Health Tips| Prostate Cancer|| অতিরিক্ত প্রোটিনই কি প্রস্টেট ক্যানসারের যম? আপনার রোজের মেনুতে এই সব খাবার নেই তো?
- Published by:Shubhagata Dey
Last Updated:
High-protein food can increase risk of Prostate Cancer: খাদ্যাভ্যাস ঠিকঠাক না-থাকলে ছোটখাটো রোগ থেকে শুরু করে ক্যানসারের মতো বড় মারণ রোগ- এ সবেরই সম্ভাবনা বাড়বে।
#কলকাতা: শরীর সুস্থ রাখার জন্য খাদ্যাভ্যাস (Diet) একটা গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার ভুলভাল খাদ্যাভ্যাসই নানান ধরনের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অর্থাৎ খাদ্যাভ্যাস ঠিকঠাক না-থাকলে ছোটখাটো রোগ থেকে শুরু করে ক্যানসারের মতো বড় মারণ রোগ- এ সবেরই সম্ভাবনা বাড়বে। তাই সবারই উচিত রুটিন মেনে স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া করা এবং খাদ্যাভ্যাসের ভারসাম্য বজায় রাখা।
সাম্প্রতিক গবেষণায় একটা চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গবেষণার রিপোর্ট বলছে, আমরা রোজ যে সব খাবার স্বাস্থ্যকর ডায়েট প্ল্যানে রেখে খাই, সেই সব খাবারই প্রস্টেট ক্যানসারের (Prostate Cancer) ঝুঁকি প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।
ডায়েট এবং ক্যানসারের যোগসূত্র:
advertisement
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, ক্যানসার প্রতিরোধে সব থেকে বড় ভূমিকা পালন করে স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে থাকা পুষ্টিকর উপাদান কোলিন। আর কোলিন (Choline) পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীরে প্রবেশ না-করলে নানান রকম ঘাতক রোগের সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। অন্য দিকে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত যে, এই নিউট্রিয়েন্ট অতিরিক্ত বা খুব বেশি পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করলে সেটা আবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পরিমাণে এই নিউট্রিয়েন্ট লিথাল প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রস্টেট ক্যানসার সেল এবং রক্তের কনসেন্ট্রেশনের মধ্য কোলিন পাওয়া গিয়েছে। আর এটা ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।
advertisement
আরও পড়ুন: খিদে পেলে পেট খালি রাখবেন না! ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন বাজরা দিয়ে তৈরি এই পাঁচটি খাবারে
কোলিনের ভূমিকা:
কোলিন একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্ট (Nutrient)। যা কোষের উপরের পর্দা বা আস্তরণের গঠন ঠিকঠাক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর নিউরোট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে এটা খুবই জরুরি। শুধু তা-ই নয়, মস্তিষ্কের বিকাশ এবং জিনের অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়তা করে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এক জন প্রাপ্ত বয়স্কের প্রতি দিন ৪৫০ মিলিগ্রাম করে কোলিন গ্রহণ করতে হবে। একটি ডিমে ১৫০ গ্রামেরও কম কোলিন থাকে। তাই স্বাস্থ্যকর ডায়েটে থাকবে মাংস ও ডিমের মতো খাদ্য। তবে সবটাই সীমিত পরিমাণে খেতে হবে, এতে শরীর থাকবে সুস্থ।
advertisement
আরও পড়ুন: ঠোঁট হবে প্রিয়াঙ্কার মতোই গোলাপি; নায়িকার রূপচর্চার রহস্য এবার আপনার হাতের মুঠোয়!
এ বার ধরা যাক, ডিমের কথা। আমরা প্রায় সকলেই জানি যে, বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক দেশেই ডিম অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং প্রধান খাদ্য হিসেবে গণ্য হয়। আর ডিম হল কোলিন সমৃদ্ধ খাবার। শুধু ডিমই নয়, মাংস, পোলট্রি এবং দুগ্ধজাত খাবারও প্রোটিনের দারুণ উৎস। তবে এক জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দিনে ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি কোলিন গ্রহণ করা ঠিক নয়। আর প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রতি দিন ৪২৪ মিলিগ্রাম মতো কোলিন গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
advertisement
প্রস্টেট ক্যানসারের জন্য কি শুধুমাত্র কোলিনই দায়ী?
যে সব রোগীর প্রস্টেট ক্যানসার রয়েছে, প্রথমেই তাঁদের দেহের কোলিনের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা হয়। শুধু তা-ই নয়, রোগী অতীতে কেমন জীবনযাপন করে এসেছেন, সেটাও যাচাই করে দেখা হয়। অর্থাৎ তাঁদের খাদ্যাভ্যাস এবং তাঁরা কতটা কর্মক্ষম ছিলেন বা শারীরিক কসরত করতেন, সেই বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখেন চিকিৎসকরা। ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, ক্যানসারের ঝুঁকির জন্য একটা নির্দিষ্ট কোনও খাবারকে বোধহয় দায়ী করা যায় না।
advertisement
গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ ডায়েটও কিন্তু মারণ প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। আসলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট খারাপ কোলস্টেরলের (Bad Cholesterol) মাত্রা অনেকটাই বৃদ্ধি করে। ফলে প্রস্টেট ক্যানসারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
কোন কোন খাবারে কোলিন থাকে?
