হোম /খবর /লাইফস্টাইল /
করোনার চেয়েও ভয়ানক এই ৪ মারণব্যাধির কথা এখনও ভোলেনি বিশ্ব !

করোনার চেয়েও ভয়ানক এই ৪ মারণব্যাধির কথা এখনও ভোলেনি বিশ্ব !

দেখে নেওয়া যাক করোনার আগে কী কী মারণ ভাইরাস জর্জরিত করেছে আমাদের পৃথিবীকে

  • Last Updated :
  • Share this:

করোনা-থাবায় ধুঁকছে বিশ্ব। এই মারণ ভাইরাসে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন ক্রমবর্ধমান। সামাজিক দূরত্ব, মাস্কের ব্যবহার, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, সব মিলিয়ে এক নতুন পৃথিবীতে বাঁচার লড়াই করছেন মানুষজন। তবে এই পরিস্থিতি নতুন কিছু নয়। এর আগেও বহু মারণ ভাইরাস ও মহামারির সঙ্গে লড়াই করেছে বিশ্ব। ইবোলা, এইডস, হেপাটাইটিসসহ একাধিক রোগে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আসুন ডুব দেওয়া যাক ইতিহাসের সেই আতঙ্কের অধ্যায়গুলিতে। দেখে নেওয়া যাক করোনার আগে কী কী মারণ ভাইরাস জর্জরিত করেছে আমাদের পৃথিবীকে।

ইবোলা - ২০১৩-২০১৬ সাল। হঠাৎই পশ্চিম আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। এর জেরে প্রায় ২৮,৬১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে গুয়েনায় প্রথমবার দেখা যায় ইবোলা। তার পর ধীরে ধীরে লিবেরিয়া, সিরিয়া, লিওনাসহ একাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই মারণ ভাইরাস। ২০১৬ সালের শেষের দিকে শেষমেশ নিয়ন্ত্রণে আনা যায় ইবোলা উদ্ভূত পরিস্থিতিকে। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার ২-২১ দিনের মধ্যেই ইবোলার উপসর্গ দেখা যায় একজনের শরীরে। এটি বমি, রক্ত, মলের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে অন্যের শরীরে।

এইডস- অ্যাকুয়ার্ড ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম বা এইডস। এই মারণ রোগের জন্য দায়ি হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা এইচআইভি। ১৯৮১ সালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তার পর থেকে ৩৫ মিলিয়নের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র রিপোর্ট অনুযায়ী এইডসের জেরে বিশ্বে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ আফ্রিকা। কারণ এখানেই ৭ মিলিয়নের বেশি মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত।

আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় এক ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা। আর এই শ্বেত কণিকাকেই ধ্বংস করে দেয় এইচআইভি ভাইরাস। একবার শরীরে প্রবেশ করার পর এই ভাইরাস ধীরে ধীরে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। এর জেরে অন্যান্য রোগেও সহজে আক্রান্ত হয় আমাদের শরীর।

এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে অসুরক্ষিত শারীরিক সম্পর্কে, একই ইনজেকশন ব্যবহারে কিংবা আক্রান্তের রক্ত অন্যের শরীরে প্রবেশ করলে, এইডস ছড়িয়ে পারে। এ ছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা মায়ের কাছ থেকে শিশুর শরীরে, ছোট্ট শিশুকে দুধ খাওয়ালেও খুব সহজে ছড়িয়ে পড়ে এইডস।

সার্স-কভ- সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সার্স। ২০০২-২০০৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে এশিয়া ও কানাডায় এই ভাইরাসের বিস্তার দেখা যায়। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিশ্বের ৩৭টি দেশে হু-হু করে ছড়িয়ে পড়ে এই করোনাভাইরাস। সার্স-এ আক্রান্ত হওয়ার পর সাধারণত খুব জ্বর, গা জ্বালা-জ্বালা ভাব এবং পরের দিকে নিউমোনিয়া দেখা যেত। আর তার পরই মৃত্যু হত মানুষজনের।

২০০২ সালের নভেম্বরে হংকং-এ এই ভাইরাসের জন্ম। তার পর ২০০৩ সালের জুলাই মাসের মধ্যে এটি গোটা বিশ্বের পক্ষে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আপাতত এই রোগের আর কোনও অস্তিত্ব নেই। কারণ ২০০৩ সালের পর এখনও পর্যন্ত আর নতুন করে কোনও রোগী দেখা যায়নি। তবে সার্স-কভ-কে নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের আশঙ্কা এখনও এই মারণ ভাইরাস অন্য যে কোনও প্রাণীর শরীরে বসবাস করতে পারে। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে তা আবার নতুন করে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

হেপাটাইটিস- ২০১৫ সালে এই ভাইরাল হেপাটাইটিসের জেরে বিশ্বজুড়ে ১.৩৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, শুধুমাত্র ভাইরাল হেপাটাইটিসের জেরে মৃত্যুর হার ২২ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল।

সাধারণত পাঁচ ধরনের হেপাটাইটিস থাকে। এগুলি হল হেপাডাইটিস এ, বি, সি, ডি, ই। তবে এই রোগে প্রায় ৯৬ শতাংশ মৃত্যুর পিছনে দায়ি থাকে বি ও সি হেপাটাইটিস। এ ক্ষেত্রে প্রথমে ক্রনিক ডিজিজ ঘিরে ধরে শরীরকে। লিভারের সমস্যা শুরু হয়। পরে লিভার ক্যানসার হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪.৪ শতাংশ ভাইরাল হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে গুরুতর আকার নেয় হেপাটাইটিস সি।

উল্লেখ্য, হেপাটাইটিস বি-এর জন্য ভ্যাকসিন বা হেপাটাইটিস সি-এর জন্য অ্যান্টিভাইরাল রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাইরাল হেপাটাইটিসকে চিহ্নিত করতে পারেন না রোগীরা। আর তাতেই অনেকটা দেরি হয়ে যায়। তা ছাড়া হোপাটাইটিসের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার খরচ ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারেন না। আর এই সব কিছুর মাঝে জাঁকিয়ে বসে হেপাটাইটিস। আপনার অজান্তেই ডেকে আনে মৃত্যুকে।

Published by:Ananya Chakraborty
First published:

Tags: AIDS, Coronavirus, COVID-19, Hiv