Mental Health: মানসিক অসুস্থতা কিন্তু কোনও ‘কলঙ্ক’ নয়, বরং এই লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করলেই বিপদ!
Last Updated:
Mental Health: এই দিনটি উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য হল - ভাল মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি প্রতিটি মানুষের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
আজ ১০ অক্টোবর। প্রতি বছর এই দিনটিকে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। ১৯৯২ সালে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একসঙ্গে মিলে ১০ অক্টোবর দিনটিকে 'বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস' হিসেবে পালন করার কথা ঘোষণা করে। তার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
আর এই দিনটি উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য হল - ভাল মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি প্রতিটি মানুষের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এ-ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে মানুষকে শিক্ষিত করতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা বিষয়ক ভুল ধারণা দূর করতেও এই দিনটি পালনের অঙ্গীকার করা হয়েছে। তবে প্রতি বছর এই দিনটি পালনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন থিম রাখা হয়। একই রকম ভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চলতি বছর ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২২’-এর থিম রেখেছে ‘মেকিং মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফর অল এ গ্লোবাল প্রায়োরিট’'।
advertisement
advertisement
যে-সব কারণে মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত হয়ে থাকে:
লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিকেল কলেজের (নতুন দিল্লি) মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রেরণা কুকরেতি-র বক্তব্য, জৈবিক বা বায়োলজিক্যাল, মনস্তাত্ত্বিক বা সাইকোলজিত্যাল এবং সামাজিক বা সোশ্যাল ফ্যাক্টরগুলিই মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। জৈবিক কারণ অর্থাৎ যখন মস্তিষ্কে কোনও রাসায়নিক পরিবর্তন হয়, তখন এক জন ব্যক্তির মানসিক সমস্যা হতে পারে। আর সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টরগুলি আবার সাধারণত কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়। আর সোশ্যাল ফ্যাক্টরের মধ্যে পড়ে কোনও ব্যক্তির সামাজিক অবস্থা। আসলে তাঁর সামাজিক অবস্থা কেমন, এর জেরেও তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। অবশ্য এর মধ্যে আরও অনেক কিছুও পড়ে। যেমন - কোনও ব্যক্তির চাকরির ধরন কেমন, কাজের চাপ কী রকম, তাঁকে নিয়ে পরিবারের আশা-প্রত্যাশা কেমন, চাকরি হারানো ইত্যাদি বিষয়গুলোও ওই ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যকে অনেকাংশে প্রভাবিত করে। এমনকী অনেক সময় শারীরিক অসুস্থতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, পারিবারিক কলহ, প্রিয়জন বিয়োগ ইত্যাদি কারণেও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সহজ ভাবে বললে-
advertisement
বায়োলজিক্যাল ফ্যাক্টর
সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টর
মাল্টি-এলিমেন্ট ফ্যাক্টর
বংশগত কারণ বা হেরিডিটরি ফ্যাক্টর
পরিবেশগত কারণ বা এনভায়রনমেন্টাল ফ্যাক্টর
অর্থনৈতিক কারণ বা ইকোনমিক ফ্যাক্টর
সামাজিক কারণ বা সোশ্যাল ফ্যাক্টর
মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত রোগ:
ডা. প্রেরণা কুকরেতি বক্তব্য, সবচেয়ে সাধারণ মানসিক রোগ হল - অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার বা উদ্বেগজনিত সমস্যা এবং ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার বা বিষণ্ণতাজনিত সমস্যা। তাই এই ধরনের সমস্যাকে সাধারণ মানসিক রোগও হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়। উদ্বেগজনিত সমস্যার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু রোগ। যার মধ্যে অন্যতম হল - প্যানিক ডিজঅর্ডার, ট্রম্যাটিক স্ট্রেস সংক্রান্ত রোগ। এই সব সমস্যা ছাড়াও গুরুতর মানসিক রোগের মধ্যে পড়ে