কোলিন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় থাকবে- ডিম, মাংস, রাঙা আলু, টার্কির মাংস, আমন্ড, কিনোয়া, রাজমা, ফুলকপি, সোয়া, ব্রকোলি প্রভৃতি।
advertisement
ডিম:
ডিম হল কোলিনের সব থেকে ভালো উৎস। একটা ডিমে প্রায় ১৪৭ মিলিগ্রাম মতো কোলিন থাকে। মানে দিনে ২টো করে ডিম খেলে প্রতি দিনের হিসেব অনুযায়ী ৫৪ শতাংশ কোলিন গ্রহণ করা হয়ে যায়।
অর্গ্যান মিট:
লিভার অথবা কিডনির মাংস এই তালিকায় পড়ে। এই ধরনের মাংস কোলিন সমৃদ্ধ।
advertisement
মাছ:
স্যামন, টুনা, কড-সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ কোলিনের দারুণ উৎস। ৮৫ গ্রাম স্যামন মাছে রয়েছে ১৮৭ মিলিগ্রাম কোলিন।
সোয়াবিন:
সোয়াবিন হল উদ্ভিজ্জাত কোলিনের উৎস। এক কাপ বা ৯৩ গ্রাম রোস্টেড সোয়াবিনে থাকে ২১৪ মিলিগ্রাম কোলিন। যা প্রতি দিনের জরুরি কোলাইনের প্রায় ৩৯ শতাংশ।
আমন্ড:
আমন্ড হল কোলিনের উদ্ভিজ্জাত উৎস। ২৮ গ্রাম আমন্ডে রয়েছে ১৫ মিলিগ্রাম কোলিন।
ফুলকপি ও ব্রকোলি:
এই দুই সবজিও কোলিন সমৃদ্ধ। এক কাপ বা ১৬০ গ্রাম রান্না করা ফুলকপিতে রয়েছে ৭২ মিলিগ্রাম কোলিন। আবার ১৬০ গ্রাম রান্না করা ব্রোকোলি থেকে পাওয়া যাবে ৩০ মিলিগ্রাম কোলিন।
রাঙা আলু:
রাঙা আলুও কোলিনের দারুণ উৎস। কারণ একটা বড় মাপের রাঙা আলু থেকে মোটামুটি ৫৭ মিলিগ্রাম কোলিন মিলবে।
রাজমা:
রাজমা এমনিতেই পুষ্টিকর খাদ্য। সেই সঙ্গে এটি কোলিনেরও ভালো উৎস। এক কাপ বা ১৭৭ গ্রাম রান্না করা রাজমায় থাকে ৫৪ গ্রাম কোলিন।
কিনোয়া:
কিনোয়া-ও কোলিন সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান। এক কাপ বা ১৮৫ গ্রাম কিনোয়ার মধ্যে রয়েছে ৪৩ মিলিগ্রাম কোলিন।
মুরগির মাংস এবং টার্কি:
মুরগির মাংস বা চিকেন এবং টার্কির মাংসও কোলিন সমৃদ্ধ। প্রতি ৮৫ গ্রাম চিকেন অথবা টার্কিতে রয়েছে ৭২ মিলিগ্রাম কোলিন।
নির্দিষ্ট এবং সীমিত পরিমাণে কোলিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে ফেলা যায়। শুধু তা-ই নয়, কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনেও এই ঝুঁকি কমিয়ে ফেলা যায় । যেমন- স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, ঠিকঠাক শারীরিক কসরত করতে হবে ইত্যাদি। সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে নেওয়া যাক।
প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর উপায়-
স্বাস্থ্যকর খাবার:
সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে হোল গ্রেইন এবং শুঁটি জাতীয় খাবারও খেতে হবে।
সাপ্লিমেন্ট নয়:
সাপ্লিমেন্ট থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারণ সাপ্লিমেন্ট আদৌ ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় কি না, সেই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও জোরালো প্রমাণ মেলেনি। তবে যদি সাপ্লিমেন্ট খেতেই হয়, তা হলে সবার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
শারীরিক কসরত:
সম্ভব হলে প্রতি দিন অথবা সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনেই নির্দিষ্ট পরিমাণ শারীরিক কসরত বা ব্যায়াম করতে হবে। কারণ এটা শুধু শরীরের জন্যই নয়, মনের জন্যও দারুণ। জিমে যেতেই হবে, তার কোনও মানে নেই। রোজ নিয়ম করে আধ ঘণ্টা মতো হাঁটলেই হবে। আগে যাঁরা ব্যায়াম করেননি, তাঁরা সেটা শুরু করার আগে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ অবশ্যই নেবেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণ:
শরীর সুস্থ রাখতে দেহের ওজন সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। আর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার এবং শারীরিক কসরত জরুরি। আর ওজন না-কমলে ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।
ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা:
ডাক্তারবাবুর সঙ্গে প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজন হলে প্রস্টেট পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। বয়স পঞ্চাশ পেরোলেই নিয়মিত ভাবে প্রস্টেট পরীক্ষা করানো উচিত। তাতে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
স্বাস্থ্য এবং লাইফস্টাইলের (Lifestyle News in Bengali)সব খবরের আপডেট পান নিউজ 18 বাংলাতে ৷ যেখানে থাকছে হেলথ টিপস, বিউটি টিপস এবং ফ্যাশন টিপসও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইনগুলি অনলাইনে নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ সব খবরের আপডেট পেতে ! News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
November 17, 2021 4:13 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
Health Tips| Prostate Cancer|| অতিরিক্ত প্রোটিনই কি প্রস্টেট ক্যানসারের যম? আপনার রোজের মেনুতে এই সব খাবার নেই তো?