এখন ঘরে ঘরে হয় ঠান্ডা লেগেছে, নয়তো কোভিড পজিটিভ৷ এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকব কী করে?
দেখুন, সম্পূর্ণ আইসোলেশনে (complete isolation) থাকা তো সম্ভব নয় ৷ কাজের জন্য তো বার হতেই হবে৷ যাঁরা বাইরে বার হচ্ছেন, মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে পা রাখবেন না (proper use of masks)৷
যে কোনও মাস্কই কি নিরাপদ?
ডাবল মাস্ক পরুন৷ তবে কাপড়ের মাস্ক না পরাই ভাল৷ এন-৯৫ মাস্কের সঙ্গে একটা সার্জিক্যাল মাস্ক পরুন৷ সঙ্গে হাত ধোওয়ার ব্যাপারটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ সেটাও মনে রাখুন৷
সেইসঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় তো?
হ্যাঁ৷ তাছাড়া এই সময় অনেকেই সর্দিকাশির সংক্রমণে ভুগছেন৷ তাঁদের থেকে সুস্থদের দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ আর বয়স্কদের বাড়িতে থাকাই শ্রেয়৷
বাইরে যত ক্ষণ থাকব মাস্ক পরে থাকতে হবে?
নিশ্চয়ই৷ বাড়ির বাইরে মাস্ক খোলা চলবে না৷ যদি একান্তই খুলতে হয়, তাহলে সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিভৃতে বা একান্তে মাস্ক খুলতে হবে৷
আরও পড়ুন : ‘সাধারণ সর্দিকাশিতেও বাচ্চার সামনে মাস্ক পরে থাকুন’, মত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞর
কিন্তু খাওয়ার সময় কী করব? অফিসে বা যেখানেই কাজ করি না কেন, টিফিন তো খেতে হবে৷
খাওয়ার সময় তো মাস্ক খুলতেই হবে৷ কিন্তু অফিসের ক্যান্টিনে দল বেঁধে একসঙ্গে হৈ হৈ করে খেতে যাওয়ার পুরনো অভ্যাস এখন ছাড়তে হবে৷ টিফিন খান একা একা৷ খাওয়া হয়ে গেলে আবার মাস্ক পরে ফেলুন৷ যাতে সংক্রমণ না হয়৷ কারণ অসুখটা খুবই ছোঁয়াচে৷
ওমিক্রনের জন্য সংক্রমণের হার তো খুব বেড়েওছে?
সে তো বেড়েইছে৷ এখন যাঁরা সর্দিকাশিতে ভুগছেন, পরীক্ষা করলে দেখা যাবে ১০ জনের মধ্যে ৮ জন কোভিড পজিটিভ৷ এছাড়া অনেকেই অ্যাসিম্পটোম্যাটিক বা উপসর্গহীন তো আছেনই৷ এতটাই বেড়েছে সংক্রমণ (covid19 infection)৷
আরও পড়ুন : কাপড়ের মাস্ক পরছেন? কোভিডে সংক্রমিত হতে পারেন ২০ মিনিটে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
বুঝব কী করে ইনফ্লুয়েঞ্জা না কোভিড হয়েছে?
শুধু উপসর্গ দেখে বোঝা খুব কঠিন৷ তাই, জ্বর সর্দিকাশি না সারলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়াই শ্রেয়৷ যদি ২-১ দিনের মধ্যে জ্বর সেরে যায় তো ভাল, না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে৷ আর যাঁদের অসুখ ২-১ দিনের মধ্যে সেরে গিয়েছে, তাঁদেরও জ্বরের সময়পর্বটুকু আইসোলেশনে থাকতে হবে৷ যাতে কোনওভাবেই রোগ না ছড়ায়৷
অর্থাৎ এখন জ্বর হলেই বাকিদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিতে হবে?
