২০২০-র শুরুতে করোনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় আড়াই বছর। মারণ ভাইরাসের ছোবলে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। অনেকে আক্রান্ত হওয়ার পর বেঁচেও গেছেন। এর মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন এসেছে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও দু-তিনবার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়।
আশ্চর্যের বিষয়, ২০২০-র পর থেকে এখনও পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক এমন মানুষ রয়েছেন যাঁরা একবারও করোনা আক্রান্ত হননি। গবেষকরা এঁদের ডাকছেন ‘নোভিড’ (Novid) নামে। এখন প্রশ্ন হল, এই লোকেদের ইমিউন সিস্টেম কি মারাত্মক শক্তিশালী না কি ভাগ্যের জোরে করোনা ছুঁতে পারেনি তাঁদের? গবেষকরা এই সব মানুষদের শরীরের বৈশিষ্ট্যগুলি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন যাতে অন্যদের অসুস্থ হওয়া থেকে বাঁচানো যায়।
আরও পড়ুন: ঘন ঘন বাচ্চার জ্বর-অসুস্থতা? বর্ষার রোগ নিয়ে সাবধান হতে জানুন শিশু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
সতর্কতা অবলম্বন: প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং সময়মতো ভ্যাকসিন নেওয়াটাই করোনা ছুঁতে না পারার অন্যতম কারণ হতে পারে। পাবলিক প্লেসে মাস্ক পরা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, দূর থেকে কাজ করা, নিয়মিত হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং ভ্রমণ এড়ানো হল এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে করোনাভাইরাস থেকে একজনকে অনেকাংশে রক্ষা করা যায়।
জেনেটিক মেকআপ: গবেষণা অনুসারে, একটি নির্দিষ্ট জেনেটিক মেকআপযুক্ত ব্যক্তিদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। একইভাবে, গবেষকরা মনে করেন যে কিছু জিনের অভিব্যক্তিও একটি প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা প্রদান করতে পারে। এমন একটি কেস পাওয়া গিয়েছে যাদের খাবারে অ্যালার্জি আছে। ২০২২-এর মে মাসে একটি গবেষণার রিপোর্ট বলছে, যাদের খাবারে অ্যালার্জি আছে তাঁদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
আরও পড়ুন: ঘরে ঘরে বাচ্চা-বয়স্ক সবার জ্বর, উপসর্গ চিনে সাবধান থাকুন
ভাগ্য: ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো হাসপাতালের চিকিৎসক টমাস ক্যাম্পবেল অবশ্য মনে করেন, কোভিডে আক্রান্ত না হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হল ভাগ্য। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সবচেয়ে সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে বসবাসকারী প্রতি ৪ জনের একজন আক্রান্ত হয়েছেন। এই হার অত্যন্ত কম।
হালকা লক্ষণ বা উপসর্গহীন: সুইজারল্যান্ডের বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বিশ্বজুড়ে ২৮,০০০- এরও বেশি কোভিড কেস পরীক্ষা করেন। তাঁরা দেখেছেন, আক্রান্তদের মধ্যে অন্তত ৪২ শতাংশের কোনও লক্ষণ নেই। তাই নোভিড বলে দাবি করা লোকেদের সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু তাঁদের করোনার উপসর্গ ছিল না। আরেকটা ব্যাখ্যা হতে পারে, তাঁদের হালকা উপসর্গ ছিল যা সহজেই ফ্লু, ঠান্ডা বা অ্যালার্জির লক্ষণ হিসাবে বিভ্রান্ত হতে হয়। ফলে তাঁরা করোনা পরীক্ষা করাননি। তাই সংক্রামিত কি না তাও জানা যায়নি।
নোভিড নিয়ে গবেষণা: করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে সক্ষম জেনেটিক উপাদান খুঁজে বের করতে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা চলছে। করোনা ছুঁতে পারেনি এমন ৫০০০ জনের বেশি মানুষের স্ক্রিনিং করেছেন গবেষকরা। রিপোর্ট অনুসারে, অংশগ্রহণকারীদের উপর সংক্রমণ এবং অ্যান্টিবডিগুলি নিয়ে বার বার পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Covid 19 Vaccine, Novid