#কলকাতা: দিন সাতেকের রোগশয্যা। করোনা প্রাণ কেড়ে নিল বাংলা ভাষার অন্যতম অহঙ্কার শঙ্খ ঘোষের (Sankha Ghosh)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর মৃত্যু বাংলা সাহিত্যে যে শূন্যতা তৈরি করল এক কথায় তা অপূরণীয়। এই মৃত্যু কেবল এক রবীন্দ্রনাথ-বেত্তা, শক্তিশালীর কবির প্রয়াণ নয়, ক্ষমতা আর স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে বারবার জেগে ওঠা এক স্পর্ধিত মহাপ্রাণের চলে যাওয়াও বটে।
কয়েক মাস ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন শঙ্খ ঘোষ। করোনার দিনগুলিতে চিকিৎসা চলছিল বাড়িতেই। এপ্রিলের ১১ তারিখ সামান্য জ্বর আসায় করোনা পরীক্ষা করানো হয়। দেখা যায় রিপোর্ট পজিটিভ। কিন্তু বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চলছিল। মঙ্গলবার রাত থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থায় অবনতি হয়। বুধবার সকালে ভেন্টিলেটারে দেওয়া হলেও সমস্ত প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। ১১টা নাগাদ ভেন্টিলেটর খুলে দেন চিকিৎসকরা। উল্লেখ্য শঙ্খবাবুর স্ত্রী প্রতীমাদেবীও করোনা আক্রান্ত। বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।
শঙ্খ ঘোষের মতো মহাপ্রাণের প্রয়াণ বাঙালিকে বারবার মনে করাবে- সব মরণ নয় সমান। সত্তরের ঝোড়ো দিন থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, কখনও কোনও শাসকই তাঁর স্বরকে কিনতে পারেনি। তাঁর কলমখানি ছিল চির জাগরুক।
মণীন্দ্রকুমার ঘোষ ও অমলা ঘোষের সন্তান শঙ্খ ঘোষের জন্ম ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। প্রাথমিক লেখাপড়া পাবনায় ১৯৫১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে বাংলায় স্নাতক হন। স্নাতোকত্তর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। চার দশক সাফল্যের সঙ্গে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। জীবনের একটা বড় সময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন শঙ্খবাবু। তৈরি করেছেন বহু যশস্বী ছাত্রছাত্রীকে। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার অর্ঘ্য নিয়ে আজীবন সেই ছাত্রছাত্রী, অনুরাগীরা তাঁকে ঘিরেছিলেন।
১৯৭৭ সালে বাবরের প্রার্থনা কাব্যগ্রন্থটির জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান তিনি। কন্নড় ভাষায় লেখা গিরিশ কারনাডের রক্তকল্যাণ নাটকটি বাংলায় অনুবাদ করে সাহিত্য অকাদেমি পান ১৯৯৯ সালে। ২০১১ সালে শঙ্খ ঘোষ পদ্মভূষণে সম্মানিত করে কেন্দ্র।
আপাতত তিনি চললেন অনন্তের পথে। অথবা মূর্খ বড়ো, সামাজিক নয়, মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে-র মতো গ্রন্থে চিরায়ু হয়ে থেকে গেলেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, COVID19, Sankha Ghosh