#কলকাতা: যতই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, মন্দিরে পুজো দিয়ে, দুপুরবেলা ভাল-মন্দ খাই না কেন, পয়লা বৈশাখের সঙ্গে বাঙালির কোনও সম্পর্ক নেই! ওই পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা বলা যেতে পারে! পয়লা বৈশাখের সূচনা করেন মুঘল সম্রাট মহামতী আকবর।
কাজেই, পয়লা বৈশাখে ঢুঁ মারা যেতেই পারে আকবের হেঁশেলে। পথপ্রদর্শক আবুল ফজল। 'আইন-ই-আকবরি'-তে তিনি লিখেছিলেন,
কিমা পোলাও বানানো এমন কিছু কঠিন নয়! পয়লা বৈশাখের দিন আপনিও অনায়াসেই বানিয়ে ফেলতে পারেন। সময় লাগবে খুব বেশি হলে ৫০ মিনিটের মতো!
৪ জনের জন্য বানাতে, প্যানে ২ টেবিল চামচ ঘি আর ২ টেবিল চামচ সাদা তেল গরম করে দারচিনি, ৫টা গোটা গোলমরিচ আর ৩টে লবঙ্গ ফোড়ন দিন। হালকা নেড়েচেড়ে পেঁয়াজ কুচি (৩টে বড় পেঁয়াজ), ২ টেবিল চামচ আদা রসুন বাটা আর ৫টা চেরা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ভাজতে থাকুন। পেঁয়াজে হালকা খয়েরি রং ধরলে, ৫০০ গ্রাম মাটন কিমা, ৮-১০টা পুদিনা পাতা কুচি আর স্বাদমতো নুন মিশিয়ে কড়া আঁচে কষান।
২ চা চামচ হলুদগুঁড়ো, ৪ চা চামচ লাল লঙ্কাগুঁড়ো, ২ চা চামচ ধনে গুঁড়ো দিয়ে ভাজতে থাকুন। ১টা টোম্যাটো কুচি আর ১ আঁটি ধনেপাতা কুচি মেশান। এবার এরমধ্যেই ২ কাপ চালের ভাত (চাল ৮০ শতাংশ সেদ্ধ হবে) দিয়ে ভাল করে কিমার সঙ্গে মিশিয়ে নিন। তৈরি কিমা পোলাও।
এবার আকবর-ই কেতায় খেতে গেলে সঙ্গে গোস্ত দোপিঁয়াজাও লাগবে বইকী! তবে এটা বানানোও বেশ সহজ। সময় একটু বেশি লাগে। ওই দেড় ঘন্টা মতো!
৪ জনের জন্য বানাতে ১ কেজি পাঠার মাংসে স্বাদমতো নুন, অর্ধেক চামচ হলুদগুঁড়ো আর ১ টেবিল চামচ সর্ষের তেল মাখিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ১টা পেঁয়াজ আর ৮-১০ কোয়া রসুন কুচিয়ে রাখুন। ৪-৫টা শুকনো লঙ্কা ২০ মিনিট গরম জলে ভিজিয়ে রেখে বেটে নিন। অন্যদিকে শুকনো খোলায় ৮-১০টা লবঙ্গ, ২-৩টে বড় এলাচ আর ২ ইঞ্চির একটা দারচিনির কাঠি ভেজে, গুঁড়ো করে নিন।
কড়াইয়ে ৩ টেবিল চামচ সর্ষের তেল গরম করে, পেঁয়াজকুচি দিন। পেঁয়াজ স্বচ্ছ হয়ে এলে, রসুন কুচি আর ২ টেবিল চামচ আদা কুচি দিয়ে মাঝারি আঁচে ভাজতে থাকুন। শুকনো লঙ্কা বাটা, ভাজা মশলার গুঁড়ো মিশিয়ে ২-৩ মিনিট ভাজার পর, ম্যারিনেট করে রাখা মাংস দিয়ে কড়া আঁচে ভাল করে কষাতে থাকুন। ২ টেবিল চামচ ধনে গুঁড়ো মিশিয়ে কম আঁচে ভাজতে থাকুন, যতক্ষণ না মশলা থেকে তেল ছাড়তে শুরু করছে।
যতক্ষণ মাংস রান্না হচ্ছে, অন্য একটা প্যানে ১ কাপ পেঁয়াজ কুচি ভেজে নিন। সামান্য চিনি আর নুন ছিটিয়ে ভাজুন, এতে পেঁয়াজে ভাল রং ধরবে।
এতক্ষণে মাংস অনেকটা কষে এসেছে। পরিমাণমতো গরম জল মিশিয়ে ঢাকনা এঁটে দিন। মোটামুটি ৩০ মিনিট বাদে ঢাকনা খুলে দেখে নিন মাংস ঠিকমতো সিদ্ধ হয়েছে কীনা। স্বাদমতো নুন, মিষ্টি মিশিয়ে, উপরে ভেজে রাখা পেঁয়াজ ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।
আবুল ফজল লিখেছেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নাকী খাওয়ার বহর কমিয়ে দিয়েছিলেন আকবর। আমিষ প্রায় খেতেনই না। অনেকের মত, তিনি প্রাণীহত্যার বিরোধী ছিলেন, অনেকে বলেন, কঠিন পেটের রোগে ভুগছিলেন নবাব! আবার এমনও শোনা যায়, হিন্দু রাজপুত ঘরানার স্ত্রী যোধা বাঈ-এর প্রভাবেই নাকী নিরামিষ খাবারে রুচি হয় নবাবের।