Samaresh Majumder: আংরাভাসা নদীর ধারে বসে চা বাগানের ম্যানেজার ঠাকুরদাই স্বপ্ন দেখা শিখিয়েছিলেন সমরেশ মজুমদারকে...

Last Updated:

Samaresh Majumder: চা বাগানের স্থানীয় মদেশিয়া ছেলেদের সঙ্গে খেলাধুলো করেই বাল্য-কৈশোর কেটেছে সমরেশ মজুমদারের।

সমরেশ মজুমদারের জীবনাবসান
সমরেশ মজুমদারের জীবনাবসান
কলকাতা: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে চিরস্থায়ী আসন পেয়েছিলেন ‘দৌড়’ উপন্যাস লিখে। সেই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের দৌড় শুরু হয়েছিল উত্তরবঙ্গের জল-জঙ্গল-চা বাগানের হাতিনালার পাশ থেকে। জলপাইগুড়ি জেলার গয়েরকাটা চা বাগান থেকে শুরু করেছিলেন ‘দৌড়নো’। দীর্ঘদিন রোগভোগের পর সোমবার, ৮ মে ২০২৩-এ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সেই দৌড় থামল। রানওয়ে শেষ হল।
মাঝের সময়গুলিতে সমরেশ মজুমদার অনবরত লিখেছেন। ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’ লিখে বাঙালির মনে ‘চিরসবুজ’ হয়েছেন লেখক-কথাসাহিত্যিক। তাঁর লেখায় থাকা বুনো গন্ধ বার বার ভ্রমণপিপাসু মানুষকে টেনে নিয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গে। উপন্যাসের এই সেরা ট্রিলজি চিরকাল পড়তে ভালবাসা মানুষের অন্যতম প্রিয় হয়ে থাকবে। কী ভাবে এতটা প্রকৃতির সতেজ-সবুজ ছুঁয়ে লিখতেন সমরেশ মজুমদার? এই রহস্য লুকিয়ে তাঁর ছোটবেলায়।
advertisement
অনেকেই হয়তো জানেন না, ১৯৪২ সালের ১০ মার্চ গয়েরকাটা চা বাগানে জন্ম সমরেশ মজুমদারের। তাঁর বাবা ছিলেন কৃষ্ণদাস মজুমদার, মায়ের নাম শ্যামলী দেবী। ছোট্ট বাবলুর (সমরেশ মজুমদারের ডাকনাম) সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ছিলেন ঠাকুরদাদা পূর্ণচন্দ্র মজুমদার। জন্মের পর মা অসুস্থ হওয়ায় সেজো পিসির কাছে বড় হওয়া সমরেশের। সঙ্গে সারাক্ষণের সঙ্গী ঠাকুরদা। পেশায় চা বাগানের ম্যানেজার ঠাকুরদার কাছে সমরেশ মজুমদার শিখেছিলেন কঠোর অনুশাসন, সংযম, অধ্যবসায় এবং নিয়মানুবর্তিতা।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: আমায় কতটা স্নেহ করতেন, প্রমাণ পেয়েছিলাম ওই দিন, সমরেশ-প্রয়াণে ‘শূন্য’ হলেন জয় গোস্বামী
জন্মের সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল বিশ্বজুড়ে। তার আগে ঠাকুরদা পূর্ণচন্দ্র নদিয়ার গেদে গ্রাম থেকে উত্তরবঙ্গের চা বাগানে এসে ইংরেজি জানার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ম্যানেজারের চাকরি পেয়েছিলেন। মাত্র ৪ বছর বয়সে জলপাইগুড়ির হাকিমপাড়ায় ঠাকুরদাদার বাড়িতে চলে আসেন সমরেশ মজুমদার। জীবনের প্রথমদিনে সমস্ত গল্প, সমস্ত কল্পনা, মনে মনে সব ছবি এঁকেছিলেন ঠাকুরদাদার মুখে বিভিন্ন গল্প শুনেই। বাড়ির কাছেই আংরাভাসা নদীর জলে দিনের পর দিন সেই স্বপ্ন-গল্পের খেয়া ভাসিয়েছেন ঠাকুরদা-নাতি।
advertisement
চা বাগানের স্থানীয় মদেশিয়া ছেলেদের সঙ্গে খেলাধুলো করেই বাল্য-কৈশোর কেটেছে সমরেশ মজুমদারের। রাজবংশী এবং বাহে সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্গেও দারুণ সখ্য ছিল তাঁর। গয়েরকাটা চা বাগানের ভবানী মাস্টারের পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা পেয়েছিলেন সমরেশ। তারপর জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলকাতার স্কটিশ চার্চে এসেছিলেন বাংলা ভাষায় সাম্মানিক নিয়ে পড়াশোনা করতে।
advertisement
আরও পড়ুন: চলে গেলেন কালবেলা, সাতকাহন-এর স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার 
এর পর অনিলবাবুর মেস, কলেজের হস্টেল, হাতিবাগানে রেসিডেন্ট হস্টেল, এমনকী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলেও দিন কাটিয়েছেন। যে অভিজ্ঞতা পরে ‘কালবেলা’ উপন্যাস হয়ে ফুটে উঠেছে। চা বাগানের নানা স্মৃতি থেকে পরবর্তীতে অ্যাডভেঞ্চার গল্প লিখেছিলেন সমরেশ মজুমদার। তালিকায় রয়েছে, খুনখারাপি, জয়ন্তীর জঙ্গলে, জুতোয় রক্তের দাগ, হাঙরের পেটে হিরে, কালাপাহাড়। তাঁর লেখা এই গল্পগুলির নায়ক ছিল ‘অর্জুন’। আসলে, উত্তরবঙ্গের জল-হাওয়ায় বড় হওয়া সমরেশ মজুমদার মনে মনে নিজেই ছিলেন সেই অর্জুন।
advertisement
পরবর্তীতে, কলকাতার বুকেই সাহিত্যচর্চা, চাকরি, সম্মান, পুরস্কার, জনপ্রিয়তা আরও কত কত ঘটনা… তবে শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর নিঃশ্বাসে মিশে থেকেছে ঠাকুরদার কাছে শোনা সেই হাতি, বাইসন, চিতা ও হরিণের অসহায়তা, ময়ূর ও ধনেশের ভয়ার্ত দিনলিপির কথা। মদেশিয়া বন্ধুদের ছুটির দিন হাড়িয়ার গন্ধের নেশা লেগে থেকেছে তাঁর লেখক-মনে। অসংখ্য কালজয়ী গল্প-উপন্যাসের ম্যানুস্ক্রিপ্টের ভাঁজে থেকে গিয়েছে চা পাতার একটি কুড়ি ও দু’টি পাতা, চিরসবুজ হয়ে…
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
Samaresh Majumder: আংরাভাসা নদীর ধারে বসে চা বাগানের ম্যানেজার ঠাকুরদাই স্বপ্ন দেখা শিখিয়েছিলেন সমরেশ মজুমদারকে...
Next Article
advertisement
‘কোনও অপরাধী যেন ছাড় না পায়!’ দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে নির্দেশ অমিত শাহের
‘কোনও অপরাধী যেন ছাড় না পায়!’ দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে নির্দেশ অমিত শাহের
  • অমিত শাহ দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন, অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে.

  • জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা উমর মহম্মদ, পেশায় চিকিৎসক, বিস্ফোরক গাড়িটি চালাচ্ছিলেন.

  • দিল্লি, গুরগাঁও, নোয়ডা এবং গাজিয়াবাদে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, চলছে কড়া তল্লাশি.

VIEW MORE
advertisement
advertisement