#কেরল: ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (NEET, নিট)- এর পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে মহিলা পরীক্ষার্থীদের অন্তর্বাস খোলানো হল। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন তাঁরা। এমনই অভিযোগ উঠেছে কেরলের কোল্লমের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
১৭ বছরের এক পরীক্ষার্থীর বাবা মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর মেয়ে প্রথম বার নিট পরীক্ষা দিয়ে গিয়েছিলেন। সংবাদ সংস্থার খবর, সেই মেয়েটি-সহ বাকি সকলে টানা তিন ঘণ্টা ধরে পরীক্ষা দিতে হয়েছে অন্তর্বাস না পরে।
পরীক্ষার্থীর বাবার দাবি, মেয়ে এখনও সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতাকে মন থেকে সরাতে পারছে না। তিনি জানালেন, অষ্টম শ্রেণি থেকে তাঁর মেয়ে নিট-এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী নিশ্চিত ছিলেন, তাঁদের মেয়ে ভাল পরীক্ষা দেবেন এবং র্যাঙ্কও ভালই আসবে। কিন্তু এই ঘটনার জন্য নাকি তিনি পরীক্ষায় মনই বসাতে পারেননি।
সেই অভিভাবকই জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে ছাড়াও বাকি মহিলা পরীক্ষার্থীদেরও অন্তর্বাস খোলানো হয়েছে। বলা হয়েছে, একটা ঘরে গিয়ে একের পর এক অন্তর্বাস খুলে রেখে আসতে হবে। তার পরই পরীক্ষায় বসতে পারবেন তাঁরা। সেই ঘরে চাঁই করে রাখা ব্রা। কোভিডের বিধিনিষেধও লাটে উঠেছিল বলে অভিযোগ। যে ঘরে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল, সেখানে ছেলেরাও ছিল। এমনকি বেশির ভাগ পরিদর্শকই পুরুষ ছিলেন। অভিযোগকারীর দাবি, নিট পরীক্ষায় বসার জন্য যে রকম পোশাকের কথা নির্দেশে লেখা ছিল, তা-ই পরেছিল তাঁর মেয়ে। অন্তর্বাসের কোনও উল্লেখ ছিল না বিজ্ঞপ্তিতে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে প্রথম আসানসোলের অভয় কুমার সিংহানিয়া, প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৮
পরীক্ষার্থীর বাবা জানান, পরীক্ষা শুরু হতেই তিনি আর তাঁর স্ত্রী বাইরে পেরিয়ে গিয়ে নিজেদের গাড়িতে বসে খাওয়া দাওয়া করতে থাকেন। এমনই সময়ে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। লেখা ফুটে ওঠে, 'ইনফর্মেশন টেকনোলজি'। তাঁদের বলা হয় হলের গেটে যেতে। দম্পতি গিয়ে দেখেন, তাঁদের মেয়ে কাঁদছেন। বাবা-মাকে তিনি সব কথা খুলে বলেন এবং পরিদর্শকদের নির্দেশ অনুযায়ী, মায়ের থেকে একটি শাল নিয়ে নেন। আবারও পরীক্ষার হলে চলে যান তাঁদের মেয়ে। পরীক্ষা শেষেহল থেকে বেরিয়েই কাঁদতে কাঁদতে মায়ের কোলে লুটিয়ে পড়েন তাঁদের মেয়ে।
পরীক্ষার্থীর বাবা ইতিমধ্যে থানায় অভিযোগ করেছেন। তা ছাড়া মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।
রাজ্যের মহিলা কমিশনও এই ঘটনার জন্য একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাটি নিয়ে অভিযোগের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গিয়েছে। রবিবারের এই ঘটনা নিয়ে কেরলের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আর বিন্দু সোমবার জানিয়েছেন, রাষ্ট্র-চালিত কোনও সংস্থা দ্বারা আয়োজিত নয় পরীক্ষাটি। যা ঘটেছে তা আয়োজকদের পক্ষ থেকে গুরুতর ভুল হয়েছে। মন্ত্রীর কথায়, "তাঁদের মানবাধিকারের কথা না ভেবে মহিলা পরীক্ষার্থীদের প্রতি এই ধরনের আচরণ অগ্রহণযোগ্য। সেন্টার অ্যান্ড ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-কে এই ঘটনার কথা জানানো হবে।"
আরও পড়ুন: পিছিয়ে গেল এ বছরের NEET PG পরীক্ষা, কতদিন?
এই ঘটনার পর সোমবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ মিছিল করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলার এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, মহিলা অফিসারদের একটি দল সেই মহিলা পরীক্ষার্থীর বয়ান রেকর্ড করতে গিয়েছেন। তার ভিত্তিতে মামলা দায়ের-সহ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাও খতিয়ে দেখা হবে।
কেরলের রাজ্য মানবাধিকার কমিশন সোমবার ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কোল্লাম এসপিকে ১৫ দিনের মধ্যে এই ঘটনার রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।