Suvendu Adhikari || Pradhanmantri Awas Yojna: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম পাল্টে 'আবাস প্লাস'! বিস্ফোরক দাবি শুভেন্দু অধিকারীর
- Published by:Sanjukta Sarkar
- Written by:VENKATESHWAR LAHIRI
Last Updated:
Suvendu Adhikari || Pradhanmantri Awas Yojna: 'প্রধানমন্ত্রী'ও বাদ আর 'বাংলা'ও বাদ! মুখ্যমন্ত্রীর ছবি জ্বলজ্বল করছে 'আবাস প্লাস প্রকল্পে'। পোস্টারের ছবি-সহ দাবি শুভেন্দুর।
#কলকাতা: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ফের নাম পরিবর্তনের বিস্ফোরক দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ, বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারী নিজের সামাজিক মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম পরিবর্তনের একটি পোস্টার সহ দীর্ঘ পোস্টে লিখেছেন," মাননীয় যশস্বী প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিজির স্বপ্নের প্রকল্প - প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) বাস্তবায়িত করতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক উদ্যত হন একটাই মহৎ উদ্দেশ্যে; যাতে গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী সব গরীব ও প্রান্তিক মানুষের মাথার ওপর পাকা ছাদের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২০২৪ সালের মার্চ মাস অবধি সারা দেশে এই প্রকল্পে মোট ২ কোটি ৯৫ লক্ষ বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন। উক্ত প্রকল্পের অধীনে ইতিপূর্বে রাজ্য সরকারকে নতুন লক্ষ্যমাত্রা অনুমোদন করা হয়নি কারন এই প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন অভিযোগ ও অসন্তোষজনক তথ্য জমা পড়ে এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রকল্পের নাম বদলে "বাংলা আবাস যোজনা" করা হয়।
advertisement
advertisement
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে আশ্বস্ত করেছেন যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রালয়ের নির্দেশাবলী ও পরামর্শ অনুযায়ী রাজ্য জুড়ে প্রকল্পের সরকারি নাম তথা "প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)" ও লোগো প্রদর্শিত হবে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক তাই পশ্চিমবঙ্গকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য ১১,৩৬,৪৮৮ টি বাড়ি নির্মাণ করার অনুমোদন প্রদান করেছেন ও এই জন্যে ৮২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।
advertisement
তবে বেশ কয়েকটি নিয়ম ও শর্ত মেনে চলতে হবে রাজ্য সরকারকে:-
(১) সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য হলো প্রকল্পের নাম ও লোগো। তাই প্রকল্পের আসল নাম; "প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)" ও লোগো, জনগণকে অবগত করানোর জন্য প্রকল্পের তথ্য সহ সাইনবোর্ডে প্রদর্শন করতে হবে। কেন্দ্রীয় গাইডলাইন অনুসারে এই প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত প্রতিটি বাড়িতেই তা লাগাতে হবে। অন্য কোনো নাম, লোগো বা ব্রান্ডিং এই সকল বাড়িতে লাগানো যাবে না।
advertisement
(২) রাজ্য সরকার সমস্ত জেলার জেলাশাসকদের ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের যেন নির্দেশ জারি করেন, যে শুধুমাত্র সরকারি নিয়ম মেনে "প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)" প্রকল্পের যথাযথ রূপায়ণ করতে হবে এবং পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট এর মধ্যে থেকেই উপভোক্তাদের নাম নির্বাচন/চয়ন করতে হবে। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের ভবনগুলোতে পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্টে থাকা উপভোক্তাদের নামের তালিকা টাঙানো থাকবে, কোনোরকম কোন বিচ্যুতি ঘটলে তা সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র গরীব ও দুঃস্থদের জন্য এই প্রকল্প। চার চাকা গাড়ির মালিক অথবা বাড়িতে 'এয়ার কন্ডিশনার' মেশিন রয়েছে তাদের জন্য এই প্রকল্প নয়। অথবা আগে থেকেই পাকা বাড়ি রয়েছে কিন্তু বাড়তি জমি খালি পড়ে রয়েছে, তাই সখ করে বানিয়ে ফেলবো, তারাও যেনো এই প্রকল্পের উপভক্তাদের তালিকায় না আসে।
advertisement
(৩) প্রকল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলী হলো যে এই প্রকল্পের অন্ততপক্ষে ৬০% উপভক্তা যেন তপশীলি জাতি ও উপজাতি জনগোষ্ঠীর ব্যক্তিরা হন।
