Traditional Durga Puja: রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর থেকে উত্তমকুমারের স্মৃতি...জারার জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও অটুট ঐতিহ্য
- Published by:Rukmini Mazumder
- hyperlocal
- Reported by:Syed Mijanur Mahaman
Last Updated:
চারদিকে থিম পুজোর চাকচিক্য! কিন্তু তার মধ্যেই অমলিন রাজা রামমোহন রায়,বিদ্যাসাগর ও মহানায়ক উত্তমকুমারের স্মৃতি বিজড়িত চন্দ্রকোণার জাড়া জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো।
চন্দ্রকোণা, পশ্চিম মেদিনীপুর, মিজানুর রহমান: চারদিকে থিম পুজোর চাকচিক্য! কিন্তু তার মধ্যেই অমলিন রাজা রামমোহন রায়,বিদ্যাসাগর ও মহানায়ক উত্তমকুমারের স্মৃতি বিজড়িত চন্দ্রকোণার জাড়া জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণা এক নম্বর ব্লকের জাড়া গ্রামের জমিদার বাড়ি। রাজা রামমোহন রায়,ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও মহানায়ক উত্তমকুমারের স্মৃতি বিজড়িত এই জমিদার বাড়ি। রাজা রামমোহন রায়ের বন্ধু ছিলেন জমিদার রাজীবলোচন রায়। জাড়া জমিদার বাড়ির সঙ্গে সখ্যতা ছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের। জমিদার পরিবারের আমন্ত্রণে জাড়া স্কুলের স্থাপনা করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। সেই সময়ে জমিদার বাড়িতে বেশ কয়েকবার এসেছিলেন বিদ্যাসাগর, এমনই দাবি বর্তমান জাড়া জমিদার বাড়ির পরিবারের সদস্যদের।
advertisement
এই বাড়িতেই মহানায়ক উত্তমকুমার ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ছবির শুটিং করেছিলেন, শ্যুট হয়েছিল ছবির বিখ্যাত গান ‘কি করে বললি জগা জাড়ার গোলক বৃন্দাবন,যেখানে বামুন রাজা চাষি প্রজা,চারিদিকে তার বাঁশের বন’-এর। বলা হয়, গানটি বেঁধেছিলেন বিখ্যাত কবিয়াল ভোলা ময়রা।
advertisement
জমিদার বাড়িতে দুর্গাপুজোর পাশাপাশি কালী, বিষ্ণু, শিব-সহ একাধিক দেবদেবীর মূর্তি ও মন্দির রয়েছে। এখনও তিন বেলা ভোগ দিয়ে নিত্যসেবা হয়। ১১৫৫ বঙ্গাব্দে জাড়া জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রামগোপাল রায়। পরবর্তী সময়ে তাঁর ছেলে রাজা রাজীবলোচন রায় বর্ধমান রাজার থেকে ‘রাজা’ উপাধি লাভ করেন। তার পর থেকে জমিদারি আরও বিস্তার লাভ করে এবং তিনিই জমিদার বাড়িতে দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন। তৎকালীন সময়ে পুজোতে বহু মনীষী আমন্ত্রিত হিসাবে আসতেন বলে জানান জমিদার বাড়ির বর্তমান সদস্যরা।
advertisement
আগে পুজোর সময় কবি গানের আসর বসত, হত যাত্রাপালা। আশপাশের ১০-১৫ টি গ্রামের মানুষ ভিড় জমাত পুজোয়, চলতো নরনারায়ণ সেবা। রুপোর পালকিতে করে গ্রামের একটি পুকুরে শোভাযাত্রা করে নবপত্রিকা স্নান হত। বর্তমানে জমিদারিত্ব নেই, তবে রয়ে গিয়েছে জমিদার বাড়ির বিশাল প্রাসাদ, যা এখন ভগ্নপ্রায়, আগাছায় ঢাকা।
জমিদার বাড়িতে ২১ টি পরিবার এখনও বসবাস করেন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই এখন কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে বা ভিন দেশে। পুজোর সময় অনেকেই হাজির হয় জমিদার বাড়ির দুর্গা পুজোয়। এ’বছর জাড়া জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো ২২৬ তম বর্ষে পদার্পণ করবে। পুজোয় আগের মতো জৌলুস না থাকলেও, এখনও সমস্ত রীতিনীতি মেনেই পুজোর আয়োজন হয়। বৈষ্ণব মতে জমিদার বাড়িতে দুর্গা পুজো হওয়ায় কোনও বলি হয় না। নবপত্রিকা স্নান করিয়ে, শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিসর্জনের দিন পরিবারের সব সদস্য মিলে বিসাদের সুরে গান গেয়ে মাকে নিয়ে যান গ্রামের পুকুরে, বিসর্জনের জন্য। জমিদার বাড়িতে পুজোর দিনগুলিতে মায়ের জন্য ভোগ রান্না করেন বাড়ির মহিলারা।দূরদুরান্তের গ্রামের বহু মানুষ ভিড় জমান পুজোর ক’দিন। তাঁদের জন্য খিচুড়ি প্রসাদের আয়োজন থাকে। বাইরে থেকে প্রতিমা আনা হয় না জমিদার বাড়িতে। দালান বাড়িতেই বংশপরম্পরা মৃৎশিল্পী দিয়ে তৈরি হয় প্রতিমা।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
September 07, 2025 5:29 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
Traditional Durga Puja: রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর থেকে উত্তমকুমারের স্মৃতি...জারার জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও অটুট ঐতিহ্য