#নয়াদিল্লি: কংগ্রেসের নেতৃত্বে বদল চেয়ে যে নেতারা চিঠি দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গুলাম নবি আজাদ৷ ফের একবার কংগ্রেসের নেতৃত্বে বদলের দাবিতে সরব হলেন প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা৷ এবার আরও চাঁচাছোলো ভাষায় তিনি বললেন, দলের মধ্যে নির্বাচন না করলে আগামী ৫০ বছর বিরোধী আসনেই বসতে হবে কংগ্রেসকে৷
সনিয়া গান্ধিকে লেখা চিঠিতে ২৩ জন সিনিয়র কংগ্রেস নেতারা দাবি তুলেছিলেন, দলে স্থায়ী এবং সক্রিয় নেতৃত্বের প্রয়োজন৷ এই চিঠিকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ঝড় ওঠে৷ চিঠি লেখার জন্য গুলাম নবি আজাদ সহ বাকি নেতাদের পাল্টা তোপের মুখে পড়তে হয়৷ পরিস্থিতি এমন পর্যায় পৌঁছয় যে ইস্তফার ইচ্ছে প্রকাশ করেন কংগ্রেসের এই রাজ্যসভার সাংসদ৷ অন্তবর্তী সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্বে থেকে যান সনিয়াই৷ পরে অবশ্য তাঁর ক্ষোভ প্রশমনে সনিয়া, রাহুল গান্ধিরা তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেন৷
যদিও নেতৃত্বে বদলের দাবি থেকে সরছেন না আজাদ৷ তাঁর মতে, অবিলম্বে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি সহ দলের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলির জন্য নির্বাচন করা প্রয়োজন৷ তিনি বলেন, 'গত কয়েক দশক ধরে আমাদের দলে নির্বাচিত নেতৃত্ব নেই৷ হয়তো আরও ১০ থেকে ১৫ বছর আগেই বিষয়টি নিয়ে আমাদের সরব হওয়া উচিত ছিল৷ আর এখন আমরা একের পর এক নির্বাচনে পরাজিত হচ্ছি৷ ঘুরে দাঁড়াতে গেলে আমাদের অবিলম্বে দলের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে৷'
সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, 'আমার দল যদি আগামী ৫০ বছর বিরোধী আসনেই বসতে চায়, তাহলে অবশ্য দলের মধ্যে কোনও নির্বাচনের প্রয়োজন নেই৷'
সঞ্জয় গান্ধির আমল থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত গুলাম নবি আজাদ বর্তমানে রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা৷ ২০২১ সালে সাংসদ হিসেবে তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ ২০০২ সালে তাঁর নেতৃত্বেই জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল করেছিল কংগ্রেস৷ তীব্র কটাক্ষের সুরে তিনি বলেছেন, যাঁরা দলের মধ্যে নির্বাচনের বিরোধিতা করছেন তাঁরা আসলে পদ হারানোর ভয় পাচ্ছেন৷ কারণ তাঁদের নিযুক্তি 'অ্যাপয়েনমেন্ট কার্ড'-এর মাধ্যমে হয়েছে৷
নেতৃত্ব বদল চেয়ে লেখা চিঠির পক্ষে সওয়াল করে প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা বলেন, 'কংগ্রেসের বিভিন্ন পদাধিকারী বা রাজ্য স্তরে সভাপতি, জেলা, ব্লক সভাপতি যাঁরা এই চিঠির বিরোধিতা করছেন, নির্বাচন হলে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাবে না৷ এটা তাঁরা ভালই জানেন৷ যাঁরা কংগ্রেসের ভাল চান, তাঁরা প্রত্যেকে এই চিঠিকে স্বাগত জানাবেন৷ আমি শুধু বলেছি, রাজ্য, জেলা, ব্লক স্তরের সভাপতিদের কংগ্রেস কর্মীরাই নির্বাচনের মাধ্যমে বেছে নিন৷'
গুলাম নবি আজাদ এ ভাবে মুখ খোলায় স্বভাবতই ফের চাপে সনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি এবং দলে তাঁদের নেতৃত্বকে সমর্থন করা নেতারা৷ সূত্রের খবর অনুযায়ী, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠকে এই বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল৷ এখন দেখার, গুলাম নবি আজাদের এই পরামর্শকে কীভাবে নেয় কংগ্রেস নেতৃত্ব৷