AI171 Crash: বিমান উড়ল, ৩২ সেকেন্ডে ভেঙে পড়ল! প্লেন দুর্ঘটনা নিয়ে 'শেষ মিনিটের রিপোর্ট'
- Published by:Suman Majumder
- news18 bangla
Last Updated:
Ahmedabad Plane Crash Report- এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)-এর প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরেও আহমেদাবাদ এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে নতুন নতুন থিয়োরি উঠে আসছে।
কলকাতা: এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)-এর প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরেও আহমেদাবাদ এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে নতুন নতুন থিয়োরি উঠে আসছে। বিশেষ করে বিদেশি মিডিয়া এই দুর্ঘটনাকে ঘিরে নিজস্ব ন্যারেটিভ তৈরি করতে ব্যস্ত। এই দুর্ঘটনার দোষ পুরোপুরি পাইলটের ঘাড়ে চাপাতে যেন মরিয়া তাঁরা!
AAIB ইতিমধ্যেই ১২ জুন, ২০২৫-এ আহমেদাবাদ এয়ারপোর্টে কী ঘটেছিল, তার পুরো বিবরণ দিয়ে দিয়েছে। AAIB রিপোর্ট অনুযায়ী, দুর্ঘটনাগ্রস্ত প্লেনের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিল VT-ANB। এই প্লেনটি প্রথমে AI423 ফ্লাইট নম্বরে দিল্লি থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত উড়েছিল। সকাল ১১:১৭ মিনিটে আহমেদাবাদে ল্যান্ড করার পর প্লেনটি বে নম্বর ৩৪-তে পার্ক করা হয়।
দিল্লি থেকে আসা ক্রু টেকনিক্যাল সমস্যার কথা উল্লেখ করে টেকলগে ‘STAB POS XDCR’ স্টেটাস মেসেজ লিখে রাখে। এয়ার ইন্ডিয়ার ডিউটিতে থাকা এয়ারক্রাফ্ট মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার (AME) সমস্যা অনুযায়ী পরীক্ষা করেন। দুপুর ১২:১০-এ বিমানটিকে ফ্লাই করার জন্য উপযুক্ত ঘোষণা করেন তিনিই।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন- ল্যান্ডিংয়ের সময় বিপত্তি! মুম্বইয়ে নামার সময় রানওয়েতে পিছলে গেল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান
এর পরের গন্তব্য ছিল গ্যাটউইক, ফ্লাইট নম্বর AI171। এই বিমানটি এর পর AI171 ফ্লাইট নম্বরে আহমেদাবাদ থেকে গ্যাটউইকের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা ছিল, যার নির্ধারিত সময় ছিল দুপুর ১:১০। বিমানে মোট ২৩০ জন যাত্রী ছিলেন, যার মধ্যে ১৫ জন বিজনেস ক্লাস এবং ২১৫ জন ইকোনমি ক্লাসের। যাত্রীদের মধ্যে ২টি নবজাতক শিশুও ছিল।
advertisement
বিমানে ছিল ৫৪,২০০ কেজি জ্বালানি। টেক-অফ-এর সময় ওজন ছিল ২১৩,৪০১ কেজি, যা সর্বোচ্চ অনুমোদিত ওজন ২১৮,১৮৩ কেজির চেয়ে কম ছিল। বিমানটিতে কোনও বিপজ্জনক সামগ্রী ছিল না।
এখন প্রশ্ন হল, সেদিন ককপিটে কী ঘটেছিল সেই মুহূর্তে? ফ্লাইট AI171-এ ছিলেন ২ জন পাইলট ও ১০ জন কেবিন ক্রু।
ক্যাপ্টেনের ছিল এয়ারলাইন ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্স (ATPL) এবং সহ-পাইলটের ছিল কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (CPL)।
advertisement
দুজন পাইলটই ছিলেন মুম্বইয়ের বাসিন্দা এবং তাঁরা একদিন আগেই আহমেদাবাদ পৌঁছেছিলেন, তাই পর্যাপ্ত বিশ্রামও পেয়েছিলেন।
ওই ফ্লাইটে সহ-পাইলট বিমান চালাচ্ছিলেন এবং ক্যাপ্টেন ছিলেন পাইলট মনিটরিং, অর্থাৎ তিনি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। দুপুর ১১:৫৫-এ ক্রু সদস্যরা প্রি-ফ্লাইট ব্রেথ অ্যানালাইজার টেস্ট করেন। তার পর বিমান উড়ানের জন্য উপযুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুপুর ১২:৩৫ মিনিটে ক্রু সদস্যরা বোর্ডিং গেটে পৌঁছন।
