#কলকাতা: ভারতের লঙ্কা রেল পথে গেল বাংলাদেশ৷ রেল সূত্রে খবর শুক্রবার সীমান্ত পেরিয়ে লঙ্কা বোঝাই বিশেষ ট্রেন আজ, শুক্রবার পৌছে গেল বাংলাদেশে। এর ফলে ভারতীয় রেল মারফত পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে নতুন উদ্যোগ সফল হল বলে মত রেল আধিকারিকদের।
ভারতীয় রেলমন্ত্রক সূত্রে খবর, এই প্রথমবার দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বাংলাদেশের বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হওয়া শুকনো লঙ্কা বোঝাই ভারতীয় রেলের এই বিশেষ পণ্যবাহী ট্রেন অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলার রেড্ডিপালেম থেকে বাংলাদেশ পৌঁছল। দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা লঙ্কা চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানকার লঙ্কা আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রসিদ্ধ, বিশেষ করে এর স্বাদ ও ব্র্যান্ডের জন্য। আগে গুন্টুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার কৃষক তথা ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে সড়কপথে শুকনো লঙ্কা পাঠাতেন।
সড়কপথে পরিবহণের জন্য প্রতি টনে খরচ পড়ত প্রায় ৭ হাজার টাকা। এমনকী, একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ শুকনো লঙ্কা সরবরাহ করা যেত না। স্বাভাবিকভাবে প্রত্যেকবার পরিবহণের জন্য খরচও সমান হারে বাড়ত। লকডাউনের সময় গুন্টুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার চাষীরা সড়কপথে এই লঙ্কা বাংলাদেশে পাঠাতে পারেনি। যদিও ব্যাপক চাহিদা ছিল এই শুকনো লঙ্কার। এই অবস্থায় রেল কর্মী ও আধিকারিকরা কৃষক প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সাথে রেল পথে পণ্য পাঠানোর কথা বলেন।
রেলের কর্মী ও আধিকারিকদের এই চেষ্টার কারণে ব্যবসায়ীরা শুকনো লঙ্কা বিপুল পরিমাণে পণ্যবাহী ট্রেনে করে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করেন। সেই কাজ শুরু হয়। অবশেষে রেল পথে গুন্টুরের লঙ্কা পরিবহণ শুরু হয়ে গেল। এর ফলে প্রত্যেকবার দেড় হাজার টনেরও বেশি লঙ্কা বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব হবে। দক্ষিণ-মধ্য রেলের গুন্টুর ডিভিশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে শুকনো লঙ্কাবাহী বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। রেল কর্তৃপক্ষের এই ব্যবস্থার ফলে গুন্টুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার কৃষকদের শুধু লঙ্কা নয় আরও অনেক উৎপাদিত ফসল বেশি পরিমাণে দেশের অন্যত্র বা বাংলাদেশে সরবরাহের সুবিধা বেড়ে গেল।
রেলের গুন্টুর ডিভিশনের পক্ষ থেকে শুকনো লঙ্কাবাহী একটি পণ্যবাহী ট্রেন ১৬টি কন্টেনার নিয়ে বাংলাদেশের বেনাপোলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ট্রেনটিতে প্রায় ৩৮৪ টন শুকনো লঙ্কা আছে। রেলপথে প্রতি টন শুকনো লঙ্কা পরিবহণ খাতে খরচ পড়ছে ৪,৬০৮ টাকা, যা সড়কপথের প্রতি টন পিছু খরচ ৭ হাজার টাকার তুলনায় অনেক কম এবং ব্যয় সাশ্রয়ী।রেল মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, ভারতীয় রেল কোভিড মহামারীর সময় পণ্যবাহী ট্রেন পরিষেবা বাড়াতে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। গত ২২ মার্চ থেকে গতকাল, বৃহস্পতিবার ১৬ জুলাই পর্যন্ত ভারতীয় রেল প্রায় ৫ হাজার পণ্যবাহী ট্রেন পরিষেবা দিয়েছে। এর মধ্যে ৯০% ট্রেন সঠিক সময়ে পণ্য পৌছে দিতে পেরেছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
আবীর ঘোষাল