(৪) যেহেতু ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে, তাই ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে উপভোক্তাদের বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন দিতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রথম কিস্তির টাকা উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করতে হবে।
advertisement
(৫) বাড়ির অনুমোদন এবং বাড়ি বানানোর জন্য অর্থ প্রদান করা, নির্দিষ্ট সময় মেনে করতে হবে। যদি রাজ্য সরকার উপভোক্তাদের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বাড়ির অনুমোদন দিতে এবং প্রথম কিস্তির টাকা ছাড়তে ব্যর্থ হয়, কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা প্রত্যাহার করে নেবে।
(৬) "প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)" প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত "সিঙ্গেল নোডাল অ্যাকাউন্ট" এ কেন্দ্র ও রাজ্যের আনুপাতিক হারের অর্থ যথাযথ সময়মতো একসাথে ট্রেজারি থেকে জমা দিতে হবে।
advertisement
(৭) কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের গাইড লাইন অনুযায়ী Area Officers Mobile অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন আধিকারিকদের দিয়ে যথাযথ ভাবে পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করাতে হবে।
(৮) কোনোরকম দুর্নীতি বা আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে যেনো রাজ্যে, "জিরো টলারেন্স" নীতি গ্রহণ করে। সমস্ত জেলার সিনিয়ার অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে 'স্পেশাল টিম' গঠন করতে হবে, যাতে এই ধরনের অভিযোগ উঠলে তা যথাযথ ভাবে যাচাই করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
(৯) প্রতিটি ব্লক/গ্রাম পঞ্চায়েতের উপভোক্তাদের, তাঁদের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন করাতে "উপভোক্তা সচেতনতা শিবির" অনুষ্ঠিত করতে হবে।
(১০) রাজ্য সরকার যেন নির্দেশ জারি করে যে, অন্তত পক্ষে ১৫% নির্মিত বাড়ি ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরের আধিকারিকদের দিয়ে এবং নূন্যতম ২% বাড়ি জেলা শাসক এর দফতরের সিনিয়র আধিকারিকদের দিয়ে যথাযথ পরিদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। এর থেকে সুনিশ্চিত করা যাবে যে বাড়ি গুলো নিয়ম মেনে তৈরি হচ্ছে।
(১১) প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) -এর বাস্তবায়নের জন্য যে কাঠামো কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করেছেন তা রাজ্য সরকারকে বিচক্ষণতার সাথে মেনে চলতে হবে ও সঠিক সময়ে নির্মিত বাড়ি গুলির সামাজিক নিরীক্ষণ করতে হবে।
(১২) রাজ্যের সমস্ত জেলা, ব্লক ও গ্রাম পঞ্চয়েত গুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী জারি করতে হবে যাতে AwasSoft এর ব্যবহার বিধি অনুসারে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে যত জলদি সম্ভব এই বাড়ি গুলি অনুমোদন করতে হবে এবং সময়মত বাড়িগুলোর নির্মাণ কার্য শেষ করতে হবে অর্থাৎ ২০২৪ সালের মার্চ মাসের মধ্যে। ত্রৈমাসিক সময়কালীন লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কর্ম পরিকল্পনা বানিয়ে বাড়িগুলোর নির্মাণ কার্য শেষ করতে যাতে ১০০% লক্ষ্য পূরণ করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে এই রাজ্য সরকার, বিশেষ করে নিচুতলার আধিকারিক ও গ্রাম স্তরের তৃণমূলের নেতারা এত নিয়মের বেড়া জালের মধ্যে আটকে থাকবেন না, কারন এরা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা লুঠ করতে সিদ্ধহস্ত ও অভ্যস্ত।
ইতিমধ্যেই আমার এই আশঙ্কার প্রতিফলন চোখে পড়ছে। নিম্ন প্রকাশিত পোস্টারটি শাসকদলের নিযুক্ত একটি কর্পোরেট সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ ও প্রচার করানো হচ্ছে, যেখানে প্রকল্পের নতুন নামকরণ করা হয়েছে - "আবাস প্লাস প্রকল্প" !!!
তাই আমি সকল সচেতন নাগরিক ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) প্রকল্পের উপভোক্তাদের আহ্বান জানাই যে নিজেরাই সতর্ক থাকুন। কোনরকম বেচাল অথবা নিয়ম বহির্ভূত কাজ চোখে পড়লে তথ্য প্রমাণ (যতটা জোগাড় করতে পারেন) সহ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এই ইমেল আইডিগুলিতে অভিযোগগুলো ইমেল মারফত পাঠান:-
min-mopr@gov.inofficeministerahdf@gmail.com
আপনারা আমার ইমেল আইডি তেও ইমেল পাঠাতে পারেন। আমার ইমেল আইডি হলো :-
adhikarisuvenduwb1@gmail.com
আপনাদের পাঠানো অভিযোগ সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমার রইল"।
ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
December 01, 2022 6:04 PM IST