advertisement
টেকঅফের ঠিক পরেই কীভাবে ঘটল বিভ্রাট? বিমানটি বেলা ১:১৮-এ বেই নম্বর ৩৪ থেকে ট্যাক্সি বেরোয়। ১:২৫-এ ক্লিয়ারেন্স মেলে এবং ১:২৬-এ রানওয়ে ২৩-র দিকে এগোতে শুরু করে। ১:৩৭-এ টেকঅফের অনুমতি মেলে এবং ঠিক ৪ সেকেন্ড পরে বিমান রানওয়ে ধরে দৌড়ানো শুরু করে।
১:৩৮-এ বিমান টেকঅফের জন্য প্রয়োজনীয় গতি V1 (১৫৩ নটস) এবং Vr (১৫৫ নটস) তোলে। এর ঠিক পরেই বিমানটি আকাশে উঠে যায় এবং তার সর্বোচ্চ গতি ১৮০ নটস। ঠিক সেই সময়েই ইঞ্জিন ১ এবং ইঞ্জিন ২-এর ফুয়েল কাট-অফ সুইচ এক সেকেন্ডের ব্যবধানে ‘রান’ থেকে ‘কাট-অফ’ পজিশনে চলে যায়। এর ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং ইঞ্জিনের স্পিড হ্রাস পেতে শুরু করে।
advertisement
ককপিটে তখন কী ঘটছিল? ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং অনুযায়ী, এক পাইলট আরেকজনকে জিজ্ঞাসা করেন, “আপনি কাট-অফ কেন করলেন?” দ্বিতীয় পাইলট উত্তর দেন: “আমি করিনি।”
সেই সময় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, টেকঅফের ঠিক পরে র্যাম এয়ার টারবাইন (RAT) চালু হয়ে যায়, যা জরুরি পরিস্থিতিতে হাইড্রলিক পাওয়ার জেনারেট করে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আশেপাশে পাখির কোনও গতি-বিধির চিহ্ন মেলেনি, যা ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারত।
advertisement
এর পর ১:৩৮:৪৭ মিনিটে দুটি ইঞ্জিনের গতি (speed) ন্যূনতম আইডল স্পিডেরও নিচে নেমে যায়। তখন RAT (Ram Air Turbine) হাইড্রলিক পাওয়ার জেনারেট করতে শুরু করে। ১:৩৮:৫২ মিনিটে, ইঞ্জিন ১-এর ফুয়েল সুইচ ‘কাট-অফ’ থেকে আবার ‘রান’ পজিশনে ফিরে আসে। ১:৩৮:৫৪ মিনিটে, অটোমেটিক পাওয়ার ইউনিট (APU)-এর ইনলেট ডোর খুলতে শুরু করে, যা তার অটো-স্টার্ট ফিচার সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত ছিল।
১:৩৮:৫৬ মিনিটে, ইঞ্জিন ২-এর ফুয়েল কাট-অফ সুইচও ‘রান’ পজিশনে আসে। যখন ফুয়েল কাট-অফ সুইচগুলি ‘রান’ অবস্থায় আসে, তখন FADEC (Full Authority Digital Engine Control) দুটি ইঞ্জিনেই ইগনিশন ও ফুয়েল সাপ্লাই পুনরায় চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করে। ইঞ্জিন ১-এ রি-লাইট (re-light) সফলভাবে শুরু হয় এবং তার গতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে। ইঞ্জিন ২-ও রি-লাইট হয়, কিন্তু তার গতি সম্পূর্ণরূপে স্থিতিশীল হতে ব্যর্থ হয়।
এই ঘটনাপ্রবাহ বোঝায়, টেকঅফের পর আকস্মিক ফুয়েল সাপ্লাই বন্ধ হওয়ায় ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং FADEC-এর সহায়তায় আংশিকভাবে ইঞ্জিন পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়। ১:৩৯:০৫ মিনিটে, এক পাইলট রেডিওতে তিনবার বলেন, “মে ডে মে ডে মে ডে” — যা ছিল বিপদ সংকেত।
এরপর এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলার (ATC) পাইলটের কাছ থেকে কল সাইন (Call Sign) জানতে চান, কিন্তু কোনও জবাব পাওয়া যায় না। তখনই বিমানটি ভেঙে পড়ে।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata [Calcutta],Kolkata,West Bengal
First Published :
July 22, 2025 3:37 PM IST