স্কিৎজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার ইত্যাদি। তবে সাধারণ মানসিক সমস্যার তুলনায় গুরুতর মানসিক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে। শুধু তা-ই নয়, বেশ কিছু মানসিক সমস্যা শৈশবকালেই দেখা যায়। যার মধ্যে অন্যতম হল - অটিজম, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভ ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি), মুড ডিজঅর্ডার, ইটিং ডিজঅর্ডার, পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার ইত্যাদি। তবে আজকাল সাবস্ট্যান্স ইউজ ডিজঅর্ডারও আকছার দেখা যাচ্ছে। এগুলোর ধরন অনেক, যেমন-
advertisement
শিশুদের মধ্যে হওয়া আচরণগত এবং মানসিক সমস্যা
ডিসোসিয়েশন এবং ডিসোসিয়েটিভ ডিজঅর্ডার
বাইপোলার ডিজঅর্ডার
মানসিক চাপ বা স্ট্রেস এবং বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন
অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার
ইটিং ডিজঅর্ডার
অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার
প্যারানোয়া
সাইকোসিস
স্কিৎজোফ্রেনিয়া
দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ:
ডা. প্রেরণা কুকরেতির কথায়, মানসিক রোগ এক জন ব্যক্তির চিন্তা-ভাবনা, আচরণ এবং অনুভূতিকে অনেকাংশে প্রভাবিত করতে পারে। এমনকী মন-মেজাজের ক্ষেত্রেও বেশ প্রভাব ফেলে। কারওর মধ্যে যদি আত্মমর্যাদাবোধ, উদ্যমের অভাব থাকে, কিংবা আচমকাই আতঙ্ক ও উদ্বেগ মনকে গ্রাস করে তখন এই সব লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে। এখানেই শেষ নয়, দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্যের আরও নানা উপসর্গ থাকে। যার মধ্যে অন্যতম হল - মানসিক চাপ, উদ্বিগ্ন হওয়া, মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতা এড়িয়ে যাওয়া, বাইরে বেরোতে না-চাওয়া, কাজেকর্মে অনিচ্ছা ইত্যাদি। তবে এই সব ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, এই উপসর্গগুলি কতক্ষণ ধরে মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। যদি এমন মাঝেমধ্যে হয়, তখন সেটা স্বাভাবিক বলেই ধরে নিতে হবে। তবে যদি এই উপসর্গগুলি টানা ২-৩ সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে এবং তা ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলতে শুরু করে, তা-হলে সময় নষ্ট না-করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
advertisement
মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে যে কাজগুলো করতে হবে:
একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, মানসিক স্বাস্থ্য বা মন ভাল থাকলে শরীরও ভাল থাকে। আর এর জন্য নিয়মমাফিক জীবনযাপন করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনকে আনন্দে রাখতে হবে। আর মানসিক চাপ বা স্ট্রেস এড়িয়ে চলতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমও অত্যন্ত জরুরি। কারণ এটাও মানসিক স্বাস্থ্যকে অনেকাংশে প্রভাবিত করে। তা-ছাড়া মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে নিজের মনের কথা কাছের মানুষের সঙ্গে শেয়ার করে নিতে হবে। আর জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে। মনকে আনন্দ দেয়, এমন কিছু পড়তে হবে অথবা লেখার ঝোঁক থাকলে তা লিখে ফেলতে হবে। শুধু তা-ই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বড় ভূমিকা পালন করে যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশনও। তাই সেগুলিও নিয়মিত অনুশীলন করে যেতে হবে। আর সবথেকে বড় কথা হল, মানসিক রোগ যে কারও হতে পারে, এটা কোনও রকম কলঙ্ক নয়!
স্বাস্থ্য এবং লাইফস্টাইলের (Lifestyle News in Bengali)সব খবরের আপডেট পান নিউজ 18 বাংলাতে ৷ যেখানে থাকছে হেলথ টিপস, বিউটি টিপস এবং ফ্যাশন টিপসও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইনগুলি অনলাইনে নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ সব খবরের আপডেট পেতে ! News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
October 10, 2022 5:01 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
Mental Health: মানসিক অসুস্থতা কিন্তু কোনও ‘কলঙ্ক’ নয়, বরং এই লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করলেই বিপদ!