এদিকে মালদহ জেলা পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এখনও নিজের দাবিতে অনড় মালদহের জেলা সভাধিপতি গোবিন্দচন্দ্র মন্ডল। তিনি এদিন বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সদস্যরা অনাস্থা আনতেই পারেন। সময় এলে সব প্রমাণ হয়ে যাবে। তবে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ হলেও ভোটাভুটি বা অপসারণ প্রক্রিয়া এখনো অনিশ্চিত। কারণ, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ১৬ জুন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতির বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক ইতিমধ্যেই স্থগিত হয়ে গিয়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।