Duare Cha: নিউটাউনে 'দুয়ারে চা', সাইকেলে রাতপাখিদের তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন জাহাঙ্গির

Last Updated:

জাহাঙ্গিরের সাইকেল দেখে এখন লরিও থেমে যায়। মিনিট খানেকের বিরতি নিয়ে তাঁর কাছ থেকে চা, বিস্কুট, ভাজাভুজি খেয়ে আবার লরিতে ওঠেন চালকেরা।

#কলকাতা: লকডাউনের সময়ে ছেলেকে একটি বিস্কুট কিনে খাওয়াতে গেলেও পয়সা গুনতে হত। বাকি দিনটা চলবে কী করে? সেই ভাবনায় ডুবে যেতেন। আজ হয়তো সেই বিস্কুটটুকু কিনে খেতে পারেন। তার বেশি সম্বল আজও নেই।
কিন্তু হাসি মুখে বলেন, "এখন আমার ভালই চলে। কোনও অভাব নেই।" মধ্যবিত্তের কাছে যে বাক্যের কোনও অস্তিত্বই নেই। লোকটির নাম মহম্মদ জাহাঙ্গির আলি। বয়স ৪০-এর শেষের দিকে হবে। বিকেল ৪টে থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নিউটাউন চত্বরে তাঁর খোঁজ মিলবে। সাইকেলের রিং শোনা যাবে 'দুয়ারে চা'-এর।
লকডাউনের আগে তিনি রং মিস্ত্রীর কাজ করতেন। তার পর কাজ হারিয়ে বাড়িতে বসে যান তিনি। সেই সময়েই হাতে বিন্দুমাত্র টাকা ছিল না। পরিবারে স্ত্রী, এক মেয়ে আর এক ছেলে। তাঁদের পেটে ভাত জোগান দেওয়ার জন্য এক বন্ধু জাহাঙ্গিরকে বুদ্ধি দেন চায়ের দোকান খোলার। কিন্তু দোকান খোলার জন্য তো সম্বল দরকার। সেই সম্বলও ছিল না। ছিল কেবল একটি সাইকেল। জং ধরা পুরনো সাইকেল। মেয়ের কাছে একটি ফ্লাস্ক ছিল। তাতে চা ভরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চা বিক্রি করতে আরম্ভ করেন। সেই তাঁর বাঁচার শুরু। তখন মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর চায়ের কথা। লোকে নাম দেয়, 'লকডাউন চা'।
advertisement
advertisement
তার পর লকডাউন উঠে যাওয়ার পর নিজেই সে নাম বদলে 'দুয়ারে চা' রেখেছেন জাহাঙ্গির। ইকো পার্কে তাঁর ঘর। ইকো পার্ক থেকে ''ভি আই পি রোডের হলদিরামস' পর্যন্ত সাইকেল করে চা বিক্রি করেন তিনি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, "আপনি রাতেই চা বিক্রি করেন কেন?" তাঁর উত্তর, "দিনের বেলা মানুষ যেখানে খুশি চা পেয়ে যাবেন। রাতেও তো কত লোকে কাজ করেন। তাঁদের জন্যই আমি চা বানাই।"
advertisement
জাহাঙ্গিরের সাইকেল দেখে এখন লরিও থেমে যায়। মিনিট খানেকের বিরতি নিয়ে তাঁর কাছ থেকে চা, বিস্কুট, ভাজাভুজি খেয়ে আবার লরিতে ওঠেন চালকেরা। রাতে টহল দেওয়া পুলিশকর্মীরাও তাঁকে ফোন করে ডেকে নেন। চা খেয়ে গোটা রাত জেগে থাকেন। এক রকমের চা নয়, তিন রকমের চা বানান তিনি। দুধ চা, লেবু চা, কালো চা। আবার কফিও পাওয়া যায় তাঁর কাছে। রাস্তা নোংরা না হয়, তার জন্য সাইকেলেই ঝুলিয়ে নিয়েছেন একটি প্লাস্টিক। তাতে চায়ের কাপ, আবর্জনা ফেলার অনুরোধ জানান জাহাঙ্গির।
advertisement
তাঁর কথায়, "নিউটাউন থানার পুলিশের বড়বাবু, মেজবাবু সবাই খুব সাহায্য করেন আমায়। আপাতত দু'বছর ধরে বেরোচ্ছি। কিন্তু কোনও দিন রাতে কোনও সমস্যা হয়নি। হলে, পুলিশ আছে আমার পাশে।" আর রাতবিরেতে চাপ্রেমীদের 'মসিহা' জাহাঙ্গিরও তাঁদের পাশে। দুই বসন্ত গিয়েছে, আরও অনেক শীত বসন্ত শেষে সুমনের গানকে সত্যি করে জাহাঙ্গিরকে কেউ বলতেই পারেন, 'এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই'।
advertisement
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
Duare Cha: নিউটাউনে 'দুয়ারে চা', সাইকেলে রাতপাখিদের তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন জাহাঙ্গির
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement