WB HS Result: বাবা পরিযায়ী শ্রমিক, মায়ের সঙ্গে বেতের ঝুড়ি বুনে উচ্চ মাধ্যমিকে অভাবনীয় ফল জিতুর
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
Last Updated:
WB HS Result: অভাব অনটনের সংসারে ডালা,ঝুড়ি তৈরি করার পাশাপাশি নিজের পড়াশোনা বজায় রেখে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল জিতুর। উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের সেরা হয়েছেন মালদহের চাঁচলের জিতু চৌধুরী। তবে উচ্চ শিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক অনটন।
মালদহ : অভাব অনটনের সংসারে ডালি, ঝুড়ি তৈরি করার পাশাপাশি নিজের পড়াশোনা বজায় রেখে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল জিতুর । উচ্চ মাধ্যমিকে স্কুলের সেরা হয়েছেন মালদহের চাঁচলের জিতু চৌধুরী । তবে উচ্চশিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক অনটন । দুঃস্থ পরিবারের মেয়ে জিতুর ইচ্ছে ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করার । মেধা রয়েছে, তবে স্বপ্ন পূরণের মূল সংকট আর্থিক অনটন । মেয়ের উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকারি সাহায্যের আর্জি পরিবারের ।
মালদহের চাঁচল থানার চন্দ্রপাড়া পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা জিতু চৌধুরী । দাড়িয়াপুর হাই স্কুলের ছাত্রী জিতু । এই বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কলা বিভাগে ৪৬২ নম্বর পেয়ে স্কুলের সেরা হয়েছেন । তাঁর এমন সাফল্যে খুশি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা । জিতু চৌধুরীর বাবা পরিযায়ী শ্রমিক। মা দিনমজুরি করে, বাড়িতে বাঁশের ডালি তৈরি করে দিন গুজরান করেন। জিতুরা তিন ভাই বোন । একটি মাত্র ঘর তাদের । সেখানেই গাদাগাদি করে থাকতে হয় পাঁচজনকে।
advertisement
বাবা বছরের অধিকাংশ সময় ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে পাড়ি দেন । সংসার চালাতে জিতুকেও মায়ের সঙ্গে ডালি-ঝুড়ি তৈরি করতে হয় । সারাদিন বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকার পরেও এ বার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৬২ নম্বর পেয়েছেন জিতু । বড় হয়ে ভূগোলে গবেষণা করতে চায় । কিন্তু ইচ্ছেপূরণ হবে কিনা তা নিয়ে তার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে । কারণ, সংসারে অভাব । বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে স্কুল । বেশিরভাগ দিনই অর্ধাহারে সাইকেল চালিয়ে স্কুল যেতে হত । তার পরেও উচ্চ মাধ্যমিকে এমন ফল করায় শুধু বাবা-মা নয়, গ্রামবাসীরাও খুব খুশি ।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : মহাপ্রভুর সময় থেকেই হচ্ছে দই চিঁড়ের মেলা, জানুন দণ্ড মহোৎসবের ৫ শতকের কাহিনি
মেধাবী পড়ুয়া জিতু বলেন, ‘‘ বাবা শ্রমিকের কাজ করেন । আমার মা নিজেও কাজ করেন ৷ পড়াশোনার পাশাপাশি মায়ের কাজে সাহায্যে করেছি । আমি ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই । তবে অভাবী সংসারে তা কীভাবে সম্ভব হবে, আমি বুঝতে পারছি না ।’’ টাকা না থাকায় একজন মাত্র গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করেছে তিনি । নিজের পড়াশোনার খরচ তুলতে ও সংসারে মাকে সাহায্য করতে হাতে খাতা-কলমের পাশাপাশি তুলে নিয়েছিল বেত। সেই বেত দিয়ে মায়ের সঙ্গে তৈরি করতে শিখে নেন ডালি, ঝুড়ি ৷ সে সব বিক্রি করে সংসারে চলে ভাতের যোগান ।
advertisement
আরও পড়ুন : আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রিতা মা-মেয়ে, গৃহশিক্ষকতা করে উচ্চ মাধ্যমিকে দুর্দান্ত ফল পিতৃহীন ছাত্রীর
আরও পড়ুন : উচ্চ মাধ্যমিকে সফল ভগবানগোলার পরিযায়ী শ্রমিক কন্যার ইচ্ছা চিত্রশিল্পী হওয়ার
মেয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ কীভাবে বহন করবে সেই চিন্তায় এখন আকুল হয়ে উঠেছে তাঁর মা ও বাবা । মেয়ের সাফল্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জিতুর মা সীমা চৌধুরীর চোখে গর্বের অশ্রু। বললেন, ‘‘ ভেবেছিলাম এ ভাবে পড়াশোনা করে মেয়ে খুব ভাল ফল করতে পারবে না । কিন্তু ও করে দেখিয়েছে। খুব ভাল লাগছে । ভয়ও হচ্ছে । এর পর ওকে কীভাবে পড়াব?’’
advertisement
প্রতিবেদন- হরষিত সিংহ ( Harashit Singha)
Location :
First Published :
June 13, 2022 6:55 PM IST