হোম /খবর /লাইফস্টাইল /
বিপজ্জনক রূপ নিচ্ছে দেশের নদীর জল, কারণ ওষুধের উৎপাদন! কী ঘটছে জানুন...

Rivers India: বিপজ্জনক রূপ নিচ্ছে দেশের নদীর জল, কারণ ওষুধের উৎপাদন! কী ঘটছে জানুন...

দূষণে ভুগছে নদী

দূষণে ভুগছে নদী

Rivers India: ফার্মাসিটিক্যাল দূষণ নদীর জলকে প্রভাবিত করছে মূলত নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলিকে। যার মধ্যে অন্যতম ভারতবর্ষ।

  • Share this:

#নয়াদিল্লি: বিশ্ব জুড়ে নদীর জলে দূষণ বাড়ছে। গত সোমবার বিশ্বের সবকটি নদীর জলের দূষণ নিয়ে একটি সমীক্ষা হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে বিভিন্ন নদীর জল। রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক, পেইনকিলার, অ্যান্টি ডায়াবেটিক, অ্যান্টি এপিলেপটিক সহ বিভিন্ন ওষুধের ক্ষতিকারক ফার্মাসিটিক্যাল পদার্থ দূষিত করছে নদীর জলকে। আশঙ্কিত বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যা বাস্তুতন্ত্র এবং মানব শরীরের ওপর ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলেছে। ফার্মাসিটিক্যাল দূষণ নদীর জলকে প্রভাবিত করছে মূলত নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলিকে। যার মধ্যে অন্যতম ভারতবর্ষ। ওষুধের উৎপাদন পরিবেশের সঙ্গে নদীর দূষণ বৃদ্ধি করছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এসব বর্জ্যের মধ্যে প্যারাসিটামল, নিকোটিন, ক্যাফেইন, মৃগী ও ডায়াবেটিসের ওষুধের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে পাওয়া গিয়েছে। বিশ্বব্যাপী পরিচালিত বড় ধরনের গবেষণার একটি বিশেষ পর্যবেক্ষণে নদী দূষণের মাত্রা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পাকিস্তান, বলিভিয়া ও ইথিওপিয়ার নদীগুলো বেশি দূষিত। আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও অ্যামাজন রেইনফরেস্টের নদীগুলোর অবস্থা সবচেয়ে ভালো। যদিও নদীর জলে থাকা বেশির ভাগ সাধারণ ফার্মাসিউটিক্যাল যৌগের প্রভাব এখনও অনেকটাই অজানা।

তবে এটি প্রমাণিত নদীর জলে দ্রবীভূত মানুষের গর্ভনিরোধক ওষুধের উপাদান মাছের প্রজনন ও বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, নদীতে অ্যান্টিবায়োটিকের বর্ধিত উপস্থিতি মাছের প্রজনন ও বিকাশের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।

গবেষণায় ১০০টির বেশি দেশের এক হাজারের বেশি পরীক্ষামূলক স্থান থেকে ১০৫২টি নমুনা নেওয়া হয়েছে। নমুনা সংগৃহীত ২৫৮টি নদীর এক–চতুর্থাংশের বেশি নদীর জলে ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদানের সক্রিয় উপস্থিতির মাত্রা এমন পরিমাণে পাওয়া গিয়েছে, যা জলজ প্রাণীর জন্যও বিপজ্জনক।

নদীর জলে যে দুটি ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান সবচেয়ে বেশি সনাক্ত হয়েছে, তা হলো- কার্বামাজেপাইন ও মেটফরমিন। কার্বামাজেপাইন মৃগীরোগ ও স্নায়বিক ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং মেটফরমিন ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এই উপাদানদুটি জলে মিশে জলের গুণগত চরিত্র নষ্ট করছে। সেইসঙ্গে বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করছে। জলজ প্রাণী থেকে মাছ সহ নানা প্রাণীর মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠছে।

আরও পড়ুন: চল্লিশ বছরের পরে কি ডিম খাওয়া উচিত? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

এ ছাড়া, ব্যথানাশক প্যারাসিটামলের পাশাপাশি দৈনন্দিন ব্যবহৃত ক্যাফেইন (কফি) ও নিকোটিনের (সিগারেট) উচ্চ ঘনত্ব পাওয়া গিয়েছে নদীর জলে।

আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ারোধী ওষুধ আর্টেমিসিনিনের উচ্চ ঘনত্ব পাওয়া গিয়েছে নদীর জলে। সাধারণ মানুষ না জেনে সেই নদীর জলে স্নান করতে গেলে চর্ম রোগ হতে পারে।

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ হার্টফোর্ডশায়ারের জলজ পরিবেশবিদ ড. ভোরোনিকা এডমন্ডস-ব্রাউন বলেন, 'আমরা বলতে পারি, নদীতে এ জাতীয় ওষুধের উপস্থিতির প্রভাব খুবই নেতিবাচক হতে পারে, তবে এজন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন, কেন না এ বিষয়ে তুলনামূলক খুব কম গবেষণা হয়েছে।'

আরও পড়ুন: ক্যানসার সহ একাধিক অসুখের সঙ্গে লড়াই করতে পারে! রোজ ডায়েটে রাখুন অশ্বগন্ধা

পরিস্থিতি আরও ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে, কারণ শারীরিক ও মানসিক যে কোনও অসুস্থতার জন্য ব্যাপকহারে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি করার জন্য নিয়মিত উন্নত ধরনের ওষুধ তৈরি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ওষুধগুলির বর্জ্য নদীতে পড়ায় মাত্রাতিরিক্ত ভাবে জলের দূষণ বাড়ছে। নদীতে অ্যান্টিবায়োটিকের বর্ধিত উপস্থিতি অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া তৈরি করতে পারে, যা ওষুধের কার্যকারিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত পরিবেশ ও বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ ডেকে আনতে পারে।

Published by:Suman Biswas
First published:

Tags: River Pollution