হ্যাঁ৷ সংক্রমণ যাতে না ছড়িয়ে পড়ে, এটা করতেই হবে৷ কারণ জ্বর হওয়ার পর আমরা যত ক্ষণ পরীক্ষা না করছি, তত ক্ষণ বুঝতে পারছি না ওটা ইনফ্লুয়েঞ্জা নাকি করোনাভাইরাস৷
আরও পড়ুন : ওমিক্রন থেকে নীরোগ থাকতে প্রয়োজন ইমিউনিটি, প্রাতরাশে থাকতেই হবে এই খাবারগুলি
খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে?
বাড়িতে তৈরি কম তেলমশলার খাবার খেতে হবে৷ বাইরের খাবার না খাওয়াই ভাল৷ তাজা ফল খেতে হবে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম৷ সঙ্গে থাকবে শাক সব্জি৷ যাঁরা আমিষাশী, তাঁরা আমিষ খাবার খাবেন৷ খেতে পারেন আনসল্টেড নাটস বা নুনহীন বিভিন্ন রকমের বাদামও৷ বেশি করে জলপান করতে হবে৷
অনেকেই শীতে ঠান্ডা লাগার ভয়ে স্নান করেন না৷ সেটা কি ঠিক?
স্নান করতেই হবে রোজ৷ ঈষদুষ্ণ জলে নিয়মিত স্নান করুন৷
ভ্যাকসিনের দু’টো ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে বলে অনেকেই কোভিডবিধি পালন করা বন্ধ করে দিয়েছেন৷ তাঁদের কী বলবেন?
ভ্যাকসিন নিলেও যে কোভিড হতে পারে, এটা প্রথম থেকেই বলা হয়েছে৷ এবং সেটা হয়েওছে৷ তবে ভ্যাকসিন নিলে সংক্রমণের তীব্রতা অনেক কম হয়৷ তাই টিকা নিতে হবে যথাসময়ে৷ এবং ভ্যাকসিনের ডাবল ডোজ নেওয়া হয়ে গেলেও কোভিডবিধি পালন করতেই হবে৷ সতর্ক থাকতেই হবে৷
তৃতীয় ঢেউয়ে দেখা যাচ্ছে করোনাভাইরাসের উপসর্গ বেশ মৃদু৷ কিন্তু এটা সংক্রামক অনেক বেশি৷ আমরা কি তাহলে অতিমারি শেষ হওয়ার মুখে এসে পৌঁছেছি?
এই ধারণাটা এখন মুখে মুখে ঘুরছে বটে৷ কিন্তু আমার মনে হয়, এখনই সেভাবে কিছু আগাম বলা যায় না৷ তবে ততীয় ঢেউয়ে ওমিক্রনের দাপটে প্রায় সকলেরই মৃদু করোনা হয়ে গেলে হয়তো হার্ড ইমিউনিটি গড়ে উঠবে৷ সেক্ষেত্রে অতিমারি শেষ হলেও হতে পারে৷
আবার নাও হতে পারে?
হ্যাঁ, আবার নাও হতে পারে৷ আবার যে নতুন কোনও স্ট্রেইন আসবে না, সে কথা কেউ বলতে পারে না৷ তাছাড়া এখন যে শুধু ওমিক্রন হচ্ছে, তা নয়৷ সঙ্গে ডেল্টাও আছে৷ তাছাড়া এখন হসপিটালাইজেশন কম৷ তার মানে এই নয় যে আগামী কয়েক দিনেও কমই থাকবে এই হার৷
অর্থাৎ কোভিড-১৯-এর অতিমারি কবে শেষ হবে নিয়ে এখনও কিছু পূর্বাভাস দেওয়া যাবে না?
না, এখনও বলার মতো সেই পরিস্থিতি আসেনি৷ তাই বলা খুব মুশকিল৷
এখনও সতর্কতা অবলম্বনই সেরা উপায়?
একদমই তাই৷ বাড়ি থেকে বাইরে বেরনোর সময় যেমন জামাকাপড় পরতে ভোলেন না, সেরকম মাস্ক পরতেও ভুলবেন না৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, COVID19, Mask