বিষ মিশিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে শুঁটকি মাছ!
Last Updated:
সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন যদি এই মাছ কেউ খায় তাহলে তার হৃদযন্ত্র লিভার ও নার্ভের রোগ দেখা দেবেই। এমনকি ক্যানসার হতে পারে ও মানুষ মারাও যেতে পারে।
Sanku Santra
#কলকাতা: শুকনো মাছের চাহিদা যেমন এ রাজ্যে আছে। তবে সব থেকে বেশি চাহিদা রয়েছে উত্তর পূর্ব ভারতে।যার বেশিরভাগই প্রস্তুত হয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। প্রচুর মানুষ রয়েছেন,যারা প্রায়ই খাবারের তালিকায় শুকনো মাছ রাখে।
সাধারণ মানুষের কাছে বদ্ধ মূল ধারণা শুকনো মাছ খেলে, শরীরের পুষ্টি জোগায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি,ডি,ও ফসফরাস রয়েছে। শুকনো মাছে তীব্র গন্ধ হয় বটে। তবে রান্নার পর, সেরকম গন্ধ থাকে না। যে সমস্ত এলাকাতে জীবন্ত মাছ পাওয়া যায় না, সেইসব এলাকাতে শুকনো মাছের চাহিদা সব থেকে বেশি।
advertisement
advertisement
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ, সাগরদ্বীপ, এইসব এলাকাতে শুকনো মাছ তৈরি করার বিস্তীর্ণ কারবার হয়। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে মাইলের পর মাইল বাঁশের কাঠামো তৈরি করে মাছ শুকানো চলছে। জেলে সম্প্রদায় বেশকিছু মানুষ বিভিন্ন ধরনের মাছ শুকনো করাকে তাদের জীবিকা হিসেবে নিয়েছে। এই শুকনো মাছ কয়েকশো কোটি টাকার ব্যবসা দেয়। সমুদ্র থেকে বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরে এনে শুকনো করে ওরা। এই জীবিকার সঙ্গে বেশ কয়েক হাজার মানুষ জড়িত রয়েছে। মাছ শুকানো হয় সমুদ্র তীর বা নদীতীরে । বিশেষ করে শীতের মরশুমে অর্থাৎ অক্টোবর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস অবধি এই কারবার চলে। ইদানীংকালে লক্ষ করা গেছে মাছ শুকনো করবার জন্য ওরা এমন কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করছে যার ফলে মানবজীবনে ভয়ঙ্কর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
advertisement
মাছ শুকাতে গেলে প্রখর রোদের দরকার। শীতের মরসুমে মাঝে মাঝে মেঘলা আবহাওয়া কিংবা বৃষ্টিও হয়। সেই সময় টনকে টন মাছ রোদের অভাবে পচে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। যদি মাছ পচে যায় তাহলে ভয়ঙ্কর ক্ষতির সম্মুখীন হয় এই কারবারিরা। যার জন্য মাছ সমুদ্র থেকে ধরে আনার পর ,বড় চৌবাচ্চার মধ্যে জলের মধ্যে লবণ এবং ফরমালিন গুলিয়ে, সেই জলে ৪৫ মিনিট রেখে দেয় মাছগুলো। তারপর ওই মাছ তুলে চারদিকে বিছিয়ে দেয় অথবা বাঁশের যে বেড়ার মতো করা থাকে সেখানে ঝুলিয়ে দেয় । শুধু এই পদ্ধতিতে শুকনো হয় না। মাছের ওপর প্রচুর পরিমাণে মাছি বসে এবং সেই মাছি ওই মাছের ওপর ডিম পাড়ে। সেই ডিম থেকে যে লার্ভা হয়, তা মাছকে পচন ধরাতে ত্বরান্বিত করে। ওই কারবারীদের দাবি, সেই কারণে এই মাছের ওপর কীটনাশক বা বিষ স্প্রে করে। যার ফলে মাছগুলো পচে না। মাছের ওপর মাছি বা মাছি জাতীয় কিছু বসে না। এই পদ্ধতি বছরের-পর-বছর চালিয়ে আসছে ওরা।
advertisement
বিষয়টি কেন্দ্রীয় মৎস্য শিক্ষা সংস্থানের, মূখ্য বৈজ্ঞানিক বিজয় কালী মহাপাত্রের গোচরে আসে। তিনি নানাভাবে এই ব্যবসায়ীদের বোঝান যে এই ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন না করতে। এমনকি সরকারি গত ভাবে ও রিপোর্ট তৈরি করেন। ডঃ মহাপাত্র বলেন, ‘শুকনো মাছে কনসেনট্রেট প্রোটিন রয়েছে। যা অন্য কোন মাছে এতটা নেই। শুকনো মাছের কাঁচা অবস্থায় যেহেতু ফরমালিন ও কীটনাশক স্প্রে করা হয়,শুকিয়ে যাওয়ার পর মাছের মধ্যে সেগুলো বর্তমান থাকে। শুকনো মাছ রান্নার আগে যতই গরম জল দিয়ে মাছটিকে সম্পৃক্ত করুক না কেন, কই মাছের থেকে বিষ বা ফরমালিন সম্পূর্ণভাবে চলে যায় না। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন যদি এই মাছ কেউ খায় তাহলে তার হৃদযন্ত্র লিভার ও নার্ভের রোগ দেখা দেবেই। এমনকি ক্যানসার হতে পারে ও মানুষ মারাও যেতে পারে।’ এখন শুধু দেখা প্রশাসন কি পদক্ষেপ নেয়।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
December 03, 2019 11:56 PM IST