Jammu and Kashmir: 'শান্ত' কাশ্মীরেও বিপদের আঁচ, রাজ্যের তকমা ফেরাতে কেন তৎপর মোদি সরকার?

Last Updated:

প্রশাসনিক দিক থেকেও জম্মু কাশ্মীরকে (Jammu and Kashmir) কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার সিদ্ধান্ত খুব সফল হয়েছে, এমনটাও বলা যাবে না৷

মূল উপত্যকা ভিত্তিক কাশ্মীরের সবথেকে বড় দুই রাজনৈতিক শক্তি ফারুক- ওমর আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং মেহবুবা মুফতির পিডিপি-র সঙ্গে কেন্দ্রের যতই বিরোধিতা থাকুক না কেন, এই রাজনৈতিক দলগুলি ভারত বিরোধী অবস্থান নেয়নি৷ কিন্তু ২০১৮ সালে জম্মু কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর থেকেই মূলস্রোতের এই রাজনৈতিক দলগুলি উপত্যকায় ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছিল৷ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে কাশ্মীরে রাজনৈতিক প্রভুত্ব কায়েম করার যে কৌশল কেন্দ্র নিয়েছিল, তাও খুব একটা সফল হয়নি৷ আর এই রাজনৈতিক শূন্যতাকেই কাজে লাগাচ্ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ভারত বিরোধী শক্তিগুলি৷ কারণ অতীতে কাশ্মীরের যে এলাকাগুলি শান্ত ছিল, সেখান থেকেও তরুণ, যুবকদের মগজধোলাই করে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যুক্ত করা হচ্ছিল৷
advertisement
২০১৬ সালে জেহাদি জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর উত্তাল হয়ে উঠেছিল কাশ্মীর৷ বুরহানের মৃত্যুর বদলা নিতে বহু দক্ষিণ কাশ্মীর থেকে ৮৮ জন যুবক বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে নাম লেখায়৷ সেখানে গত বছর একটানা ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা, করোনার জন্য লকডাউনের পরেও এই সংখ্যাটা ১৮০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল৷ চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত কাশ্মীরের অন্তত ৯০ জন যুবক একই পথে পা বাড়িয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর৷
advertisement
advertisement
২০২০ সালে কাশ্মীরে যেকজন জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অর্ধেকেরই ব্যক্তিগত অস্ত্র ছিল৷ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা, নিরাপত্তার কড়াকড়ি সত্ত্বেও জিহাদি শক্তিগুলি একাধিক বার কাশ্মীরের বুকে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়েছে৷ পুলিশের টহলদারী দল, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের উপরে হামলা চালানো হয়েছে৷ আবার সাম্প্রতিক কালে নিরাপত্তা বাহিনী যখন পাল্টা জঙ্গি দমন অভিযান চালিয়েছে, তখন তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে উন্মত্ত জনতা৷ উপত্যকায় ফিরে এসেছে ২০১৯ সালের আগেকার ছবিই৷
advertisement
জঙ্গি সংগঠনের নাম লেখানোর সংখ্যা যত বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিকেশ হওয়া জঙ্গিদের সংখ্যাও৷ সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে যেখানে ৩৪ জন কাশ্মীরি জেহাদিকে নিকেশ করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী, সেখানে গত বছর সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয় ১৭৪৷ অর্থাৎ দু' বছরের ব্যবধানে সংখ্যাটা পাঁচ গুন বেড়েছে৷ জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান বড় সাফল্য হলেও একই ভাবে তা প্রশ্ন তুলে দেয়, আদৌ কতটা শান্ত হয়েছে কাশ্মীর? একই সঙ্গে কাশ্মীরে যে সাময়িক শান্ত হয়েছে, অচিরেই সেই ছবিটা বদলে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকছে৷ ফলে কাশ্মীরে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ফেরানোটা জরুরি বুঝিয়েই অনেক দিন আগে তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷
advertisement
প্রশাসনিক দিক থেকেও জম্মু কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার সিদ্ধান্ত খুব সফল হয়েছে, এমনটাও বলা যাবে না৷ কারণ সরকারি আমলাদের গা ছাড়া মনোভাব, প্রকল্প বাস্তবায়নে ঢিলেমির ছবিটাও খুব একটা বদলায়নি৷ তার উপর করোনা এবং লকডাউনের ধাক্কায় কাশ্মীরের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে৷ ফলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণায় কাশ্মীর আমূল বদলে যাবে, সেই সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়েছে৷
advertisement
ফলে কাশ্মীরে স্থিতাবস্থা তৈরির যে চেষ্টা করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত ভঙ্গুর৷ অতীতেও দেখা গিয়েছে ২০০৮, ২০১০ এবং ২০১৬ সালে উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরেও সেই অবস্থা ধরে রাখা যায়নি৷ জাতি সত্তা, ধর্মীয় নানা বিষয়ে অভিযোগ তুলে জনতার বিক্ষোভে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে কাশ্মীর৷ ফলে কাশ্মীরের বুকে মূলস্রোতের রাজনৈতিক শক্তিগুলির ভিত আলগা হয়ে গেলে বা তারা জনসমর্থন হারালে ফের অতীতের অশান্ত কাশ্মীরের ছবি ফিরে আসা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা৷
advertisement
সূত্রের খবর, ২০১৮ সাল থেকেই কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন অত্যন্ত গোপনীয়তার মাধ্যমে যোগাযোগ রেখে চলছিল ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইং (র) এবং পাকিস্তানের ইন্টার- সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টোরেট (আইএসএই)৷ যদিও পুলওয়ামা হামলা এবং তার পাল্টা ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের জেরে এই গোপন মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া ধাক্কা খেয়েছিল৷ কিন্তু আমেরিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির চাপ এবং উদ্যোগে সেই প্রক্রিয়া ফের শুর হয়৷ যার সুফল হিসেবে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সীমান্তে যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে দুই দেশ৷
পাকিস্তানের তরফেও শান্তি প্রতিষ্ঠার শর্তে বার্তা দেওয়া হয়, কাশ্মীরকে রাজ্যের তকমা ফিরিয়ে দিতে হবে এবং বিতর্কিত এই অঞ্চলের জনবসতি সংক্রান্ত কোনও পরিবর্তন আনবে না ভারত৷ কারণ বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহারের পর কাশ্মীরের বাইরের বাসিন্দারাও সেখানে সম্পত্তি কেনা এবং স্থায়ী ভাবে বসবাস করার অধিকার পেয়েছেন৷
রাজ্যের তকমা ফিরিয়ে দিলেও কেন্দ্র যে কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা ফেরাবে না, তা এক রকম নিশ্চিত৷ শুধু তাই নয়, কাশ্মীরের আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের হাতে বিশেষ ক্ষমতা রাখা হতে পারে৷ মোদির সঙ্গে বৈঠকে কাশ্মীরের নেতারা এই শর্ত মানবেন কি না, সেদিকে সবারই নজর থাকবে৷
তবে এর পরেও কেন্দ্রীয় সরকার এবং কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলির ঐক্যমতে পৌঁছবে বলেই মনে করা হচ্ছে৷ সেক্ষেত্রে চলতি বছরে শীতের আগেই জম্মু কাশ্মীরে নির্বাচন হতে পারে৷ তবে দু' পক্ষে ঐক্যমতে পৌঁছলেও কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার পথ যে এবারেও সহজ হবে না, তা বলাই বাহুল্য৷
Praveen Swami
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
Jammu and Kashmir: 'শান্ত' কাশ্মীরেও বিপদের আঁচ, রাজ্যের তকমা ফেরাতে কেন তৎপর মোদি সরকার?
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement