যে দলেই যান, মমতার ছবি আজীবন সঙ্গে রাখবেন 'অনুগত' রাজীব
- Published by:Arka Deb
- news18 bangla
Last Updated:
অনেক কঠিন লড়াই বুক চিতিয়ে লড়া রাজীবের সামনে এই দিনটা যেন এক যুগের চেয়েও বড়, আর সিদ্ধান্তটা যেন পাহাড় ভাঙার মতো কঠিন।
#কলকাতা: শেষ হইয়াও হইল না শেষ। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদায় বৃত্তান্তকে এই ভাবেই ব্যখ্যা করা যায়। মন্ত্রীত্ব ছেড়েছিলেন আগেই, আজ বিধায়ক পদ ছাড়ার দিনেও কাঁদলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এ রাজ্য অসৌজন্য দেখেছে, অসূয়া দেখেছে সাম্প্রতিক অতীতে। রাজীব সব সম্পর্ক ত্যাগ করে যখন ধাপে ধাপে নতুন পথে হাঁটছেন, তখনও একচুলও নষ্ট করলেন না নিজের ইমেজটা, দলনেত্রী সম্পর্কে একটি কু-কথা বেরলো না আজও। শীতের পড়ন্ত বেলায় বরং ধরা গলায় বললেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মাতৃসমা।
এ দিন রাজীব সকালে রাজীব বিধানসভায় পৌঁছে যান অধ্যক্ষর কাছে বিধায়ক পদে ইস্তফাপত্র জমা দিতে। নিজের হাতে লিখে ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি। অধ্যক্ষ নিয়ম মোতাবেক কিছু আনুষঙ্গিক প্রশ্ন করেন রাজীবকে। জমা নেওয়া হয় ইস্তফাপত্র। সেখান থেকে সোজা বিধায়ক হিসেবে তাঁর জন্য বরাদ্দ ঘরটিতে যান রাজীব। ঘরে ঝুলছে প্রিয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিটা। রাজীব নিজেই ছবিটা নামালেন। বিধানসভার বাইরেও এলেন ছবিটা হাতেই।
advertisement
সংবাদমাধ্যম তখন উৎসুক রাজীব কী বিষোদগার করেন তা শুনতে। আগ্রহ তাঁর হাতের ছবিটা নিয়ে। নরম মনের, সংবেদনশীল, মানবিক রাজনীতিবিদ রাজীব অসৌজন্যের ধারপাশ দিয়েও গেলেন না। অধ্যক্ষকে পেশাদার ধন্যবাদ দেওয়ার পাশাপাশি বললেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মাতৃসমা। তাঁর হাত ধরেই আমি রাজনীতিতে এসেছি। তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা থাকবে আজীবন।"
advertisement
কাকতালীয় নাকি পুরোটাই নিখুঁত মাস্টারপ্ল্যান জানা নেই, কিন্তু রাজীব-বিদায়ের দিনেই শহরে পা রাখছেন শাহ। স্বাভাবিক ভাবেই বাইরে বের হতেই সংবাদমাধ্যম রাজীবকে প্রশ্ন করে, তাহলে কি এবার বিজেপিতে?রাজীবের চোখে জল। আকুতিটা যেন, 'কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে, মন সরে না যেতে, ফেলিলে এ কী দায়ে।' রাজীব বলছিলেন, "মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেও অপেক্ষা করেছি দশ দিন।" রাজীবের দীর্ঘশ্বাসের আক্ষরিক অর্থ বোঝা মুশকিল, তবে রাজনৈতিক মহলে ব্যখ্যা রাজীব হয়তো চাইছিলেন সরাসরি দলনেত্রীর সঙ্গে একবার কথা বলা। আবার একাংশ বলছেন, এতদিনের কমফোর্ট জোনটা ছাড়তে হচ্ছে বলেই চোখ ভিজছে রাজীবের।
advertisement
এই উপাখ্যানের অন্তে, ৩১ তারিখ ডুমুরজোলা স্টেডিয়ামে শাহী সভায় শুভেন্দুর মতোই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত আরেক অনুচর রাজীবকে দেখা গেলেও খুব অবাক হওয়া উচিক নয়। কারণ এদিনও রাজীব ইঙ্গিত দিয়েছেন, বলেছেন, নির্দল হয়ে মানুষের জন্য কাজ করা যায় না।
উল্লেখ্য এখনও তৃণমূলের সদস্য পদ ছাড়েননি রাজীব। সেক্ষেত্রে ভালোবাসার পথ থেকে যুদ্ধের পথে যাওয়ার মধ্যে রাজীবের হাতে পড়ে রইল একটা মাত্র দিন। স্মৃতি যখন হাতছানি দেয়, সব মুছে ফেলে নতুন করে শুরু করা সংবেদনশীল মানুষের জন্য খুব সহজ কাজ নয়। অনেক কঠিন লড়াই বুক চিতিয়ে লড়া রাজীবের সামনে এই দিনটা যেন এক যুগের চেয়েও বড়, আর সিদ্ধান্তটা যেন পাহাড় ভাঙার মতো কঠিন।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
January 29, 2021 3:19 PM IST