নয়াদিল্লি: খুনের পরে শ্রদ্ধার হাড় গুঁড়ো করতে স্টোন গ্রাইন্ডার ব্যবহার করেছিল আফতাব। তারপর প্রেমিকার হাড়ের সেই গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিল বিভিন্ন জায়গায়। তিন মাস ধরে প্রেমিকার শরীরের ৩৫ টুকরো দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ফেলে এসেছিল আফতাব। খুনের তিনমাস পরে সবশেষে ফেলেছিল শ্রদ্ধার মাথা। দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত আফতাব পুণেওয়ালার বিরুদ্ধে ৬ হাজার ৬০ পাতার চার্জশিট পেশ করল দিল্লি পুলিশ। আর সেই চার্জশিটের ছত্রে ছত্রে উঠে এল এমনই সব হাড়হিম করা তথ্য।
গত বছরের ১৮ মে শ্রদ্ধা এবং আফতাব ঠিক করেছিল তাঁরা মুম্বই যাবেন। সেই মতো ট্রেনের টিকিটও কাটা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে আফতাব। ট্রেনের টিকিটও বাতিল করে দেওয়া হয়। তা নিয়েই শ্রদ্ধা ও আফতাবের মধ্যে শুরু হয় বচসা। আর সেই বচসা গড়ায় খরচ থেকে শুরু করে আফতাবের একাধিক মহিলা বন্ধু থাকার ইস্যু পর্যন্ত। তখনই মুহূর্তের রাগে শ্রদ্ধাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে, তাঁর বুকের উপরে বসে দু'হাতে গলা টিপে প্রেমিকাকে খুন করে আফতাব।
আরও পড়ুন : ১ কেজি পেঁয়াজ ৮-৯ টাকা! কোথায় এই জলের দর, জেনে নিন
এখানেই শেষ নয়, পুলিশ জানিয়েছে, ১৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করার পরে জোমাটো থেকে চিকেন রোল অর্ডার করেছিল আফতাব। তার আগে অবশ্য শ্রদ্ধার দেহ নিয়ে গিয়ে রেখেছিল বাথরুমে। ঘটনার দিন সন্ধে পৌনে ৮টার সময় ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করে সামনের হার্ডওয়ার শপ থেকে একটি করাত, তিনটি ধারাল ছুরি এবং একটা হাতুড়ি কেনে সে। তারপর ঘরে ফিরে সেই সব ধারাল অস্ত্র দিয়েই একে একে শ্রদ্ধার দেহের ৩৫ টুকরো করে পলিথিনে ভরে রাখে। খুনের পরের দিন ১৯ মে একটা দামী রেফ্রিজিরেটর কিনে সেখানে ভরে রাখে সেই সমস্ত পলিথিন। তারপর পরের চার-পাঁচ দিনে দিল্লির ছাত্তারপুর পাহারি এলাকার জঙ্গলে এক এক করে সেই দেহাংশ ছড়িয়ে আসতে থাকে আফতাব।
দিল্লি পুলিশের চার্জশিট বলছে, শ্রদ্ধার দেহাংশ ফ্ল্যাটে থাকা অবস্থাতেই ডেটিং অ্যাপ থেকে একটি মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আফতাব। মেয়েটি তাঁর ফ্ল্যাটেও আসে। রাতে থাকে। এরপর থেকে বেশ কয়েকবার আফতাবের ফ্ল্যাটে যাতায়াত করেছিল মেয়েটি।
আরও পড়ুন, হঠাৎ ঢুকে পড়লেন 'রাধা-গোবিন্দ' মিষ্টির দোকানে! তারপর...? ত্রিপুরায় জনসংযোগে মমতা
পুলিশের কাছে শ্রদ্ধার নিখোঁজ ডায়রি লেখাতেও মুম্বই গিয়েছিল আফতাব। পথে শ্রদ্ধার মোবাইল, ক্রেডিট কার্ড নষ্ট করে সে ভিয়ান্ডার খাড়ি নামক একটি এলাকায় ফেলে দেয়। জেরায় নাকি আফতাব জানিয়েছে, এই ভিয়ান্ডার এলাকাতেই তাঁর স্কুলজীবন কেটেছে। এই খাড়ি এত গভীর যে এখানে কোনও কিছু ফেললে তা খুঁজে পাওয়া এককথায় অসম্ভব। এটা সে জানত। সেই কারণেই শ্রদ্ধার মোবাইল ও ক্রেডিট কার্ড সে এখানে ফেলেছিল।
মুম্বইয়ে থাকাকালীনই শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল আফতাব পুণেওয়ালার। সেই সময় ধর্মীয় কারণে আফতাবের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক মানতে চাননি শ্রদ্ধার বাবা-মা। তারপরেই শ্রদ্ধা এবং আফতাব দিল্লি চলে আসে। কিন্তু সেখানে আসার পরেই আফতাবের আসল চেহারা বুঝতে শুরু করে শ্রদ্ধা। তাঁদের বচসার মূল বিষয় হয়ে ওঠে আফতাবের নারী আসক্তি। জানা গিয়েছে, দুবাইয়ে আফতাবের বান্ধবী রয়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Aftab Poonewala, Shraddha murder case, Shraddha Walkar Murder, Shraddha Walker murder case