বেঙ্গালুরু: শারীরিক-মানসিক বিষয়-সহ আমাদের দৈনিক কাজকর্মগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক। ফলে মস্তিষ্কের একটা ছোট্ট ক্ষত সমস্তটাকেই ওলট-পালট করে দিতে পারে। এই প্রসঙ্গে কথা বলছেন বেঙ্গালুরুর ইলেকট্রনিক সিটির কাবেরী হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট-নিউরোসার্জারির এমএস, এমসিএইচ ডা. কৃষ্ণ চৈতন্য। তিনি জানান, ডাক্তারি জীবনে অগণিত মারাত্মক হেড ইনজুরি দেখেছেন। ফলে ওই বিশেষজ্ঞের মতে, প্রতিরোধ চিকিৎসার তুলনায় ভাল। ফলে মাথার আঘাত এড়িয়ে চলতে হবে।
মাথায় আঘাতের কিছু ঘটনা:
১. নতুন বাইক পেয়ে বেপরোয়া গতির কবলে পড়েন মধ্য কুড়ির এক তরুণ। দুর্ঘটনার জেরে মস্তিষ্কে মারাত্মক চোট লাগে। তবে চোট এতটাই গভীর ছিল যে তাঁর সেরে উঠতে প্রচুর সময় লাগে। একাধিক অস্ত্রোপচারের ৬ বছর পরেও তিনি শয্যাশায়ী।
২. ফ্ল্যাটের ঝুলবারান্দায় খেলছিল বছর পাঁচেকের শিশু। অসাবধানতাবশত চার তলা থেকে নিচে পড়ে গিয়ে মাথায় গভীর চোট পায়।
৩. প্রসিদ্ধ কার্ডিওলজিস্ট হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। সারা দিনের ক্লান্তি আর দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো - এই দুইয়ের জেরে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। যার জেরে সার্জারি-রিহ্যাবে থেকেও রেহাই মেলেনি। এখনও শয্যাশায়ী তিনি।
৪. গ্যারাজ থেকে গাড়ি বার করছিলেন এক ব্যক্তি। সেই সময় খেয়াল করেননি একটি বাচ্চা সেখানে খেলছে। ফলে গাড়িতে চাপা পড়ে শিশুটি। ভদ্রলোকের গাফিলতি আর বোকামির মাসুল দিল বাচ্চাটা।
আরও পড়ুন: সন্তানের হাতে মোবাইল ফোন মানেই শত শত রোগের হাতছানি! সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা
৫. অতিরিক্ত যানজটের মধ্যে ক্যাব চালক ফোনে ব্যস্ত। পিছনে থাকা বয়স্ক গাড়ি চালক বিরক্ত হয়ে বারবার হর্ন বাজাচ্ছিলেন। এতে সামনের ক্যাব চালক ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তা থেকে পাথর তুলে ছুড়ে মারে বয়স্ক চালকের দিকে। ফলে গুরুতর আহত হন ওই বৃদ্ধ চালক।
মস্তিষ্কের আঘাত প্রতিরোধের জন্য জনসাধারণের করণীয়:
ট্রাফিক আইন মেনে চলা আর সহ-চালকদের প্রতি সহনশীল হওয়া জরুরি।
ছোট শিশুদের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। তাদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
গাড়ি চালানোর সময় অন্য কাজ করা কিংবা অন্য দিকে মন দেওয়া ঠিক নয়।
বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো উচিত নয়।
মদ্যপান করে গাড়ি চালানো নিরাপদ নয়।
মস্তিষ্কের আঘাত প্রতিরোধের জন্য সরকারের করণীয়:
পরিকাঠামো মজবুত করা বাঞ্ছনীয়। ওয়ার্ল্ড হেড ইনজুরি অ্যাওয়ারনেস দিবসে দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
রাস্তা সঠিক অবস্থায় আছে কি না তার উপর নজর দিতে হবে। রাস্তা যাতে বারবার না খোঁড়া হয়, তার জন্য ডিপার্টমেন্টের মধ্যে কো-অর্ডিনেশন বজায রাখতে হবে।
সঠিক পথ নির্দেশের সাইনবোর্ড, ট্রাফিক সিগন্যাল ও ট্রাফিক আইন করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
সহজলভ্য ও প্রশস্ত ফুটপাথ, আন্ডারগ্রাউন্ড/ওভারহেড চলাচলের ক্রসিং ভাল করতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার আগে শারীরিক ও মানসিক হেলথ চেক-আপ জরুরি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।