হোম /খবর /ক্রাইম /
এগারো বছরের বালকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে

গরীব বস্তির ছেলেকে কয়েক বছর বাড়িতে রেখে মানুষ করার পর তাকেই খুন! ঢাকুরিয়ায় মৃত ১১ বছরের বালক

Photo- Representative

Photo- Representative

এদিক যে পরিবারের দিকে অভিযোগের আঙুল তাদের দাবি সুশান্ত সিং রাজপুতের কায়দায় আত্মহত্যা করেছে ওই খুদে!

  • Share this:

#কলকাতা:  পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার কলকাতার ঢাকুরিয়া অঞ্চল। বছর এগারোর ওই বালকের বাবা মায়ের দাবি, তাকে পালন করছিলেন যারা, তারাই খুন করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। অবরোধ থেকে আরম্ভ করে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে এলাকাবাসীর। অবশেষে খুনের মামলা রুজু হওয়ার পর শান্ত হয় এলাকা।

 সানি মন্ডল জন্ম ঢাকুরিয়ার পঞ্চানন তলা বস্তিতে গরিব পরিবারের ছেলে। বাবা সোনু মন্ডল এলাকায় মাদকাসক্ত এবং চোর বলে পরিচিত। মা বাসন্তী অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। সানির ঠাকুরমা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকুরিয়া ব্যাংক প্লটে তপতী বিশ্বাসের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। তপতী দেবী সানিকে ছোটবেলায় অবহেলা এবং অনাহারে থাকা, না দেখতে পেরে নিজে পালন করবার জন্য বাড়িতে নিয়ে আসেন।তখন তপতী দেবীর বাড়িতে তপতী দেবী ও তার একমাত্র পুত্র সঞ্জীব বিশ্বাস থাকতেন৷     ছোটবেলা থেকে সানিকে নিজেদের সন্তানের মতো করেই মানুষ করা ,পড়াশোনা করানো,প্রাইভেট টিউশনে নিয়ে যাওয়া সবই করত তপতী দেবীরা।

সানি যখন এই বাড়িতে আসে ,তখন ওর বয়স ছিল দেড় বছর। এখন ১১ বছরের সানি পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ত। এলাকায় দুরন্ত বিচ্ছু ছেলে হিসাবে পরিচিত ছিল। তবে তপতী ও সঞ্জীবের নয়নের মনি ছিল এই সানি।     ২০১৭ সালে সঞ্জীবের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে বৌমা শম্পা, তপতী দেবী কে সানিকে তার বাবা-মার কাছে রেখে আসার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমনকি বৌমা ,শাশুড়ি কে এই বিষয়ে মারধর করেছে বলে জানা যায়। শম্পা সঞ্জীবের এখন দুটি পুত্র সন্তান। সানিকে বাড়ি থেকে বের করবার জন্য শম্পা একেবারে উদগ্রীব হয়ে পড়েন এবং রীতিমত শাসন মারধর করতে থাকে বলে জানা যায়।     ১৭ই জুন সন্ধ্যা বেলা অচৈতন্য অবস্থায় তপতী দেবীর বাড়ির চার তলার ছাদে দেখতে পান ওরা। সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় খবর যায়। ছুটে আসে সানির বাবা সোনু, মা বাসন্তী এবং এলাকার মানুষজন।

তারা এসে দেখেন গলার কাছে একটি প্লাস্টিকের তারের মতো পেঁচানো আছে।পাশে কাপ এবং চামচ রাখা রয়েছে। সেই কাপে দুধের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।     ঘটনায় তপতী দেবীরা জানান, সানি গলায় দড়ি নিয়ে ঝুলছিল। তাকে বাঁচানোর জন্য গরম দুধ খাইয়ে ছিল ওরা। সঞ্জীব , বাসন্তীকে ফোনে জানিয়েছিল, সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যা নকল করতে গিয়ে, সানি নিজে গলায় দড়ি নিয়ে মারা গেছে। পুলিশ দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিল।     গতকাল সানির দেহের ময়নাতদন্ত হয়। পুলিশের দাবি প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে গলায় ফাঁসি নিয়ে আত্মহত্যা করেছে সানি। প্রশ্ন, ১১ বছরের ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে? অভিযোগ,যদি আত্মহত্যা করে। তাহলে তার পেছনে প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে শম্পা বিশ্বাসের। এই অভিযোগ ঢাকুরিয়া ব্যাংক প্লট থেকে শুরু করে পঞ্চানন তলা এবং থানার অলিন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে।     পুলিশ সানির মায়ের অভিযোগ অনুযায়ী সঞ্জীব বিশ্বাস, তপতী বিশ্বাস ও শম্পা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রত্যেকের অভিযোগ ,শম্পা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেফতারের জন্য গতকালই রাস্তায় নেমেছিল প্রচুর মানুষ।তবে পুলিশের তদন্তে ভরসা রাখছে বাসন্তী।

SHANKU SANTRA

Published by:Debalina Datta
First published: