হোম /খবর /কলকাতা /
রাশিয়ার তরুণী এখন বাঙালি গিন্নি, জমিয়ে ভাত খান পুঁইচচ্চড়ি ও আলুপোস্ত মেখে

Power of Love : প্রেম ও আলাপ ফেসবুকে, রাশিয়ার তরুণী এখন নদিয়ার বাঙালি গিন্নি, আটপৌরে শাড়ি পরে জমিয়ে ভাত খান পুঁইচচ্চড়ি ও আলুপোস্ত মেখে

প্রেমের টানে রাশিয়া থেকে ভারতে

প্রেমের টানে রাশিয়া থেকে ভারতে

Power of Love : প্রেমিকের টানে সুদূর রাশিয়া থেকে পাড়ি দেন ভারতে

  • Share this:

কলকাতা : প্রথম আলাপ ফেসবুকে। তার পর সেখান থেকে ক্রমশ জমে ওঠে প্রেম। প্রেমিকের টানে সুদূর রাশিয়া থেকে পাড়ি দেন ভারতে। পরের গন্তব্য বাংলার নদিয়া। সেখানেই গত ৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে দিব্যি আছেন রুশ তরুণী একাটেরিনা দাস। সংসার করছেন জমিয়ে। শ্বশুরবাড়িতে তাঁর নাম 'ক্যাটরিনা'। দিদি নাম্বার ওয়ান-এর এক পর্বে এসে তিনি জানিয়েছিলেন তাঁর প্রেম অভিযানের কথা।

হবু স্বামীর প্রেমে পড়ার আগেই ছোট থেকে ভারতের প্রেমে পড়েছিলেন একাটেরিনা। বলিউডের সিনেমা দেখে তিনি ভালবেসে ফেলেছিলেন ভারত এবং তার সংস্কৃতিকে। জানিয়েছেন, রাতে জেগে টিভিতে হিন্দি সিনেমা দেখতেন তিনি বাবা মায়ের সঙ্গে। ভক্ত ছিলেন অমিতাভ বচ্চন এবং মিঠুন চক্রবর্তীর। তখন অবশ্য ছোট্ট একাটেরিনা ভাবতেও পারেননি এক দিন তিনি বধূ হিসেবে পা রাখবেন ভারতে।

ভারতীয় প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়। রাশিয়ায় বসে ইংরেজি নিয়ে উচ্চশিক্ষা করছিলেন একাটেরিনা। ইংরেজিতে কথা বলার জন্য লোক খুঁজছিলেন। সে সময়ই ফেসবুকে আলাপ নদিয়ার যুবকের সঙ্গে। প্রেমের দেড় বছর পর প্রেমের টানেই চলে এলেন ভারতে। প্রথম দেখলেন প্রেমিক ও তাঁর পরিবারকে। নতুন দেশ, প্রেমিকের পরিবার এতই ভাল লেগে গেল, ঠিক করলেন এখানেই বিয়ে করবেন। তার পর ফিরে গেলেন রাশিয়া।

আরও পড়ুন :  কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে ধেয়ে আসছে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, জেনে নিন আজ সারাদিন কেমন থাকবে আবহাওয়ার মেজাজ মর্জি

দেড় বছর পর পরিবারের সম্মতি নিয়েই ফের রাশিয়া থেকে ভারতে এলেন। এ বার বিয়ে করবেন বলেই এলেন। বিয়ে করলেন। শুরু হল সংসার। কিন্তু ভাষার পাশাপাশি খাওয়া দাওয়া নিয়েও দেখা দিল সমস্যা। একটু একটু করে শিখতে শুরু করলেন শাশুড়ির কাছে। ভাঙা ভাঙা বাংলায় কথা বলতে শিখলেন। শাশুড়ির পাশে বসে দেখতেন কী রান্না হচ্ছে। রেসিপি লিখে রাখতেন খাতায়।

রাশিয়ার একাটেরিনা এখন পুরোদস্তুর নদিয়ার গৃহবধূ। গ্রামের যৌথ পরিবারে রান্না করা, বাসনমাজা, ঘরদোর পরিষ্কার করা সবই করছেন সমান তালে। সময় পেলে করে নেন একটু আধটু সেলাইও। তার মাঝেই আছে ছেলের দেখভাল করা।

আরও পড়ুন :  ডাউন সিন্ড্রোম আক্রান্ত শিশুকে দত্তক নিয়ে দেশের সর্বকনিষ্ঠ সিঙ্গল ফাদার আদিত্যর বিয়েতে অতিথি ছিলেন ১০ হাজার গৃহহীন ও অনাথ শিশু

বিয়ের পর একাটেরিনা ঘুরেও এসেছেন রাশিয়া। তাঁদের জামাই এবং নাতিকে দেখেছেন একাটেরিনার বাবা মা। জামাইষষ্ঠীর রীতি না জানায় রুশ রীতিতেই অভিবাদন জানিয়েছেন ভারতীয় জামাইকে। তখন অবশ্য একাটেরিনা পুরোদস্তুর বাঙালি গিন্নি। রাশিয়ার মাটিতে শাড়ির বদলে কুর্তি পরলেও এক মুহূর্তের জন্য ভুলে যাননি শাঁখা পলা সিঁদুর পরতে। গ্রামের বাড়িতেও বেশির ভাগ সময়েই পরনে থাকে শাড়ি। আটপৌরে শাড়ি পরেই পেটপুরে খান পুঁইশাকের চচ্চড়ি আর আলুপোস্ত। তবে সকাল আর সন্ধ্যার জলখাবারটা রাশিয়ান হওয়া চাই। সেটা নিজেই বানান একাটেরিনা। লাজুক হেসে জানালেন তিনি নদিয়ার গাংনাপুরের শ্বশুরবাড়িতে সবাইকে ভালবাসেন। তাঁকেও সকলে ভালবাসেন।

প্রতি বছর মেতে ওঠেন দুর্গাপুজোর আনন্দে। নতুন পোশাক পরে ঠাকুর দেখা, সিঁদুরখেলায় মেতে ওঠেন একাটেরিনা। তবে পরিবারের অনুমতি না থাকায় অংশ নিতে পারেন না বিসর্জনের শোভাযাত্রার নাচে।

Published by:Arpita Roy Chowdhury
First published:

Tags: Facebook, India, Love, Russia