নয়াদিল্লি: প্রতি তিন জন সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে এক জনকে মেরে ফেলার ক্ষমতা রয়েছে এমন একটি নতুন ধরনের ভাইরাসের আবির্ভাবের খবর গত কয়েক দিন ধরেই ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকার বাদুড়ের মধ্যে নিওকোভ (NeoCoV) নামের এই নতুন ভাইরাস আবিষ্কৃত হয়েছে এবং এটি সম্ভবত মানুষের কোষে প্রবেশ করতে সক্ষম। এই সংবাদ প্রতিবেদনটি দৃশ্যত একটি চিনা গবেষণাপত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা এখনও পর্যালোচনা করে দেখা হয়নি।
গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, নিওকোভ ভাইরাস মিডল-ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (MERS) অসুখের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্কিত। এটি ২০১২ সালে সৌদি আরবে প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল। তবে নিওকোভ-এ সমস্ত অতিরঞ্জিত আলোচনা অনুমানের উপরেই নির্মিত।
মহারাষ্ট্রে কোভিড-১৯ টাস্ক ফোর্সের সদস্য এবং আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের সভাপতি ডাঃ শশাঙ্ক জোশী নিওকোভ সম্পর্কে একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, “নিওকোভ রহস্য ফাঁস হয়েছে: ১. NeoCov একটি পুরানো ভাইরাস, যা 'মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম' (MERS) সৃষ্টি করে এবং DPP4 রিসেপ্টরগুলির মাধ্যমে কোষে প্রবেশ করে। ২. NeoCoV ভাইরাস বাদুড়ের এনজিওটেনসিন রূপান্তরকারী এনজাইম ২ (ACE2) রিসেপ্টর ব্যবহার করতে পারে, তবে এটি তখনই সম্ভব, যখন এটিতে একটি নতুন মিউটেশন হয়। এ ছাড়া যা কিছু হচ্ছে, তা প্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
আরও পড়ুন : ওমিক্রন ছেড়ে গেলেও রয়ে গিয়েছে শুকনো কাশি ও সর্দি? রইল কিছু ঘরোয়া টোটকা
নিওকোভ শুধুমাত্র বাদুড়ের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে এবং এটি কখনও মানুষকে সংক্রমিত করেনি। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে, MERS সম্পর্কিত করোনাভাইরাসগুলির বিস্তৃত সেট, যার নাম Merbecoviruses, এতে মৃত্যুর হার প্রায় ৩৫ শতাংশ। ইনস্টিটিউট অফ জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির ডিরেক্টর ডঃ অনুরাগ আগরওয়াল বলেছেন, “MERS অনেক বেশি প্রাণঘাতী কিন্তু মহামারি সৃষ্টি করেনি। তবে আমরা সচেতন রয়েছি।”
আরও পড়ুন : ওমিক্রনেই শেষ নয়, আসছে বহুগুণ বেশি সংক্রামক করোনার নয়া প্রজাতি, কী বলছে WHO?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র বক্তব্য অনুসারে, ২০১২ সালে প্রথম শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বের ২৭টি দেশে MERS -এর ঘটনার রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। যার ফলে মোট ৮৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলেও খবর।
আরও পড়ুন : যারা টিকা নেয়নি, তাদের জন্য বিপদ নিয়ে আসছে করোনাভাইরাস!
ডাঃ অমিত সিং, সহযোগী অধ্যাপক, সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজেস, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স, ব্যাঙ্গালোর, বলেছেন, “এই নিওকোভ ভাইরাসটি নিপা-র মতো অন্যান্য বাদুড়বাহিত ভাইরাসের মতোই মানুষের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এতে এখনই বিশেষ কোনও ভয় নেই। প্রাণীদের মধ্যে অনেক ধরণের সংক্রমণ থাকলেও সেগুলি যে সবই মানুষের মধ্যে প্রবেশ করবে, এমনটা একেবারেই নয়।’’
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Coronavirus news, NeoCov, Omicron