মেনস্ট্রুয়াল কাপ নিয়ে বহু মহিলাই বেশ কৌতূহল প্রকাশ করে থাকেন। অনেকে ইতিমধ্যেই তা ব্যবহার করছেন, কেউ কেউ আবার ভয়ে পিছিয়ে আসছেন। কিন্তু বিষয়টা আসলে কী?
মেনস্ট্রুয়াল কাপ হল মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন সংক্রান্ত একটি ছোট্ট সরঞ্জাম বা ডিভাইস। সাধারণত মেনস্ট্রুয়েশন বা পিরিয়ডসের সময় তা ভ্যাজাইনার মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। আর জরায়ু থেকে নির্গত মেনস্ট্রুয়াল ফ্লুয়িডই জমা হয় এই মেনস্ট্রুয়াল কাপে। এই কাপগুলি তৈরি হয় ফ্লেক্সিবল মেডিক্যাল গ্রেড সিলিকন, ল্যাটেক্স অথবা থার্মোপ্লাস্টিক আইসোমার। খানিকটা ঘণ্টার আকৃতির এই কাপে একটা নলের মতো ডাঁটিও থাকে। মূলত শরীরে প্রবেশ করানো এবং তা বার করে আনার জন্যই ওই ডাঁটির মতো অংশটি রাখা হয়। আসলে ঘণ্টার আকৃতির এই কাপটি ভ্যাজাইনার প্রাচীরে একটা শূন্য স্থান তৈরি করে এবং ভ্যাজাইনার অভ্যন্তরে জরায়ুর ঠিক নিচে তা ঠিকঠাক ভাবে বসে যায়। এর পর জরায়ু থেকে যে মেনস্ট্রুয়াল ফ্লুয়িড বেরোয়, তা এখানে জমা হয়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ট্যাম্পন অথবা স্যানিটারি প্যাডের তুলনায় এই কাপ অনেকটাই নিরাপদ।
স্যানিটারি প্যাড অথবা ট্যাম্পন নয় কেন?
স্যানিটারি প্যাড অথবা ট্যাম্পন তৈরি হয় মূলত কাঠের মণ্ডর অবশিষ্টাংশ, সুপার অ্যাবজরবেন্ট পলিমার, সুগন্ধী উদ্দীপক উপকরণ ইত্যাদি থেকে। মেনস্ট্রুয়াল রক্ত যাতে শোষিত হয়, তার জন্য এই সব উপকরণগুলিকে রাসায়নিকের সঙ্গে মেশানো হয়। যার ফলে মেনস্ট্রুয়াল রক্তকে এটা পেস্ট অথবা জেলির ন্যায় পদার্থে রূপান্তরিত করে। আর এই পদার্থগুলি ব্যাকটেরিয়াকে আকর্ষণ করে এবং দুর্গন্ধযুক্ত ডিসচার্জ তৈরি হয়। এর ফলে ভ্যাজাইনাতে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। এখানেই শেষ নয়, ভ্যাজাইনা সংলগ্ন ত্বকেও লাগাতার চুলকানি কিংবা র্যাশ হতে থাকে। এমনকী রিপোর্ট বলছে, দীর্ঘ দিন প্যাড ব্যবহার করার ফলে গুরুতর পেলভিক সংক্রমণ এবং জটিল ব্যাকটেরিয়াল-ফাঙ্গাল সংক্রমণও হতে পারে।
আরও পড়ুন: কোভিডে মাস্কের ব্যবহার, নয়া রোগের দাপট! ‘মাস্কনি’র শিকার নন তো? বলছেন বিশেষজ্ঞ
তবে মেনস্ট্রুয়াল কাপ রক্তের ঘনত্ব বজায় রাখে। রক্ত তরলই থাকে, যার ফলে ভ্যাজাইনাতে সমস্যা হয় না। আসলে এতে কৃত্রিম রাসায়নিক ব্যবহৃত হয় না। যার ফলে মহিলাদের জন্য এটা অনেক নিরাপদ এবং এর তেমন ঝুঁকিও থাকে না।
আরও পড়ুন: ভয়ানক বিপদ ডেকে আনতে পারে! গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বাড়ছে না তো? বলছেন বিশেষজ্ঞ
মেনস্ট্রুয়াল কাপ কেন?
এর সব থেকে বড় উপযোগিতা হল এগুলি প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত পুনর্ব্যবহারযোগ্য। এটা খুব সহজেই প্রতি ৪-১২ ঘণ্টা অন্তর খুলে পরিষ্কার করে আবার প্রবেশ করানো যায়। এ-ছাড়াও এই ধরনের কাপ পরিবেশবান্ধব। কারণ বর্জ্য নির্গত হচ্ছে না। যেখানে স্যানিটারি প্যাড কিংবা ট্যাম্পন পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে প্রায় ২৫ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
তবে বাজারে বিভিন্ন ধরনের এবং নানা আকারের মেনস্ট্রুয়াল কাপ রয়েছে। তাই এটা ব্যবহার করার আগে এক বার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া উচিত।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Health, Menstrual cups, Sanitary pad, Tampons