WB HS Result: আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রিতা মা-মেয়ে, গৃহশিক্ষকতা করে উচ্চ মাধ্যমিকে দুর্দান্ত ফল পিতৃহীন ছাত্রীর
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
Last Updated:
WB HS Result: এমন কয়েকজন পরীক্ষার্থী ভালো ফলাফল করেছে যারা অসীম দারিদ্রের মধ্য দিয়ে পরীক্ষায় বসেছিল। তাদের মধ্যেই একজন বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের অন্তর্গত বাবুইজোড়ের দোলন সেন।
বীরভূম : গত সপ্তাহের শুক্রবার চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পাশাপাশি প্রকাশ করা হয়েছে মেধাতালিকা । এই মেধাতালিকা প্রকাশের পর দেখা যায় রাজ্যের ২৭২ জন পড়ুয়া প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে । যা ঐতিহাসিক এবং নজিরবিহীন । তবে এই সকল মেধাবীদের মধ্যে এমন কয়েকজন পরীক্ষার্থী ভাল ফলাফল করেছে যারা অসীম দারিদ্রের মধ্য দিয়ে পরীক্ষায় বসেছিল । তাঁদের মধ্যেই একজন বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের অন্তর্গত বাবুইজোড়ের দোলন সেন।
বাবুইজোড় গ্রামের হাটতলার কাছে পৈতৃক ভিটে দোলনের। তবে কয়েক বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে । তাঁদের বাড়ি এখন ভেঙে পড়েছে । পরিস্থিতি এমন যে এখন তাঁরা সেই বাড়িতে থাকতে পারেন না । তাঁদের বাড়ির পরিস্থিতি এমন করুণ দেখে স্থানীয় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকেন দোলন এবং তার মা । সেখান থেকেই পড়াশোনা করে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন দোলন ।
advertisement
দোলন সেন এই বছর বাবুইজোড় ধরণীধর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিলেন । পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৭৪ । ৯৪.৮ শতাংশ নম্বর পাওয়া দোলন বাংলায় ৯৪, ইংরেজিতে ৯২ সংস্কৃতে ৯৭, দর্শনে ৯৭ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৯৪ নম্বর পেয়েছেন । স্কুলের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা নম্বর হল তাঁর । তবে এই নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে দোলনকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে ।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : শত ব্যস্ততার মধ্যেও দুঃস্থ পরিবারের কচিকাঁচাদের বিনামূল্যে নাচ শেখাচ্ছেন থানার এএসআই
বাবা মারা যাওয়ার পর তার মা নমিতা সেন দিনরাত এক করে দোলনকে মানুষ করছেন । নমিতা দেবীর স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি বাবুইজোড় ধরণীধর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের জন্য মিড ডে মিলের রান্না করার কাজ শুরু করেন । স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাত ধরে এই কাজ করে সামান্য আয় হয় । এর পাশাপাশি তাঁদের সামান্য যেটুকু জমি রয়েছে তাতে খাওয়াদাওয়ার জন্য সামান্য চাল পাওয়া যায়। এইভাবেই চলে তাঁদের সংসার ।
advertisement
আরও পড়ুন : বাড়িতে ব্যবহার করুন সঠিক সুগন্ধি, গ্রীষ্মে শরীর-মন হবে ফুরফুরে
নিজের পড়াশোনায় চালানোর পাশাপাশি গৃহশিক্ষকতার পেশায় যুক্ত হয়েছেন দোলন । গ্রাম্য এলাকায় গৃহশিক্ষকতা করে সেই ভাবে রোজগার না হলেও নিজের পড়ার খরচটুকু জোগাড় যায় । গৃহশিক্ষকতা করে নিজের পড়াশুনা চালিয়েই দোলন উচ্চ মাধ্যমিকে এমন সফলতা অর্জন করেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল অন্যদের পড়ানো, নিজের পড়াশোনা এবং বাড়ির অন্যান্য কাজ করার ফলে নিজের জন্য কেবলমাত্র একটি টিউশন নিতে পেরেছিল দোলন ।পড়াশোনার অদম্য প্রচেষ্টায় সে আজ এমন সফলতা অর্জন করেছে ।
advertisement
আরও পড়ুন : আদার সঙ্গে এই জিনিসটা শুধু মেশাতে হবে, কয়েক সপ্তাহে কমিয়ে দেবে পেটের চর্বি!
অন্যদিকে এত ভাল ফলাফল করার পরেও দোলন এখন দুশ্চিন্তায় রয়েছে উচ্চশিক্ষা নিয়ে । কারণ কলেজ অনেকটাই দূর, যাতায়াত খরচ থেকে শুরু করে পড়াশোনার খরচ নিয়ে তাঁর এবং তাঁর মায়ের মাথায় এখন দুশ্চিন্তার কালো ছায়া । দোলন আগামীদিনে শিক্ষিকা অথবা নার্স হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন । তবে পড়াশুনার ক্ষেত্রে খরচ বাধা হয়ে দাঁড়ালেও আত্মীয়দের সাহায্য এবং নিজে পরিশ্রম করে যেভাবে এতটা পথ এগিয়ে এসেছেন, সেই ভাবেই এগিয়ে যেতে চান অদম্য দোলন।
advertisement
( প্রতিবেদন : মাধব দাস)
Location :
First Published :
June 13, 2022 11:13 AM IST